ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

চলনবিলে অবাধে চলছে শামুক নিধন

জেলা প্রতিনিধি | সিরাজগঞ্জ | প্রকাশিত: ০৩:২৪ পিএম, ৩১ আগস্ট ২০২৫

সিরাজগঞ্জের তাড়াশের বিলাঞ্চলে অবাধে চলছে শামুক ও ঝিনুক নিধন। এতে হুমকির মুখে পড়ছে জীববৈচিত্র্য। এদিকে মৎস্য সংরক্ষণ আইনে শামুক নিধন সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট কোনো কিছু উল্লেখ না থাকায় মৎস্য অধিদপ্তরও এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না।

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতি বছর বর্ষার মৌসুমে বিভিন্ন বিলাঞ্চল থেকে ব্যাপকহারে শামুক ও ঝিনুক সংগ্রহ করা হয়। জুলাই থেকে অক্টোবর মাস চলে শামুক ও ঝিনুক সংগ্রহের কাজ। তবে এবার বর্ষার পানি দেরিতে নামায় আরও একমাস চলবে শামুক ও ঝিনুক সংগ্রহ।

উপজেলার, কামাড়শোন, দিঘী সগুনা, কুন্দইল, মাকড়শোন, বিল-নাদো, মান্নান নগর, ঘরগ্রাম, মাগুরা বিনোদ, হামকুড়িয়াসহ ২০-২৫টি স্থানে প্রায় ৫০০ নৌকাযোগে স্থানীয় লোকজন প্রতিদিন অবৈধভাবে শামুক ও ঝিনুক সংগ্রহ করছেন। প্রতিদিন প্রায় দুই থেকে তিন টন শামুক ও ঝিনুক সংগ্রহ করা হয়। শামুক ও ঝিনুক সংগ্রহের জন্য স্থানীয় দরিদ্র চাষি এবং মৎস্যজীবীদের ছোট ছোট ডিঙি নৌকা দিয়েছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী।

প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত একজন ব্যক্তি তিন থেকে চার বস্তা শামুক সংগ্রহ করে থাকেন। প্রতি বস্তা শামুক বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়।

স্থানীয় ব্যাপারীরা এ শামুক ক্রয় করে খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের মাছের খামারগুলোর খাদ্য হিসেবে বিক্রি করছেন। চলনবিলে প্রতি বছর প্রায় কোটি টাকার শামুক বিক্রি হয় বলে জানান তারা।

শামুক সংগ্রহকারী আব্দুল মোতালেব জানান, বর্ষার সময়ে তাদের কাজ থাকে না, চাষাবাদ বন্ধ থাকে, পেটের দায়ে স্থানীয় শামুক ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা নিয়ে তারা শামুক সংগ্রহ করেন। শামুক সংগ্রহ করে প্রতিদিন জনপ্রতি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় হয়।

চলনবিলে অবাধে চলছে শামুক নিধন

শামুক ও ঝিনুকের ব্যবসায়ী আব্দুল মমিন জানান, ছোট-বড় সব মিলিয়ে ২০ থেকে ২৫ জন ব্যবসায়ী রয়েছে। তারা স্থানীয় সংগ্রহকারীদের কাছ থেকে শামুক কিনে বিভিন্ন জেলার পাইকারি দরে আড়তে বিক্রি করেন। বর্ষার তিন থেকে চার মাস শামুক কেনাবেচা হয়।

তাড়াশ ডিগ্রি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বিদ্যুৎ কুমার জানান, ‘২০১২ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে শামুককে জলজ প্রাণী হিসেবে গণ্য করা হলেও এ আইন অমান্য করে চলছে শামুক নিধন। শামুক সংগ্রহের অপরাধে জেলসহ অর্থ দণ্ডের বিধান থাকলেও আইন প্রয়োগ না হওয়ার কারণে থামছে না শামুক নিধন।

তিনি আরও বলেন, উন্মুক্ত জলাশয়ে, বিশেষ করে খাল-বিল, হাওর-বাঁওড়ে বংশবিস্তার করে থাকে শামুক ও ঝিনুক। অপরদিকে জলাশয়ের নোংরা পানির পোকামাকড় আহার করে পানি বিশুদ্ধকরণের কাজ করে। স্থানীয় মিঠা পানির মাছের খাদ্যের চাহিদা পূরণ করে শামুক।

তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত জাহান জাগো নিউজকে বলেন, ‘শামুক ও ঝিনুক সংগ্রহের বিষয়টি আমার জানা নেই। এমনটা হলে সচেতনা বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এমএ মালেক/আরএইচ/জিকেএস