সপ্তাহের রসালাপ: গোপালের গোয়েন্দাগিরি

গোপাল ভাঁড় ছিলেন মধ্যযুগে নদিয়া অঞ্চলের একজন প্রখ্যাত রম্য গল্পকার, ভাঁড় ও মনোরঞ্জনকারী। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের রাজসভায় একজন ভাঁড় ছিলেন। তার বুদ্ধির জন্য মহারাজ তাকে খুবই পছন্দ করতেন।
মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের রাজসভায় অনেক ধরনের লোকজন আসত। একদিন এক লোক এলেন, যিনি নানা ভাষায় কথা বলতে পারতেন। কি যে তার আসল মাতৃভাষা, কোথায় তার আসল দেশ কেউ জানতো না। সবগুলো ভাষাতেই সে সমান দক্ষ। প্রায় সবগুলো ভাষাতেই সে লিখতে পড়তে পারতো। যেমন-বাংলা বলতো, তেমনি হিন্দী, আবার ফার্সীও বলতো অনর্গল।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র একদিন গোপালকে বললেন, ‘গোপাল, লোকটা কি জাতি এবং ওর মাতৃভাষাই বা কি, তুমি যদি ঠিক ঠিক বলতে পার-আমি তোমাকে পুরস্কার দেব’।
মহারাজের কথা শুনে গোপাল বললো, ‘এ আর তেমন কষ্ট কি? আমি দু’দিনের মধ্যেই ঠিক বলে দিতে পারব’।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
গোপালের কথা শুনে মন্ত্রী মশায় বল্লেন, ‘ওহে গোপাল, কাজটা যত সোজা ভাবছ, ততটা সোজা নয়। লোকটা তোমার থেকেও সেয়ানা। ও সহজে ধরা দেবে না’।
গোপাল বলল, ‘মন্ত্রী মশাই, আমার নামও গোপাল ভাঁড়। দেখবেন, আমি লোকটির আসল পরিচয় বের করে নেব’।
বিজ্ঞাপন
পরদিন গোপাল অনেক আগেই এসে রাজসভার দ্বারে একপাশে লুকিয়ে রইল। কারন, বিশেষ কাজে ঐ দিনই ঐ লোকটার রাজসভায় আসার কথা ছিল।
কিছুক্ষণ পরেই ঐ লোকটা এল। গোপাল বেরোতে যাবার ভান করে-আচমকা লোকটাকে ধাক্কা দিল, লোকটা একেবারে হুমড়ি খেয়ে পড়ে বলল, ‘সঁড়া অন্ধা! দিনের বেলা চোখে দেখতে পাওনা? এই বয়সেই চোখের মাথা খেয়ে বসে আছ’?
গোপাল বলল, ‘গালাগাল দাও, আর যাই বল- তুমি যে উড়ে আমি বুঝতে পেরেছি। হুমড়ি খেয়ে পড়ে গিয়ে তোমার মুখ থেকে সবার আগে যে ভাষা বেরিয়েছিল, ওটা-তোমার মাতৃভাষা-তুমি বাপু উড়ে’।
বিজ্ঞাপন
লোকটা শেষ পর্যন্ত স্বীকার করল যে, সে উড়ে।
মহারাজ সন্তুষ্ট হয়ে গোপালকে একশো টাকা পুরস্কার দিলেন।
লেখা: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত
বিজ্ঞাপন
প্রিয় পাঠক, আপনিও অংশ নিতে পারেন আমাদের এ আয়োজনে। আপনার মজার (রম্য) গল্পটি পাঠিয়ে দিন jagofeature@gmail.com ঠিকানায়। লেখা মনোনীত হলেই যে কোনো শুক্রবার প্রকাশিত হবে।
কেএসকে/জিকেএস
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন