ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

কৃষক পঙ্কজের সংগ্রামী জীবন

জেলা প্রতিনিধি | ঝালকাঠি | প্রকাশিত: ১০:০৪ পিএম, ০৫ মে ২০২০

অভাবি পরিবারে জন্ম। তাই পড়ালেখা ভাগ্যে জোটেনি ডুমুরিয়া গ্রামের পঙ্কজ বড়ালের। বর্তমানে তার বয়স ৫৫ বছর। ১৫ বছর বয়স থেকেই কৃষি কাজের মাধ্যমে জীবন শুরু তার। একটু প্রতিষ্ঠিত হবার আশায় অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করে উপার্জন করতে শুরু করেন তিনি।

৪৫ বছর বয়সে বিয়ে করলে দেড় বছরের মাথায় ১ মাস ১২ দিনের একটি পুত্র সন্তান রেখে মারা যান তার স্ত্রী। আরেকটি বিয়ে না কলেই সেই শিশু সন্তানকে নিয়ে জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন পঙ্কজ বড়াল।

তিনি জানান, অন্যের জমিতে কাজ করে কিছু টাকা হলে সামান্য কিছু জমি লিজ নিয়ে নিজেই চাষাবাদ শুরু করেন। সেখান থেকে তিনি ক্রমান্বয়ে জমির পরিমাণ বাড়িয়ে লিজ নিতে থাকেন। বর্তমানে ডুমুরিয়া গ্রামে ৩ বিঘা জমি লিজ নিয়ে সেখানে কাঁদি কেটে বিভিন্ন ধরনের ফসল আবাদ করেন তিনি।

সেখানে পেয়ারা, আমড়া, লেবু, কলা, কচু, ঝিঙা, চিচিঙা, পাটশাক, পুঁইশাক, কুমড়াসহ বিভিন্ন ধরনের কৃষিকাজ করেন তিনি। রাসায়নিক ও জৈবসার দিয়ে আবাদি কৃষিতেও বেশ ভালো ফলন পেয়েছেন তিনি। হতাশা প্রকাশ করে তিনি জানান, করুনা ভেনস (করোনাভাইরাস) এর কারণে উৎপাদিত শাক-সবজি বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে না পারায় ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। স্থানীয়ভাবে রাস্তার পাশে বসে শাক-সবজি আদামে (কমদামে) বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে তার শ্রমের মূল্য পাওয়া যাচ্ছে না।

পঙ্কজ বড়াল আরও জানান, ১ মাস ১২ দিনের শিশু সন্তান পলাশ বড়ালকে রেখে স্ত্রী মারা যাবার পরে চরম দুশ্চিন্তায় পড়তে হয় তাকে। নবজাতকের খাদ্য না পাওয়ায় কান্না করলে প্রথমে কৌটার দুধ ফিডারে করে পরে গরুর দুধ খাওয়ানো হতো। এরপর যখন হাঁটতে শুরু করে তখন বাসা বাড়িতে রাখলে পানিতে পড়তে পারে এমন চিন্তা শুরু হয়। বিকল্প হিসেবে একটি নৌকায় ভালোকরে বেড়া দিয়ে তারমধ্যে তাকে রেখে লালন-পালন শুরু করি। পানি শিশুদের প্রধান শত্রু আর সেই শত্রুর সাথে মিতালি করেই পলাশের জীবনে বেড়ে ওঠা।
ভীমরুলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়াশুনা করছে পলাশ। ডুমুরিয়া গ্রামে ৩ বিঘা জমি লিজ নিয়ে কৃষি আবাদ করায় সেখানেই একটি খুঁপরি ঘরে থাকা-খাওয়াসহ শিশু পুত্র পলাশ বড়ালকে নিয়ে সংগ্রামী জীবন অতিবাহিত করছেন পঙ্কজ বড়াল।

আতিকুর রহমান/এমএএস/এমএস