ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

মুন্সিগঞ্জে ১০ টাকায় ইফতার বাজার

জেলা প্রতিনিধি | মুন্সিগঞ্জ | প্রকাশিত: ০৮:৩২ পিএম, ১১ এপ্রিল ২০২২

রমজান মাসকে ঘিরে নিত্যপণ্যের দামে যখন ঊর্ধ্বগতি, তখন নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ১০ টাকায় ইফতার সামগ্রী দিচ্ছেন মুন্সিগঞ্জের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বিক্রমপুর মানব সেবা ফাউন্ডেশন’।

এই সংগঠনের উদ্যোগে মুন্সিগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীতে অস্থায়ী বাজারে মাত্র ১০ টাকার বিনিময়ে তেল, খেজুর, পেঁয়াজ, ছোলা, চিনি, মুড়িসহ সাতটি ইফতারি পণ্য কিনতে পারছেন দরিদ্র ক্রেতারা।

সোমবার (১১ এপ্রিল) দিনব্যাপী উপজেলার কামারখাড়া স্কুল মাঠে ‘১০ টাকায় ইফতার বাজার’ নামে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এসময় ২০৫ জন নিম্নআয়ের মানুষ ১০ টাকার বিনিময়ে ইফতার সামগ্রী কেনেন। ব্যতিক্রমী এ আয়োজনে অসহায় নিম্নআয়ের মানুষের মুখে তৃপ্তির হাসি ফুটেছে।

jagonews24

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অস্থায়ী এই বাজারের ভিন্ন ভিন্ন স্টলে সাজিয়ে রাখা হয়েছে তেল, খেজুর, পেঁয়াজ, ছোলা, চিনি, চিঁড়া ও মুড়ি। অন্য বাজারের মতো নিম্ন আয়ের মানুষজন নিজ পছন্দ মতো পণ্য সংগ্রহ করছেন। তবে সবগুলো পণ্যের মোট দাম রাখা হচ্ছে মাত্র ১০ টাকা।

এই বাজারের উপকারভোগী দিঘীরপাড় এলাকার রুনা বেগম (৫৫) বলেন, পাশের বাড়ির একজন ছোলা-মুড়ি দিছিল। পাঁচ রোজায় সব শেষ হয়ে গেছে। পরে আর কিনে খাইতে পারিনি। এহন ১০ টাকা দিয়া কত কিছু কিনে নিলাম। যা দিয়া বাকি রমজানগুলো কাটিয়ে দিতে পারমু। দোয়া করি, যারা আমাগো এত কমদামে এতকিছু দিলো তাদের আল্লাহ ভালো রাখুক।

পূর্বরাখী এলাকার বাসিন্দা লুৎফর বেপারি (৬০) বলেন, আগের দিন বাজারে কয়েকজনের কাছে শুনলাম এখানে ১০ টাকা দিয়ে বাজার করা যাইবো। প্রথমে বিশ্বাস না করলেও আজ সকালে সত্যিই ১০ টাকা দিয়ে বাজার থেকে সবকিছু কিনছি। এর আগেও তাদের সংগঠন থেকে ইদের খাবার, শীতের কম্বল পাইছি বিনামূল্যে। ছোট ছোট পোলাপানগুলা আমাদের জন্য কত কিছুই না করছে।

jagonews24

রাউৎভোগ গ্রামের নাজমা বেগম (৩৫) বলেন, বাজারে যেখানে ১ লিটার তেলের দাম ১৭০ টাকা সেখানে সাতটি পণ্য মাত্র ১০ টাকায় পেয়েছি। এখানে এসে মনে হলো বাপ-দাদার আমলের বাজার থেকে অল্প টাকায় পণ্য কিনছি। এখন চিন্তামুক্ত, রোজার বাকি দিনগুলো ভালোভাবে কাটবে।

সংগঠনের সদস্য রিয়াদ হোসাইন জাগো নিউজকে বলেন, বর্তমান বাজারের অবস্থা বিবেচনা করে আমরা এই অস্থায়ী বাজারের আয়োজন করেছি। সংগঠনের সদস্যদের দান ও মাসিক চাঁদা দিয়ে বাজার পরিচালনা করা হচ্ছে। আমাদের পরিকল্পনা আরও বড় ছিল। তবে আর্থিক সংকটের কারণে কিছুটা সীমিত পরিসরে করা হচ্ছে। আমাদের প্রত্যাশা এবছর যে হারে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি আগামীতে তার কয়েকগুণ বেশি মানুষকে সহযোগিতা করতে পারবো। এই কাজটি দেখে যাতে অন্যরাও অনুপ্রাণিত হয় ও এগিয়ে আসে সেটিই আমাদের মূল লক্ষ্য।

সংগঠনের সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক হিরা বলেন, প্রথমপর্যায়ে এই বাজার থেকে দুই শতাধিক মানুষ সহায়তা পেয়েছেন। আমরা অসহায় মানুষের আগ্রহ ও তৃপ্তির হাসি দেখে আনন্দিত হয়েছি। ঈদকে কেন্দ্র করে ঈদ বাজার আয়োজনেরও পরিকল্পনা করা হয়েছে। সেখানে নামমাত্র মূল্যে নিম্নআয়ের মানুষদের খাদ্য সহায়তা করা হবে।

আরাফাত রায়হান সাকিব/এমআরআর/এএসএম