ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

স্বামীর কবরও রক্ষা করতে পারছে না হাফেজা বেগম

জেলা প্রতিনিধি | মানিকগঞ্জ | প্রকাশিত: ১২:০৬ পিএম, ০৩ জুলাই ২০২১

ষাটোর্ধ্ব হাফেজা বেগমের স্বামী মারা যায় দশ বছর আগে। তাকে দাফন করা হয়েছিল বাড়ির আঙ্গিনায়। কিন্তু স্বামীর শেষ স্মৃতিচিহ্ন কবরটিও এখন নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। পদ্মার ভাঙনে বসতবাড়িসহ বিলীন হয়েছে কবরের একাংশ। বেরিয়ে গেছে কফিনও। চোঁখের সামনে বসতবাড়ি আর স্বামীর কবর বিলীন হতে দেখেও কিছু করার নেই অসহায় হাফেজার।

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের কুশিয়ার চর গ্রামের হাফেজা বেগমের মতো পদ্মার ভাঙনে দিশেহারা অনেকেই।

ইতোমধ্যে ভাঙনে বিলীন হয়েছে কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক বসত বাড়ি ও ফসলি জমি। হুমকির মুখে রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাজার, পাকা সড়কসহ বহু স্থাপনা। ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন নদী তীরবর্তী মানুষ।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ বছর ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পদ্মায প্রথম ভাঙন শুরু হয়। পরে নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে তীব্র হয় ভাঙনও। অব্যাহত ভাঙনে অনেকের মাথা গোঁজার ঠাই বিলীন হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা আশ্রয় নিয়েছেন অন্যের বাড়ি কিম্বা উঁচু স্থানে। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে অনেকেই ছেড়েছেন গ্রাম।

river1

স্থানীয় বাসিন্দা আজাদ গায়েন জানান, ‘আমরা কোনো ত্রাণ সহায়তা চাই না। চাই বাপ-দাদার ভিটায় বসবাস করতে। দয়া করে ভাঙন ঠেকানোর ব্যবস্থা করেন। আমাদের বাঁচান।

এদিকে ভাঙন রক্ষায় স্থানীয়দের দাবির প্রেক্ষিতে বুধবার (৩০ জুন) থেকে পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরি ভিত্ততে জিও ব্যাগ (বালুর বস্তা) ফেলার কাজ শুরু করেছে। কিন্তু এক কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন তীব্র হলেও, জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে মাত্র আড়াইশ মিটার এলাকায়। তাই কাজ নিয়ে সন্তষ্ট নন স্থানীয়রা।

কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানান, ভাঙন কবলিত এলাকার বাড়ি রক্ষা করতে হলে অন্তত এক কিলোমিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা প্রয়োজন। মাত্র ১০ পার্সেন্ট কাজ হচ্ছে। বাকি ৯০ পার্সেন্ট এখনো ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই বাকি এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন রক্ষায় উদ্যোগ নেয়ার দাবি জানান তিনি।

river1

কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনুছ উদ্দিন গাজী জানান, পদ্মার অব্যাহত ভাঙনে ইউনিয়নের ১৩ মৌজার ১২টিই এখন নদীতে বিলীন। বর্ষার শুরুতেই এবার কুশিয়ারচর এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নিলে এলাকা রক্ষা করা যাবে না। তিনি পদ্মার ভাঙন রোধে স্থায়ী বেরিবাঁধ নির্মাণের দাবি জানান।

মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দিন জানান, ভাঙনকবলিত এলাকা ঘুরে দেখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আড়াশ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। বাকি অংশেও কাজ করা প্রয়োজন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বরাদ্ধ পেলেই কাজ করা হবে।

বি এম খোরশেদ/এএইচ/এমএস