ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

‘ম্যাডাম’ আসেন মনমতো, চেম্বার খুলেছেন আরেক ইউনিয়নে

জেলা প্রতিনিধি | নীলফামারী | প্রকাশিত: ০৭:০১ পিএম, ৩১ মার্চ ২০২১

কাগজে-কলমে সপ্তাহের সাতদিন খোলা দেখানো হয়। কিন্তু বাস্তবে সপ্তাহের দু-একদিন খোলা পাওয়া যায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার নাউতরা ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি। তা-ও আবার দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত খোলা থাকে। বাকিটা সময় তালা ঝুলতে দেখা যায়।

বুধবার (৩১ মার্চ) দুপুরে সরেজমিন নাউতরা ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে তালা ঝুলছে। সেখানে চিকিৎসা নিতে আসা রুবি বেগম বললেন, ‘ম্যাডাম (পরিদর্শিকা রিনা বেগম) তো ১২টার পরে আসেন। আজকে সাড়ে ১২টা বেজে গেলেও এখনও আসেননি।’

সেবা নিতে আসা সালমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, দুপুর গড়িয়ে গেল। ম্যাডাম যে কখন আসবে জানি না। পার্শ্ববর্তী আমিনার রহমান বলেন, সপ্তাহে দু-একদিন ইউনিয়ন কল্যাণ কেন্দ্রটি খোলা হলেও দুপুরের আগে রিনা ম্যাডাম আসেন না। আসার এক ঘণ্টা পর আবার চলে যান। ম্যাডাম না আসার কারণে পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের অন্য কেউ থাকে না।

নাউতরা পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শিকা রিনা বেগম সরকারি সব সুযোগ-সুবিধা নিলেও নিয়মিত না আসার কথা জানান নাউতরা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম লেলিন।

তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘সরকারিভাবে প্রচুর ওষুধ সরবরাহ থাকলেও তিনি কখন কী পরিমাণ ওষুধ আসে বলতে পারেন না।’

নাউতরা আবেউননেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসিরা বেগমের বলেন, ‘বিদ্যালয়-সংলগ্ন হওয়ায় তিনি দুপুরের পর ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটি মাঝে মাঝে খোলা দেখেন। আজকে (বুধবার) কেন রিনা ম্যাডাম আসেননি বলতে পারব না।’

চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বসবাসের জন্য সরকারিভাবে কোয়ার্টার বরাদ্দ থাকলেও সেখানে থাকেন না নাউতরা ইউনিয়নে পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিদর্শিকা রিনা বেগম। তিনি পার্শ্ববর্তী ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র সংলগ্ন প্রাইভেট চেম্বার খুলে বসেছেন।

ঝুনাগাছ চাপানি ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান বলেন, ‘তিন বছর আগে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে রিনা বেগমকে ঝুনাগাছ চাপানি থেকে দিনাজপুর জেলার ঘোরাঘাট উপজেলার পালসা ইউনিয়নে বদলি করা হয়েছিল। কিন্তু বদলির এক বছরের মধ্যে তিনি পার্শ্ববর্তী নাউতরা ইউনিয়নে বদলি নিয়ে আসেন। চাপানি ইউনিয়নে তার চেম্বার রয়েছে।’

চিকিৎসা নিতে আসা কয়েকজন অন্তঃসত্ত্বা নারী অভিযোগ করে বলেন, পরিদর্শিকা রিনা বেগম গর্ভবতী চেকআপের সময় ৫০০ টাকা, ডেলিভারির সময় এক হাজার টাকা এবং গর্ভবতী কার্ড প্রদানের সময় ২০০ করে টাকা নেন।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে নাউতরা ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা রিনা বেগম সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

ডিমলা উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাসীম আকন্দ জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করা হবে।

নীলফামারীর পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক শাহাজাহান বলেন, নাউতরা ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রটিতে তালা ঝুলছে বিষয়টি আমার জানা নেই। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।

জাহেদুল ইসলাম/এসআর/এএসএম