ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

কয়রায় সুপেয় পানির জন্য হাহাকার

আলমগীর হান্নান | খুলনা | প্রকাশিত: ০৩:০২ পিএম, ২২ জুন ২০২২

সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ায় শুকিয়ে গেছে উপকূলীয় উপজেলা কয়রার কয়েকশ পুকুর ও খালবিল। মাটি ফেটে চৌচির পুকুরের তলদেশ। ফলে সুপেয় পানি দূরের কথা, দৈনন্দিন কাজে ব্যবহারের পানি কোথাও মিলছে না।

পানির অভাবে সরকারি অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিবার নিয়ে অন্যত্র বসবাস করছেন। তারা বলছেন, টাকা দিয়েও মিলছে না পানি। নদী সংলগ্ন এলাকায় দু-একটি পুকুরে পানি থাকলেও লবণাক্ততার কারণে তা ব্যবহার অনুপযোগী।

খুলনা মহানগরী থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে কয়রা উপজেলা। উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে দুই লাখ ৪০ হাজার মানুষের বাস। কপোতাক্ষ ও সাকবাড়িয়া নদী দ্বারা পরিবেষ্টিত এ উপজেলা। সুন্দরবনের সবচেয়ে কাছের উপজেলা এটি।

কয়রায় সুপেয় পানি জন্য হাহাকার

উপজেলার আমাদী ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. সফিউল সানা, লান্টু সানা ও বাবু সানা বলেন, প্রতি বছর এ সময় খাবার পানির সংকট দেখা দেয়। কিন্তু এ বছর এখনও বৃষ্টি না হওয়ায় খাবার পানি দূরের কথা ওয়াশরুমের জন্যও পানি পাওয়া দুরূহ হয়ে পড়েছে। যেটুকু পাওয়া যাচ্ছে তা খুব হিসাব করে খরচ করতে হচ্ছে।

দক্ষিণ বেদকাশী এলাকার কলেজ শিক্ষক সদর উদ্দিন ও সুভাষ সানা বলেন, পানির জন্য এলাকায় অনেক সমস্যা চলছে। কয়েক মাইল পাড়ি দিয়েও খাবার পানি জোগাড় করা যাচ্ছে না। এনজিও থেকে এলাকার কয়েকটি পুকুরে ফিল্টার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পুকুর শুকিয়ে যাওয়ায় সেগুলো কাজে লাগছে না।

কয়রায় সুপেয় পানি জন্য হাহাকার

মসজিকুড় গ্রামের বাসিন্দা ফারজানা আফরোজ কুমু বলেন, বাড়ির পুকুরের পানি বছরজুড়ে এলাকাবাসী পান করে। তাই পুকুর পাড়ে একটা ফিল্টার বসানো হয়েছে। কিন্তু সেখানে নারীদের লাইন পড়ে যায়। মাঝে মাঝে ঝগড়াও বাধে।

কয়রা উপজেলার কৃষি ব্যাংকের ম্যানেজার কুমার বৈদ্য বলেন, পানির অভাবে পরিবার নিয়ে এখানে বসবাস করতে পারছি না। আমার মতো অনেক সরকারি চাকরিজীবীও একই সমস্যায় ভুগছেন।

কয়রায় সুপেয় পানি জন্য হাহাকার

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুদীপ বালা বলেন, এতো সংকট যে টাকা দিয়েও পানি পাওয়া যায় না। খাবার পানির অভাবে অনেক সময় রোগী ও তাদের স্বজনরা চরম সমস্যায় পড়েন।

তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের জন্য পানির ব্যবস্থা করতে স্থানীয় সংসদ সদস্যের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।

কয়রায় সুপেয় পানি জন্য হাহাকার

এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, পাইপলাইনে পানি সরবরাহ করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। এর আগে সুপেয় পানির জন্য পিএসএফ, রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং প্লান্ট স্থাপনসহ একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা সাময়িক সময় কাজে এসেছে।

তিনি আরও বলেন, যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি সংসদে উত্থাপন করেছি। দুই উপজেলায় পানি সরবরাহ প্রকল্পের জন্য সরকার ৩৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। যার কাজ চলছে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে এলাকায় পানির ট্যাংক ও গভীর নলকূপ স্থাপনসহ অন্যান্য কাজ করা হবে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এই কাজ বাস্তবায়ন করছে।

এফএ/এএইচ/জেআইএম