ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
বিষের বোতল হাতে ভাইভা বোর্ডে প্রার্থী, কারণ যা জানা গেলো
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডের সাক্ষাৎকারে হাসমত নামের এক প্রার্থী বিষের বোতল নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন। শনিবার (১২ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনে মালি নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ড চলাকালীন এ ঘটনা ঘটে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে ওই প্রার্থী এ কাণ্ড ঘটিয়েছেন। চাকরি না দিলে তিনি বিষপান করে আত্মহত্যা করবেন বলেও হুমকি দেন বোর্ডের সদস্যদের। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এসময় ওই প্রার্থীর অঙ্গীকারনামা নিয়ে বিষের বোতল প্রক্টরের দপ্তরে জমা রাখা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, হাসমত বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় বসবাস করেন। তিনি দীর্ঘ ২০-২২ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রি শাখায় অস্থায়ীভাবে দৈনিক মজুরিভিত্তিতে কাজ করে আসছেন। সবশেষ মালি নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে স্থায়ী চাকরির আশায় তিনি আবেদন করেন। আর চাকরি হওয়া অনিশ্চিত বুঝতে পেরে আবেগের বশে তিনি এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন।
নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডে উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম, উপ-উপাচার্য ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুহুল কে এম সালেহ এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান বলেন, ‘ওই লোক নিয়োগ পাওয়ার জন্য বিষের বোতল নিয়ে ভাইভা দিতে আসে। পরে ওসিকে খবর দেওয়া হয়। ওসির উপস্থিতিতে তার কাছে অঙ্গীকারনামা লিখে নেওয়া হয়। পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।’
প্রক্টর অধ্যাপক শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘দুপুরের দিকে উপাচার্যের একান্ত সচিব আমাকে বিষয়টি জানালে ঘটনাস্থলে যাই। আমি সেখানে গিয়ে দেখলাম, একটি বিষের বোতল রাখা আছে। এরপর নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের মাধ্যমে জানতে পারি ওই ব্যক্তি নিয়োগ পাওয়ার জন্য বিষের বোতল নিয়ে ভাইভা দিতে আসেন। এমনকি তিনি নিয়োগ না দিলে বিষপান করবেন বলে হুমকি দেন। পরে আমরা বিষের বোতল এবং ওসির উপস্থিতিতে তার অঙ্গীকারনামা লিখে প্রক্টর অফিসে জমা রেখেছি।’
এ বিষয়ে ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আননূর যায়েদ বিপ্লব বলেন, ওই ব্যক্তির অঙ্গীকারনামা এবং বিষের বোতল প্রক্টরের কাছে জমা রয়েছে। আমাদের কাছে তারা হস্তান্তর করেননি। হস্তান্তর করলে আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় এগোতে পারবো।
দীর্ঘদিন ধরে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবি জানিয়ে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ও দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারীরা। অস্থায়ী চাকরিজীবী পরিষদ নামে তারা একটি সংগঠনও খুলেছেন। এ দাবিতে প্রধান ফটক আটকানো, উপাচার্যের কার্যালয়ে হামলা, নিয়োগ বোর্ড আটকানো, উপাচার্যের ফাঁস হওয়া অডিও বাজিয়ে আন্দোলন ও তার পদত্যাগ দাবিসহ বিভিন্নভাবে আন্দোলন করে আসছেন তারা।
রুমি নোমান/এসআর/জিকেএস