ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

আজহারুল ইসলামের খালাসের খবরে বদরগঞ্জে উচ্ছ্বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক | রংপুর | প্রকাশিত: ১১:৫৫ এএম, ২৭ মে ২০২৫

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। রায় ঘোষণার পর আজহারুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি রংপুরের বদরগঞ্জে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন নেতাকর্মীরা।

বদরগঞ্জের শাড়পাড়া গ্রামের জামায়াতকর্মী সাদ্দাম হুসাইন মাসুদ বলেন, একজন নিরপরাধ ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে এতদিন জেলে বন্দি করে রাখা হয়েছে। আমরা আজকের এই রায়ে ভীষণ খুশি।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

কালুপাড়া ইউনিয়নের শিবির কর্মী আকরাম হোসেন বলেন, ‘আজ আপিল বিভাগ তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন যে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচার ভুল ছিল, বিচারের নামে অবিচার হয়েছে। ভবিষ্যতে এমন ভুল যেন আর না হয়। দীর্ঘদিন পর হলেও এটিএম আজহারুল ইসলাম ন্যায়বিচার পেয়েছেন।’

দীন কমিটি ও মানবসেবা সংঘ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এম মতিন সরকার বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার বিনা বিচারে মজলুম জননেতাকে দীর্ঘদিন কারাগারে আটকে রেখেছিল। বিচারের বদলা বিচার এবং যে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে সেটিও পূরণ করে দিতে হবে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

এটিএম আজহারের বড় ভাই এটিএম আব্দুল আউয়াল বলেন, দীর্ঘদিন পর আমার ছোট ভাই ফ্যাসিস্ট সরকারের কারাগার থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছে। আমরা তাকে আমাদের কোলে ফিরে পাবো। এটা আমাদের জন্য আনন্দের খবর।

আজহারুল ইসলামের মুক্তির খবরে বদরগঞ্জে উচ্ছ্বাস

বিজ্ঞাপন

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে গণহত্যা-হত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম এবং বাড়িঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের ৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছিল এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে।

২০১২ সালের ২২ আগস্ট মগবাজার থেকে আজহারুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়। সেসময় তিনি জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ে ২ নম্বর, ৩ নম্বর এবং ৪ নম্বর অভিযোগে ফাঁসির দণ্ডাদেশ পান আজহারুল ইসলাম। এছাড়া ৫ নম্বর অভিযোগে অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অমানবিক অপরাধের দায়ে ২৫ বছর ও ৬ নম্বর অভিযোগে নির্যাতনের দায়ে ৫ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলে শুনানির পর ২০১৯ সালের ৩১ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে রায় ঘোষণা করেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ। আপিল বিভাগের রায়ে ২, ৩, ৪ (সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে) ও ৬ নম্বর অভিযোগের দণ্ড বহাল রাখা হয়। আর ৫ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেওয়া হয়।

২০২০ সালের ১৫ মার্চ আপিল বিভাগের রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়। ওই রায়ের রিভিউ চেয়ে ২০২০ সালের ১৯ জুলাই আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট আবেদন করেছিলেন এটিএম আজহারুল ইসলাম। ২৩ পৃষ্ঠার পুনর্বিবেচনার এ আবেদনে মোট ১৪টি যুক্তি উপস্থাপন করা হয়।

ওই পুনর্বিবেচনার আবেদনের শুনানি শেষে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে এটিএম আজহারুল ইসলামকে আপিলের অনুমতি দেন। এরপর তিনি আপিল করেন।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২৭ মে) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ এটিএম আজহারুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ থেকে খালাস দেন।

এটিএম আজহারুল ইসলাম রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার লোহানীপাড়া ইউনিয়নের বাতাসন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রথম সভাপতি ছিলেন তিনি। গ্রেফতারের পূর্বে তিনি জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ছিলেন। তিনি ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর-২ (তারাগঞ্জ ও বদরগঞ্জ) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

জিতু কবীর/এফএ/জিকেএস

বিজ্ঞাপন