ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

সেতুর ওপর সাঁকো জোড়া দিয়ে চলছে ৭ গ্রামের মানুষ

কাজল কায়েস | প্রকাশিত: ০১:১৭ পিএম, ২০ জুলাই ২০২৫

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জের গনিপুর গ্রামে রহমতখালী খালের ওপর সেতুর মধ্যাংশ ভেঙে মাটিবাহী ট্রাকসহ খালে পড়ে যায়। দুই বছর আগের এ ঘটনার পর চলাচলের জন্য স্থানীয় লোকজন ভাঙা অংশে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে। এরপর থেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর দু’পাড়ের ৭ গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ সাঁকো দিয়ে চলাচল করে আসছে।

ব্যস্ততম এ সড়কে চলাচলকারীরা সেতুটি নির্মাণ করার দাবি জানিয়ে আসলেও কোনো সুফল আসেনি। যদিও লক্ষ্মীপুর এলজিইডি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সড়কের প্রকল্পের সঙ্গে ভেঙে পড়া সেতুটি অন্তর্ভুক্ত করে বরাদ্দের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে জনগণ এর সুফল ভোগ করতে পারবেন।

স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, লক্ষ্মীপুরের গনিপুর গ্রামের সঙ্গে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার মানুষের চলাচলের জন্য কামার বাড়ি সড়কের রহমতখালী খালের ওপর লোহার স্প্যান দিয়ে সেতু নির্মাণ করা হয়। ২০০৮ সালে এলজিইডি এটি নির্মাণ করে। ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে মাটি বহনকারী ট্রাকসহ সেতুটির মধ্যাংশ ভেঙে খালে পড়ে যায়। এতে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে দুই পাড়ের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা। পরে স্থানীয়রা নিজেদের অর্থায়নে ভাঙা স্থানে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে চলাচল শুরু করে।

সেতুর ওপর সাঁকো জোড়া দিয়ে চলছে ৭ গ্রামের মানুষ

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিয়মিত এ রুট ব্যবহার করেন অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। এরমধ্যে লক্ষ্মীপুরের গনিপুর, রাজাপুর, ছোট বল্লভপুর ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার আমানুল্লাহপুর, কামালপুর, দেবীদেবপুর ও বালুচরা গ্রাম রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোটি পারাপার হতে গিয়ে প্রায়ই শিক্ষার্থীরা পা পিছলে খালে পড়ে দুঘর্টনার শিকার হচ্ছে। যানবাহন চলাচল করতে না পারায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে নারী-শিশুসহ হাসপাতালগামী রোগীদের। অনেকে ভয়ে সাঁকোর পরিবর্তে জেলা সদর হয়ে কয়েক কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করছেন।

স্থানীয় আলেয়া বেগম ও ইসমাইল মিয়া জানান, কাছে বিদ্যালয় না থাকায় লক্ষ্মীপুরের গনিপুরের কয়েকশ ছাত্রছাত্রী ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে বেগমগঞ্জের বালুচরা ইব্রাহিম মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, হাসানিয়া আলিম মাদরাসা, বালুচরা সমাজকল্যাণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বালুচরা কিন্টারগার্ডেন ও ইব্রাহিমিয়া হাফেজী মাদরাসায় যায়। ২ বছরে অন্তত ১২ শিক্ষার্থী খালে পড়ে জখম হয়েছে। এতে ভয়ে কিছু অভিভাবক শিশুদের স্কুল পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন।

সেতুর ওপর সাঁকো জোড়া দিয়ে চলছে ৭ গ্রামের মানুষ

স্কুলশিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, বৃষ্টি হলে সাঁকোটি আরও নড়বড়ে হয়ে যায়। কিছুদিন পরপর বাঁশ ভেঙে যাওয়ায় চলাচল করতে আমাদের ভয় হয়। কেউ অসুস্থ হলে অ্যাম্বুলেন্সও আসে না। কয়েক কিলোমিটার ঘুরে হাসপাতালে যেতে হয়।

আলাইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মোফাচ্ছেল হোসেন মশু বলেন, লক্ষ্মীপুর ও নোয়াখালীর বর্ডার এলাকা হওয়ায় বাসিন্দারা সুবিধাবঞ্চিত। দুই বছর আগে সেতুর মাঝের অংশ ভেঙে গলেও এখনো তা সংস্কার করা হয়নি। দু’পাড়ের ৫-৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন যাতায়াতে বেগ পেতে হয়।

লক্ষ্মীপুর স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী (এলজিইডি) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইকরামুল হক বলেন, কয়েকটি সড়কের প্রকল্পের সঙ্গে রহমতখালী খালের ওপর ভাঙা সেতুটি অন্তর্ভুক্ত করে বরাদ্দের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ এলে টেন্ডার হবে, এরপর জনগণ এর সুফল পাবেন।

এফএ/জেআইএম