বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ফাটল, আতঙ্কে সিরাজগঞ্জবাসী
সিরাজগঞ্জ শহরের রানীগ্রাম শিমুলতলায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে হঠাৎ করে ফাটল দেখা দেয়ায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে শহরবাসীর মাঝে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ওই ফাটল মেরামতে তাৎক্ষণিক কাজ শুরু করলেও সংশয় কাটছে না মানুষের। এ ঘটনার পর থেকেই পুরো এলাকায় তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ব্রহ্মপূত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের রানীগ্রাম শিমুলতলা অংশে এ ফাটল দেখা দেয়।
ফাটলে বালির বস্তা দিতে শুরু করেছে পাউবো। এ খবর শুনে শহরের বিভিন্ন মহল্লার শত শত আতঙ্কিত মানুষ ঘটনাস্থলে এসে ভিড় জমাচ্ছে। তারা দ্রুত বাঁধটি মেরামত করে সিরাজগঞ্জ শহরকে বন্যার হাত থেকে রক্ষার দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে একই স্থানে বুধবার বিকেলেও বাঁধ ফুটো হয়ে দক্ষিণ সাইডে পানি চুয়ে প্রবেশ করতে শুরু করে। দিনভর কাজ করে সন্ধ্যার আগে ওই ফুটো বন্ধ করে পাউবো। বাঁধটির নিরাপত্তায় এর দুই প্রান্তে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে একটি ট্রাক ওই বাঁধের উপর দিয়ে পার হওয়ার পর রানীগ্রামের শিমুলতলা এলাকায় দেবে যায় এবং ফাটল দেখা দেয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাৎক্ষণিক ফাটল সংস্কারে কাজ শুরু করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ইঁদুরের গর্তের কারণে বাঁধের ওই অংশে লিকেজ হয়েছে। তবে এ নিয়ে শহরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

রানীগ্রাম মহল্লার হায়দার আলী সেখ, মনিরুজ্জামান, ফটিক আলী শেখ, আব্দুল মজিদ, ইয়াছিন আলী জানান, রানীগ্রামের বাঁধটির পশ্চিমাংশে পানিতে টইটুম্বর। মাত্র একফুট নিচে আছে বানের পানি। ওই বাঁধটি সামান্য ধসে গেলেই বন্যার পানি রানীগ্রাম, নতুন ভাঙাবাড়ী, জানপুর, পুরাতন ভাঙাবাড়ী, বাহিরগোলা হয়ে সিরাজগঞ্জ শহরের এসএস রোড, মুজিব সড়ক ও ইবি রোড তলিয়ে যাবে। পুরো শহর বন্যা কবলিত হয়ে পড়বে। এসব কারণে তারা আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
স্থানীয় ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফা বলেন, হঠাৎ করেই শিমুলতলা স্থান দিয়ে একটি ট্রাক চলে যাওয়ায় ফাটল দেখা দিয়েছে বলে শুনেছি। এ বিষয়ে আমরা এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সার্বক্ষণিক বাঁধটির উপর কড়া নজর রাখছি। এ খবরে এলাকাবাসীর মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ হাসান ইমাম জানান, গত ১২ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ৪ সেন্টিমিটার কমে এখন বিপদসীমার ১৪৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নদীর পানি কমছে। এজন্য রানীগ্রাম বাঁধ নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই।
ইউসুফ দেওয়ান রাজু/এফএ/আইআই