ইজি ভ্যাট পলিসি: ভিন্ন চিন্তার বই

সাহিত্য ডেস্ক
সাহিত্য ডেস্ক সাহিত্য ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:১৫ পিএম, ০৫ ডিসেম্বর ২০২২

মোহাম্মদ অংকন

একটি পণ্যের মূল্য সংযোজনের ওপর ভিত্তি করে যে কর দেওয়া হয়, তা ভ্যাট হিসেবে পরিগণিত। শিল্প-কারখানা ও ব্যবসা পরিচালনার জন্য ট্যাক্স ও ভ্যাট দুটোই গুরুত্বপূর্ণ। একটি নির্দিষ্ট নিয়মে ট্যাক্স ও ভ্যাট দিতে হয়।

সুশৃঙ্খলভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য, পণ্য আমদানি-রপ্তানি করতে যে জিনিসটি গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স (ভ্যাট)। তবে অনেক সময় নিয়ম-কানুন সম্পর্কে জানা না থাকায় বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। ভ্যাটসংক্রান্ত বিষয়ে অবগত না থাকায়, সচেতন না হওয়ায়, কিংবা নানা কারণে ভ্যাটপ্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে ব্যবসায়ীরা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে থাকেন।

ফলশ্রুতিতে তারা কোনো না কোনো সময় বিপদের মুখোমুখি হন। জরিমানাও গুনতে হয় সরকারের চাক্ষুস রাজস্ব কর্মকর্তাদের কাছে। আইনের গ্যাঁড়াকলে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আটকে গেলে তখন সে ব্যবসায় লাভ তো দূরের কথা, গুনতে হয় লোকসান। অথচ ভ্যাট আইন মেনে সরকারের রাজস্ব আদায় করলে কোনো ধরনের বিপদের মুখোমুখি হতে হয় না। কিন্তু এসব বিষয় নতুন ব্যবসায়ীদের শেখাবে কে? কার এত অভিজ্ঞতা আছে, যা শেয়ারের মাধ্যমে অন্যদের উদ্বুদ্ধ করবে ভ্যাটসংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে?

কেউ তো অবশ্যই আছেন। আর তিনি হচ্ছেন সবার প্রিয় ভ্যাটবন্ধু মো. আলিমুজ্জামান। বইটির ভূমিকায় লেখক বলেছেন, ‘মূসক আইনের প্রয়োগের জটিলতায় হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন সাধারণ ব্যবসায়ীগণ। হয়রানিমুক্ত ব্যবসা পরিচালনা ও মূসক আইনের ব্যবহারভিত্তিক জটিলতা দূর করতে ব্যবসায়ীর ধরন অনুসারে ‘ইজি ভ্যাট পলিসি’ নামে সিরিজ আকারে বই লেখা ও প্রকাশ করা উদ্যোগের অংশ হিসেবে সিরিজ ওয়ান হলো ‘ভ্যাট গাইড ফর এক্সপোর্ট বিজনেস’। এ সেক্টরে প্রচুর বিদেশি বিনিয়োগকারী থাকায় প্রথম অংশ বাংলা ও দ্বিতীয় অংশ ইংরেজিতে প্রকাশ করা হলো।’

আলিমুজ্জামান বর্তমানে একজন লিড কনসালটেন্ট টিআরসি। তিনি বসুন্ধরা গ্রুপের ক্রাউন সিমেন্টের ভ্যাট, ট্যাক্স ও কাস্টমস শাখার মহাব্যবস্থাপক হিসেবে চাকরিজীবন শেষ করেছেন। সেখানে চাকরিকালে এনবিআরে ভ্যাট-ট্যাক্স-কাস্টমস নিয়ে কোনো জরিমানা, মামলা না থাকায় সেরা কমপ্লায়েন্স প্রতিষ্ঠান হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে প্রতিষ্ঠানটি।

২০১৯ সালে তিনি ‘দি রিয়েল কনসালটেশন’ নামের একটি ভ্যাট কনসাল্টিং ফার্ম তৈরি করেন। সেই থেকে তিনি পেশার দায়বদ্ধতা থেকে ভ্যাট-পেশার মানুষদের নিয়ে সেমিনার ও নিয়মিত ট্রেনিং করে যাচ্ছেন। সোশ্যাল মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়াতেও এ বিষয়ে বিস্তর লেখালেখি করছেন তিনি। তবে কেন বই নয়? সাধারণ ব্যবসায়ীরা এবং ভ্যাট-পেশার মানুষজন যাতে উপকৃত হতে পারেন, সেই চিন্তাবোধ থেকে তিনি লিখেছেন ‘ইজি ভ্যাট পলিসিস’ শিরোনামে তথ্যসমৃদ্ধ মূল্যবান একটি বই।

‘ইজি ভ্যাট পলিসিস’ (সিরিজ-ওয়ান)-ভ্যাট গাইড ফর এক্সপোর্ট বিজনেস বইটি বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় লেখা হয়েছে। ১৮০ পৃষ্ঠার বইটিতে সর্বমোট ৬৬টি আর্টিকেল সংযুক্ত করেছেন। যাতে বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে উঠে এসেছে ব্যবসাক্ষেত্রে কোথায় কোন ধরনের ভ্যাট আইনের প্রয়োজন পড়ে, কোন কোন সেক্টরে ভ্যাট দিতে হয়, কীভাবে ভ্যাট দিতে হয়, ভ্যাটের হিসাব প্রক্রিয়া ইত্যাদি।

তিনি বইটিতে রপ্তানিসংক্রান্ত ভ্যাট নিয়ে বেশি আলোচনা করেছেন। যে বিষয়ে ব্যবসায়ীরা বেশি বিপদের মুখোমুখি হয়ে থাকেন। এ ছাড়া তিনি ভ্যাটের বিভিন্ন ফরমও তুলে ধরেছেন। যার মাধ্যমে ভ্যাট-পেশার মানুষ ও সাধারণ ব্যবসায়ীরা সহজেই উপলব্ধি করতে পারবেন, কীভাবে রাজস্ব খাতে ভ্যাট দিতে হয়, কত শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়।

ভ্যাট বিষয়ে নানা জটিলতা ও এ থেকে উত্তরণের বিষয়েও খুব সহজ-সাবলীল ভাষায় লিখেছেন তিনি। বইটি পাঠক অর্ধেক দামে কিনতে পারবেন। প্রকাশনীর নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্রসহ বিভিন্ন অনলাইন বুকশপে বইটি পাওয়া যাচ্ছে।

বইয়ের নাম: ইজি ভ্যাট পলিসিস
লেখক: মো. আলিমুজ্জামান
প্রচ্ছদ: উত্তম ঘোষ
প্রকাশক: বরেন্দ্র পাবলিকেশন্স
মূল্য: ৬০০ টাকা।

এসইউ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।