মেশিনে ঘুনি তৈরি করে সাড়া ফেলেছেন মাগুরার উজ্জ্বল
নিজের তৈরি ঘুনি হাতে উজ্জ্বল লস্কর/ছবি-জাগো নিউজ
প্রাচীনকাল থেকে মাছ ধরা গ্রামীণ জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। এরই ধারাবাহিকতায় যুগ যুগ ধরে মৎস্যজীবীরা ব্যবহার করে আসছেন হাতে বোনা মাছ ধরার ফাঁদ ‘ঘুনি’। তবে সময় বদলাচ্ছে, বদলাচ্ছে মাছ ধরার সেই প্রাচীন উপকরণের কৌশলও। আগে যেখানে মৎস্যজীবীরা হাতে বানাতেন ঘুনি, সেই ঘুনি এখন মেশিনে তৈরি করছেন মাগুরার শালিখা উপজেলার ধনেশ্বরগাতী ইউনিয়নের উজ্জ্বল লস্কর। মেশিনটি উদ্ভাবক করে এরইমধ্যে তিনি এলাকায় সাড়া ফেলেছেন।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) উজ্জ্বল লস্করের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। আলাপচারিতায় উঠে আসে মেশিনে তার ঘুনি তৈরির কৌশলের বিষয়টি।
উজ্জ্বল লস্কর জানান, ছোটবেলা থেকেই মাছ ধরতে পছন্দ করতেন। একপর্যায়ে মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ তৈরির বিষয়টি আয়ত্ত করেন। প্রতিদিন গড়ে এক থেকে দুটি ঘুনি তৈরি করতেন। এগুলো বিক্রি করে কোনোরকম চলতো সংসার। এভাবেই চলে যায় ১২টি বছর। পরে মাথায় আসে মেশিনের সাহায্যে ঘুনি তৈরি করতে পারলে তার কাজ সহজ হবে এবং বেশি ঘুনি তৈরি করতে পারবেন। তারই ধারাবাহিকতায় নিজ হাতে লোহার যন্ত্রপাতি আর দেশীয় উপকরণ জোগাড় করে বানিয়ে ফেলেন মেশিন।

২০১৩ সালে প্রথম চেষ্টা চালিয়ে সফল হতে পারেননি। তবে হাল ছাড়েননি উজ্জ্বল। বারবার পরিবর্তন আর উন্নয়ন পরীক্ষা চালিয়ে শেষ পর্যন্ত সফলতা পেয়েছেন তিনি।
ঘুনি বানাতে প্রথমে বাঁশ কেটে সিক (ক্ষুদ্র শলাকা) বানানো হয়। এরপর মেশিনের সাহায্যে এগুলো সুতা দিয়ে জালের মতো করে বাঁধা হয়। পরে নির্দিষ্ট আকারে তৈরি করা হয় ঘুনি।

এই মেশিন দিয়ে দিনে তৈরি করা যায় ৯-১০টি ঘুনি। যেখানে আগে একজন মৎস্যজীবী হাতে বানাতেন ২-৩টি। প্রত্যেকটি ঘুনি উজ্জ্বল বিক্রি করেন ৫০০-১২০০ টাকা করে। এতে তার পরিবারে ফিরেছে সচ্ছলতা।

বিসিক মাগুরা জেলা কার্যালয়ের উপ-ব্যবস্থাপক অর্জুন কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘এটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। ওই ব্যক্তি যদি প্রয়োজন মনে করেন, তাহলে মাগুরা বিসিকর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। আমরা তাকে সহযোগিতা করবো।’
এসআর/জেআইএম