ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

কাজ না করে অর্থ হাতিয়ে নিলেন আ.লীগের নেতা!

জেলা প্রতিনিধি | ঝালকাঠি | প্রকাশিত: ০৯:৫৩ পিএম, ১৭ জুন ২০২০

ঝালকাঠি সদর উপজেলার কীর্ত্তিপাশা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে কাজ না করে কাবিখা প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা গেছে, কীর্ত্তিপাশা ইউনিয়নের পাজিপুথিপাড়া গ্রামের ‘পাজিপুথিপাড়া এলজিইডি কার্পেটিং সড়ক থেকে মীরাবাড়ি সড়কের মাটি ভরাট উন্নয়ন ও ইট সলিং’ প্রকল্পের জন্য ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আট টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। যার সরকারি মূল্য তিন লাখ ৪৬ হাজার টাকা। প্রকল্পের সভাপতি করা হয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মিজানুর রহমানকে।

তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই সড়কে কোনো ধরনের কাজ না করে আট টন চাল তুলে বিক্রি করে পুরো অর্থ একাই আত্মসাৎ করেছেন প্রকল্পের সভাপতি মো. মিজানুর রহমান। স্থানীয়রা বিষয়টি জানতে পেরে প্রতিবাদ করেন। তারা বলছেন, সড়কে মাটি ভরাট ও ইট সলিংয়ের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেয়া হলেও কোনো কাজই হয়নি। এখনও কাদা পেরিয়ে কষ্ট করে পথ চলতে হচ্ছে। সরকারি বরাদ্দের অর্থ কেন সভাপতির পকেটে যাবে?

তবে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমানের দাবি, মাটি ভরাট ও ইট সলিংয়ের জন্য কাবিখা প্রকল্প থেকে পাওয়া আট টন চাল ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। অফিস খরচ ও দলীয় নেতাকর্মীদের দিয়ে ৬০ হাজার টাকা হাতে আসে। এই টাকার সাথে আরও অর্থ যোগ করে সড়কে ইট সলিং করানো হয়েছে। তবে স্থানীয় একটি পক্ষের সাথে বিরোধ থাকায় প্রকল্পে যে সড়কের নাম উল্লেখ করা হয়েছে সেই সড়কে কাজ করানো হয়নি। ওই অর্থ দিয়ে এর পাসের সড়কে ইট সলিং করানো হয়েছে। যেটা দিয়ে বেশি লোকজন চলাচল করে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাবিখা প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ ওই অর্থ দিয়ে মিজানুর রহমান যে সড়ক সংস্কারের দাবি করছেন ওই সড়কে ইট সলিং করানোর জন্য এর আগে অর্থাৎ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে জেলা পরিষদ থেকে এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। একই সড়কে একই ধরনের উন্নয়নের জন্য সরকারি দুটি প্রকল্পের অর্থব্যয়ের কোনো বিধান নেই। স্থানীয়রা দ্রুত কাবিখা প্রকল্প থেকে বরাদ্দ হওয়া সড়কে ইট সলিং করানো অথবা বরাদ্দ দেয়া অর্থ দ্রুত ফেরত দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় মো. হেমায়েত হোসেন বলেন, ‘আমরা কষ্ট করে কাদা পেরিয়ে এখনও চলাচল করছি। অথচ এক বছর আগে আমাদের এই সড়কে মাটি ভরাট ও ইট সলিংয়ের জন্য আট টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু সেই চাল বিক্রি করে পুরো অর্থ আত্মসাৎ করেছেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজানুর রহমান। আমরা চাই আমাদের সড়কে দ্রুত মাটি ভরাট ও ইট সলিং হোক।

প্রকল্পের সভাপতি মিজানুর রহমানের দাবি, ‘বিরোধ থাকায় কাবিখা প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ আট টন চাল উল্লেখিত সড়কে ইট সলিংয়ের কাজে ব্যবহার হয়নি। এর পাসের একটি সড়কে ওই টাকা দিয়ে ইট সলিং করানো হয়েছে।’

একই সড়কে একই ধরনের উন্নয়নের জন্য সরকারি দুই প্রকল্পের অর্থ বরাদ্দের বিধান আছে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে মিজানুর রহমান বলেন, ‘জেলা পরিষদ থেকে এক লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও ঠিকাদারের কাছ থেকে আমরা হাতে পেয়েছি ৫০ হাজার টাকা। ওই টাকা পেতেও আমাদের বিভিন্ন স্থানে খচর করতে হয়েছে। তাই আইনি বিধান না থাকলেও সরকারি দুই প্রকল্পের অর্থ দিয়েই সড়কটি ভালোভাবে ১০ ফুট চওড়া করে ইট সলিং করানো হয়েছে। যাতে স্থানীয়রা ভালোভাবে চলাচল করতে পারেন।

ঝালকাঠি সদর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক এ প্রসঙ্গে বলেন, যদি কাজ না করে অর্থ ভোগ করেন তাহলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করে তার বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মো. আতিকুর রহমান/এমএআর/এমএস