ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

মধ্যরাতে অসুস্থ নারীকে নিজের গাড়িতে হাসপাতালে নিলেন ওসি

জেলা প্রতিনিধি | মানিকগঞ্জ | প্রকাশিত: ১০:১৬ এএম, ০৭ আগস্ট ২০২১

মধ্যরাতে শ্বাসকষ্টে ভোগা এক নারীকে নিজের গাড়িতে করে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে প্রশংসায় ভাসছেন মানিকগঞ্জের গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হানিফ সরকার।

অসুস্থ নারী ও তার স্বামীকে নিয়ে অক্সিজেনের জন্য তিনি ঘুরেছেন এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে। মানিকগঞ্জ শহরের বাসিন্দা নারগিস আক্তার নামে ওই নারী ফেসবুকে ওসির এ সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে শুক্রবার (৬ আগস্ট) রাতে একটি পোস্ট দেন।

এরপরই মানিকগঞ্জের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে পোস্টটি ভাইরাল হয়। সবাই ওসি হানিফের প্রশংসা করে বিভিন্ন মন্তব্য করছেন।

নারগিস আক্তার জানান, বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) রাত ১২টার দিকে হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তার। তার মনে হচ্ছিল- দম বন্ধ হয়ে তিনি মারা যাবেন। তার স্বামী তাকে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হন। কিন্তু রাস্তায় কোনো যানবাহন ছিল না। তখন মনে হচ্ছিল আর বুঝি কেউ তাকে বাঁচাতে পারবে না।

এমন সময় ডিবি পুলিশের ওসি হানিফ সরকার ডিউটি শেষ করে ফিরছিলেন। বাসার নিচে তাদের দেখতে পেয়ে এগিয়ে যান। ঘটনা শুনে দ্রুত নিজের গাড়িতে করে নিয়ে যান মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে।

জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জানান, দ্রুত অক্সিজেন সাপোর্ট প্রয়োজন। অক্সিজেন যোগাড় করার জন্য ওসি হানিফ সরকার অনেক চেষ্টা করেন। কিন্তু হাসপাতাল থেকে জানানো হয় তাদের কাছে অক্সিজেন নেই।

এরপর তাদের নিয়ে বিভিন্ন ক্লিনিকে ক্লিনিকে ঘুরেন হানিফ সরকার। কিন্তু কোথাও অক্সিজেন মিলছিল না। রাত যতই বাড়ছিল শরীর ততই খারাপ হচ্ছিল নারগিসের।

ওসি হানিফ সরকার ও তার স্বামী নিরূপায় হয়ে যোগাযোগ করেন মানিকগঞ্জ মুন্নু মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। অক্সিজেনের জন্য নিজের পরিচয় দিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন ওসি।

তারা রাজি হলে শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের মুন্নু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। রাত তখন দেড়টা বাজে। বাইরে তখন মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিল। তাকে অক্সিজেন দেয়া হয়।

চিকিৎসকরা জানান, এজমাজনতি কারণে তার এমন শ্বাসকষ্ট হয়েছে। আধাঘণ্টা পর সুস্থ হয়ে উঠলে চিকিৎসকরা কিছু ওষুধপত্র লিখে তাকে বাসায় পাঠিয়ে দেন। রাত ২ টার দিকে ওসি হানিফ সরকার গাড়িতে করে তাদের বাসায় পৌঁছে দেন।

নারগিস আক্তার বলেন, ‘আল্লাহর অশেষ রহমত আর হানিফ ভাইয়ের চেষ্টায় আমি বেঁচে গেছি। মধ্যরাতে তিনি পাশে এসে না দাঁড়ালে হয়তো আমি বাঁচতাম না।’

মানিকগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হানিফ সরকার বলেন, ‘মধ্যরাতে
ওই নারী তার স্বামীর অসহায়ত্ব দেখে আর বসে থাকতে পারিনি। তাই তাকে নিজের গাড়িতে করেই চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম।’

তিনি বলেন, ‘অক্সিজেনের জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেছি। একজন মানুষ হিসাবে আরেকজনক মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের কর্তব্য। আল্লাহ তাকে সুস্থ করে তুলেছেন এ জন্য শুকরিয়া জানাচ্ছি।’

মানিকগঞ্জ জেলা পুলিশ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি সবসময়ই মানুষের সুখ দুঃখে
পাশে থাকার চেষ্টা করে বলে জানান ওসি হানিফ।

বি এম খোরশেদ/এএএইচ/জিকেএস