তদন্ত কমিটি গঠন
বারবার ডেকেও কেবিনে গেলেন না চিকিৎসক, বীর প্রতীকের মৃত্যুর অভিযোগ
বরিশাল শের ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে চিকিৎসার অবহেলায় মুক্তিযুদ্ধের বীর প্রতীক অবসরপ্রাপ্ত ফ্লাইট সার্জেন্ট রত্তন আলী শরিফের (৮২) মৃত্যুর অভিযোগ তুলেছেন তার সন্তানরা।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে হাসপাতালের পঞ্চম তলার ৫০০৩ নম্বর রুমে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে কয়েকবার কর্তব্যরত চিকিৎসককে ডাকতে গেলেও কেবিনে গিয়ে চিকিৎসা দিতে রাজি হননি বলে অভিযোগ সন্তানদের। এর আগে শনিবার বিকেলে ওই হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়।

বীর প্রতীক অবসরপ্রাপ্ত ফ্লাইট সার্জেন্ট রত্তন আলী শরিফ (৮২) বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার রাকুদিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা।
মৃতের সন্তান তানজিলা আক্তার ইমু বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে আমার বাবার ডায়াবেটিক ও প্রেসার নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে যায়। শনিবার বিকেলে বাবাকে শেবাচিম হাসপাতালের ভর্তি করি। ভর্তির পর কেবিনে এসে একজন শিক্ষানবিশ চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে যান। পরের দিন রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একজন চিকিৎসক সেবা দিয়ে যান। দুপুরে আমার বাবার অক্সিজেন লেভেল কমে যায়, ডায়াবেটিক বৃদ্ধি পাওয়ায় অচেতন হয়ে যান। এরপর কর্তব্যরত চিকিৎসকদের ডাকতে রুমে যাই, তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক কেবিনে আসতে অনিহা প্রকাশ করে বলেন- ‘রোগীকে ওয়ার্ডে নিয়ে আসতে বলেন; নয়তো প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে যেতে বলেন।’ এরপর রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন আবার কর্তব্যরত চিকিৎসককে ডাকতে গেলে আবারো দায়িত্বরত চিকিৎসক আসতে অনিহা প্রকাশ করেন। তখন আমার এক বোন সিনিয়র সচিবকে ফোনে ধরিয়ে দিলে কেবিনে যান চিকিৎসক। তারপর কেবিনে গিয়ে দেখতে পাই আমার বাবা মারা গেছেন।’

মৃতের ছেলে শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বাবা দেশের জন্য যুদ্ধ করেও বিনা চিকিৎসায় মারা গেলেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার আমি সরকারের কাছে চাই।’
ঘটনার পরপরই শেবাচিম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. মাহাবুবুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষে হাসপাতালের পরিচালক বরাবর প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. একেএম মশিউল মুনীর বলেন, ওই রোগীকে আমার তত্ত্বাবধানে কেবিনে ভর্তি করা হয়েছিল। চিকিৎসা অবহেলার বিষয়টি আমি শিওর না। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে নিশ্চিতভাবে সঠিক কারণ বলা যাবে।
শাওন খান/এফএ/জেআইএম