ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ঈদে নিরাপত্তার চাদরে ছেঁয়ে থাকবে চাঁদপুর

জেলা প্রতিনিধি | চাঁদপুর | প্রকাশিত: ০৫:৪৯ এএম, ১২ জুলাই ২০১৫

ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে চাঁদপুর জেলার ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের শতাধিক স্পট চিহ্নিত করে পুলিশের ব্যাপক নজরদারি ও টহল জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ সড়কগুলোতেও বিশেষ পুলিশি টহলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার ঈদকে সামনে রেখে জেলায় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য সার্বক্ষণিক তদারকিতে আছেন বলে চাঁদপুরের বিভিন্ন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা (ওসি) জাগো নিউজকে জানিয়েছেন।

ঈদকে সামনে রেখে কচুয়া উপজেলায় বিভিন্ন সড়কের ৭টি স্থানকে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা হতে পারে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব স্থানে পুলিশি টহল জোরদারসহ নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কচুয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইব্রাহিম খলিল জাগো নিউজকে জানান, কচুয়া-সাচার-গৌরিপুর সড়কের চেলাকান্দা, বারৈয়ারা, আটমোড় ও শিমুলতলি এবং চাঁদপুর-কুমিল্লা সড়কের কচুয়া বিশ্বরোড ও জগৎপুর এলাকায় ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের আশংকায় ব্যাপক পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া রহিমানগর বাজারেও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।

মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ঈদকে সামনে রেখে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনার আশঙ্কায় ১৬টি স্থানকে চিহ্নিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে পুলিশি অভিযান জোরদার ও টহল ব্যবস্থা বাড়ানো হয়েছে। মতলব দক্ষিণ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কবির হোসেন জাগো নিউজকে জানান, বাবুরহাট-মতলব-পেন্নাই সড়কের নায়েরগাঁও, নারায়নপুর, চারটভাঙ্গা, মুন্সিরহাট, বটদিয়া, নাগদা বিদ্যুত সাবস্টেশন এলাকা, মতলব ফেরীঘাটের দু’পাড় এবং হাজীগঞ্জ-কচুয়া বর্ডার এলাকার লাকসীমপুর, ডিঙ্গাভাঙ্গা ও দাউদকান্দি বর্ডারের নায়েরগাঁও বাজারের ব্রিজ এলাকায় ডাকাতির আশঙ্কায় ব্যাপক পুলিশি নজরদারী ও টহল ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব এলাকায় ইতিমধ্যে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে পর্যায়ক্রমে পুলিশ টহল দিয়ে যাচ্ছে।

এছাড়া মতলব বাজারের সিঙ্গাপুর প্লাজার মোড় ও মেক্সি স্ট্যান্ড এলাকায় যাতে ছিনতাইয়ের ঘটনা না ঘটে সেজন্য পুলিশি নজরদারিতে আনা হয়েছে। ফরিদগঞ্জ উপজেলায় তিনটি বিশেষ স্পট ডাকাতির আশঙ্কা থাকায় তা চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো হলো, ফরিদগঞ্জ-রায়পুর সড়কের নারিকেলতলা, খেজুরতলা ও কুড়ালীয়ার মসজিদ এলাকা বলে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক জাগো নিউজকে জানিয়েছেন।

এছাড়া তিনি আরো জানান, ফরিদগঞ্জের চান্দ্রা ১নং ইউনিয়ন থেকে বেড়ি বাঁধের রাস্তা দিয়ে রামগঞ্জ সীমানা পর্যন্ত, ফরিদগঞ্জ-রূপসা-খাজুরিয়া হয়ে গুপ্টি পর্যন্ত সড়কে, ভাটিয়ালপুর-নয়ারহাট-আইলের রাস্তা-গোবিন্দপুর বাজার-ফিরোজপুর বাজার হয়ে চৌমুহনি-বিরামপুর পর্যন্ত, গৃদকালিন্দিয়া থেকে সাহেবগঞ্জ-কুড়াতলি-আলুনিয়াগুদারাঘাট-চৌমুহনি বাজার (রায়েরপুর উপজেলা সীমানা) পর্যন্ত এলাকা ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ঈদকে সামনে রেখে এসব এলাকায় আটটি টহল পুলিশ ২৪ ঘণ্টা পর্যায়ক্রমে টহলে থাকবে।

এর বাইরেও চাঁদপুর-রায়পুর সড়কে, ফরিদগঞ্জ-রূপসা-খাজুরিয়া সড়কে ইমার্জেন্সি টহল থাকবে। ইতিমধ্যে বুধবার থেকে এ টহল ব্যবস্থা চালু করে জোরদার করা হয়েছে। ঈদের এক সপ্তাহ পর পর্যন্ত এ টহল অব্যাহত থাকবে। ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে এসব কার্যক্রম সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের দায়িত্বে আছেন থানার সেকেন্ড অফিসার এস আই শফিউল আজম।

মতলব উত্তরে ইতিমধ্যে ৬টি স্পটে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের আশঙ্কা হতে পারে বলে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। মতলব উত্তর থানা পুলিশের অফিস ইনচার্জ সৈয়দ মাহবুবুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, ঈদকে সামনে রেখে মতলব উত্তর হয়ে দাউদকান্দি সড়কের চিয়ারচর ব্রিজ, সুজাতপুর বাজার, হাইওয়ে রাস্তা, কালিপুর ফেরিঘাট এলাকা ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের আশঙ্কায় দিবা-রাত্রি পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। হাজীগঞ্জ উপজেলায় ঈদকে সামনে রেখে ১১টি স্পটে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনার আশঙ্কায় পুলিশ ব্যাপক নজরদারি ও টহল জোরদার করেছে।

হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহআলম এলএলবি জাগো নিউজকে জানান, হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ সড়কের ডাকাতিয়া তীরে ব্রিজের উপর, জিয়া নগর, বেলচোঁ, সেন্দ্রা দক্ষিণ বাজার, জয়শরা ব্রিজের গোড়ায় এবং চাঁদপুর-কুমল্লিা সড়কের কৈয়ারপোল, বলাখালসুবিদপুর, সুহিলপুর, এনায়েতপুর, হাজীগঞ্জ বিশ্বরোড এলাকায় ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের আশঙ্কায় তিন স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এর মধ্যে সাদা পোশাকে, সম্পূর্ণ সিভিলে ও পুলিশি পোশাকে টহল থাকবে।

এছাড়া অতিরিক্ত পেট্রল উিউটি থাকবে। ইতিমধ্যে টহল বাহিনী একজন নারী ছিনতাইকারীকে আটক করেছে। চাঁদপুর মডেল থানার অফিস ইনচার্জ এনায়েত উদ্দিন পিপিএম জাগো নিউজকে জানান, চাঁদপুর সদরে ব্যাপক পুলিশি অভিযান জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ করে শহরের মার্কেটগুলো বিশেষ নজরদারিতে আনা হয়েছে। এছাড়া কয়েকটি পাড়া মহল্লা ও লঞ্চঘাটে সার্বক্ষণিক পুলিশ টহলে রয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশ তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে তৎপর রয়েছে।

শাহরাস্তি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, এ উপজেলায় ঈদ উপলক্ষ্যে ডাকাতি বা ছিনতাইয়ের আশঙ্কা তেমন নেই। তারপরও ১০/১২টি পুলিশের টিম টহলে থাকবে।

হাইমচর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়ালি উল্লাহ জাগো নিউজকে জানান, হাইামচরে সড়ক পথে তেমন ডাকাতির আশঙ্কা নেই। তবে নদী পথে আশঙ্কা থাকলেও নৌ পুলিশের সঙ্গে তাদের সহযোগিতা থাকবে সার্বক্ষণিক।

ইকরাম চৌধুরী/এমজেড/পিআর