ঈশ্বরদী
সপ্তাহের ব্যবধানে ৭০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে শিমের দাম
পাবনার ঈশ্বরদীতে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি শিমের দাম বেড়েছে ৭০ টাকা। ৩০ টাকা কেজি দরের শিম এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে ঈশ্বরদীর মুলাডুলি আমবাগান কাঁচামালের আড়তে দেখা যায়, আড়তদাররা শিম বেচাকেনা, প্যাকেজিং ও ট্রাকে লোডের কাজে ব্যস্ত।
আড়ৎদাররা জানান, এক সপ্তাহে আগে শিমের ব্যাপক সরবরাহ ছিল। তখন প্রতি কেজি শিম বেচাকেনা হয়েছে ৩০-৩৫ টাকায়। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি শিম এখন ১০০ টাকা কেজি দরে বেচাকেনা হচ্ছে। অন্যান্য বছর শীত মওসুমের শুরুতে মুলাডুলি আড়তে ৪৮০-৫০০ টন পর্যন্ত শিম আসে। এসব শিম প্রতিদিন ৩৮-৪০টি ট্রাকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যেত। এক সপ্তাহে আগেও এ আড়তে প্রায় ৪০ ট্রাক শিম আমদানি হয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে শিমের আমদানি তিনভাগের দুই ভাগ কমে গেছে।

মুলাডুলি রামনাথপুর গ্রামের শিম চাষি রায়হান হোসেন বলেন, ‘হঠাৎ শিমের উৎপাদন অর্ধেকের বেশি কমে গেছে। প্রতিবিঘা জমিতে যেখানে প্রতিদিন ৩ মণ শিম পাওয়া যেত। এখন এক মণ পাওয়া যাচ্ছে না। এ জন্য তিনি আবহাওয়াকে দায়ী করেন।
তিনি বলেন, ‘নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে হঠাৎ বৃষ্টিতে শিম গাছের অধিকাংশ ফুল পচে গেছে। ফলে শিম উৎপাদন কমে গেছে। এতে কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বাজারে প্রতিকেজি শিম আড়তে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহ খানেক আগে শিমের দাম কমে প্রতি কেজি ৩০-৩৫ টাকা হয়েছিল। এখন ক্ষেতে শিম নেই, দাম বেশি হয়ে লাভ কি?
সরাইকান্দি গ্রামের শিম চাষি আব্দুস সবুর বলেন, শিম চাষিদের মাথায় হাত। হঠাৎ বৃষ্টিতে শিমের ফলনে এমন বিপর্যয় হবে তা বুঝতে পারিনি। শিম গাছে সব ফুল ঝরে গেছে অনেক গাছে অসময়ের বৃষ্টির কারণে ভাইরাস আক্রমণ করেছে। শিম ক্ষেতে আবার নতুন ফল আসতে শুরু করেছে। আশাকরি দুই এক সপ্তাহের মধ্য শিমের উৎপাদন আবার বেড়ে যাবে।

মুলাডুলি আমবাগান কাঁচামাল আড়তে সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান বাবু দেওয়ান নিউজকে জানান, এক সপ্তাহ আগে এ আড়ত থেকে ৩৮-৪০ ট্রাক শিম রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন কাঁচামালের আড়তে নিয়ে যেত ব্যবসায়ীরা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এখন ১৫-১৬ ট্রাক শিমের সরবরাহ হয় আড়তে। হঠাৎ শিমের সরবরাহ কমে যাওয়ায় ব্যবসায়ী ও আড়তদাররা হতাশ হয়ে পড়েছে। এবার নভেম্বরের শুরুতে টানা দুই দিন বৃষ্টি হয় এ বৃষ্টিতে শিমের ফুল সব ঝরে গেছে।
ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মমিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘উপজেলায় ১৩১০ হেক্টর জমিতে এবার শিমের আবাদ হয়েছে। ইতিমধ্যে চাষিরা শিমের ভালো ফলন পেতে শুরু করেছে। নভেম্বর মাসের শুরুতে বৃষ্টিপাতে শিমের ফুল ঝরে যায় ও পচন ধরে। ফলে এক সপ্তাহ হলো ফলন কিছুটা কম হচ্ছে। শিম ক্ষেতে আবার নতুন ফুল এসেছে। আশাকরি এক সপ্তাহের মধ্যে ফলন আবার বেড়ে যাবে।
শেখ মহসীন/আরএইচ/এমএস