মৌলভীবাজারে বোরো ধান কাটা শুরু
মৌলভীবাজারের রাজনগরে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। বুধবার (৭ এপিল) দুপুরে উপজেলার কাউয়াদীঘি হাওর পাড়ের সোনাটিকি গ্রামে ধান কাটার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে মৌলভীবাজার সাতটি উপজেলায় বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৬ হাজার ৩৩০ হেক্টর। কিন্তু চাষাবাদ হয়েছে ৫৬ হাজার ৩৪৫ হেক্টর। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা দুই লাখ ১৭ হাজার মেট্রিক টন। গত বছরের চেয়ে এবার জেলায় দুই হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে হাইব্রিড ধান চাষ হয়েছে।
অন্যান্য জাতের পাশাপাশি আট হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ধান আবাদ করা হয়েছে। এরমধ্যে বেশিরভাগ জমির ধানই পাকতে শুরু করেছে। কাটা শুরু হয়েছে বিভিন্ন জাতের হাইব্রিড ধান।

মুন্সিবাজার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ছালেক আহমদ বলেন, ‘সঠিক সময়ে সার-বীজ পাওয়ায় বোরোর ফলন ভালো হয়েছে। হাওরের নিম্নাঞ্চলের জমির ধানও পাকতে শুরু করেছে। ঢল নামার আগে যাতে কৃষকরা ধান কাটতে পারেন, সে বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
কৃষক রওশন তরফদার জানান, দুদিন আগে এক বিঘা জমির ধান কেটেছি। বিঘাতে প্রায় ২০ মণ করে হাইব্রিড জাতের ধান উৎপাদন হয়েছে। কম সময়ে ভালো ফলন হওয়ায় আমরা খুশি।
এবার হাইব্রিড বোরো ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে উল্লেখ করেন সোনাটিকি এলাকার কৃষক বিমল দাশ। তিনি বলেন, অনুকূল আবহাওয়া, সার, বালাইনাশক ও সেচ সঠিকভাবে দেয়ায় ধানের ছড়া লম্বা ও ফলন ভালো হয়েছে। বিঘাপ্রতি ১৮-২০ মণ পর্যন্ত ধান উঠবে বলে আশা করছেন তিনি।

মুন্সিবাজার ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবু জাফর বলেন, অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার হাইব্রিড হীরা ও টিয়া জাতের ধান ব্যাপক চাষ হয়েছে। ধান ঘরে ওঠার শেষ মুহূর্তে প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি উৎপাদন হবে।
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী বলেন, ‘আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি, কম্বাইন হারভেস্টার ও রিপার মেশিন দিয়ে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ করায় এবার শ্রমিক সংকট হবে না। জেলায় ধান কাটার জন্য ১৫১টি রিপার ও ৫৪টি কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন প্রস্তুত রয়েছে।’
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে হাওর অঞ্চলে বোরো ধান কাটায় সমস্যা হবে না। ভাইরাস মোকাবেলায় সরকারি বিধি-নিষেধ অনুসরণ করে যাতে শ্রমিকরা ধান কাটতে পারেন সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
আব্দুল আজিজ/আরএইচ/এসআর/জিকেএস