ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

সেই আশরাফুলের দাফন সম্পন্ন

নিজস্ব প্রতিবেদক | রংপুর | প্রকাশিত: ০৪:২৩ পিএম, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

ঢাকায় নৃশংসভাবে খুন হওয়া রংপুরের বদরগঞ্জের আশরাফুল হকের (৪৪) দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া আল মাহফুজ মাদরাসা মাঠে নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

এর আগে শুক্রবার গভীর রাতে তার মরদেহ ঢাকা থেকে বদরগঞ্জে নিয়ে আসা হয়। এসময় তার খণ্ডিত মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। জানাজা ও দাফন কাজে অংশ নেন আশপাশের বিভিন্ন স্তরের মানুষ।

গত মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) প্রবাসী বন্ধু জরেজকে সঙ্গে নিয়ে বদরগঞ্জ থেকে ঢাকা যান আশরাফুল। এরপর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকার হাইকোর্ট মাজারের পাশে দুটি নীল ড্রামের ভেতর থেকে তার ২৬ টুকরা মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

আরও পড়ুন
প্লাস্টিকের ড্রামের লাশের রহস্য উন্মোচন, বন্ধুর হাতে খুনে হন আশরাফুল
পরকীয়ার জেরে লাশ কেটে ২৬ খণ্ড: নিহতের বন্ধু গ্রেফতার
আশরাফুলকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ১০ লাখ টাকা আদায়ের চেষ্টা

এ ঘটনায় আশরাফুলের ছোট বোন আনজিরা বেগম বাদী হয়ে বন্ধু জরেজসহ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের নামে শুক্রবার শাহবাগ থানায় মামলা করেন। ওইদিন বিকেলে কুমিল্লার দাউদকান্দি এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় প্রধান আসামি জরেজ (৪৩) ও তার প্রেমিকা শামীমাকে (৩৩)। এ সময় গুরুত্বপূর্ণ আলামত জব্দ করা হয়।

শনিবার সকালে র‍্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফায়েজুল আরেফিন সংবাদ সম্মেলনে জানান, আশরাফুল হক ও ফরেজুল ইসলাম জরেজ বন্ধু ছিলেন। আশরাফুলের কাছে অনেক টাকা-পয়সা আছে এটা জরেজ জানতেন। তাই তাকে অপহরণ করার পরিকল্পনা করেন জরেজ।‌ এজন্য নিজের প্রেমিকা শামীমাকে কাজে লাগান তিনি। তারা ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা করেছিলেন।

এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে একমাস ধরে শামীমা মোবাইল ফোনে আশরাফুলের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করে তাকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন।

জরেজের নির্দেশনা অনুযায়ী শামীমা প্রেমের অভিনয় করে আশরাফুলকে মালটার শরবতের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ান। জরেজ বাইরে থেকে তাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করেন।

শামীমার জবানবন্দির বরাত দিয়ে র‍্যাব জানায়, ১২ নভেম্বর দুপুরে আশরাফুল পুরোপুরি অচেতন হয়ে গেলে জরেজ তার হাত দড়ি দিয়ে বেঁধে মুখে স্কচটেপ লাগিয়ে দেন। এরপর ইয়াবা সেবন করে জরেজ হাতুড়ি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন। এতে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে আশরাফুলের মৃত্যু হয়।

১৩ নভেম্বর সকালে জরেজ চাপাতি ও দুটি নীল ড্রাম কিনে এনে আশরাফুলের লাশ ২৬ টুকরা করে ড্রামে ভরেন। দুপুরে একটি সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করে ড্রামগুলো বাসা থেকে বের করেন। ধরা পড়ার আশঙ্কায় অটোরিকশা পরিবর্তন করে হাইকোর্ট এলাকায় পৌঁছান। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা দেখে তারা দ্রুত পানির পাম্প সংলগ্ন বড় গাছের নিচে ড্রাম দুটি ফেলে পালিয়ে যান।

ঘটনার পর শামীমাকে কুমিল্লায় নিজ বাড়িতে ফিরে যেতে বলেন জরেজ। জরেজ নিজে রংপুরে ফেরার কথা বললেও এরপর থেকে গা-ঢাকা দেন।

১১ নভেম্বর থেকে আশরাফুলের ফোন বন্ধ পাওয়ায় পরিবার উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। ১৩ নভেম্বর হাইকোর্ট এলাকার পানির পাম্পের পাশে পড়ে থাকা দুটি ড্রাম থেকে এক পুরুষের ২৬ খণ্ড মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আঙুলের ছাপ বিশ্লেষণ করে তা আশরাফুল হকের বলে নিশ্চিত হওয়া যায়।

জিতু কবীর/আরএইচ/জেআইএম