নারায়ণগঞ্জে সংঘর্ষ: পুলিশ-বিএনপির পাল্টাপাল্টি দোষারোপ
নারায়ণগঞ্জে বিএনপি ও পুলিশের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য পাওয়া গেছে। পুলিশ বলছে, বিএনপির নেতাকর্মীরা অনুমতি ছাড়াই কর্মসূচি পালন করছিলেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছে। তবে বিএনপি নেতাদের দাবি, কয়েকদিন আগে থেকেই অনুমতি নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনকে জানিয়েই তারা কর্মসূচি পালন করছিলেন।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় নারায়ণঞ্জ শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই সংঘর্ষ চলে। এ সময় মুহুর্মুহু টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও গুলি বর্ষণের আওয়াজে পুরো এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। দফায় দফায় সংঘর্ষে পুলিশের ১৫ জন ও বিএনপির প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। নিহত হয়েছেন একজন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, ‘গণতান্ত্রিক দেশে কোনো মিছিল, মিটিং, সমাবেশ করতে হলে অনুমতির প্রয়োজন আছে। বিএনপি এখানে মিছিল করবে আমরা কিন্তু এ বিষয়ে কিছু জানি না। আমরা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলেছি। তার প্রতিনিধিও এখানে আছেন। তিনিও জানেন না। তারা রাস্তা অবরোধ করে মানুষের জানমালের ক্ষতি করে সমাবেশ করার চেষ্টা করছিলেন। আমরা তাদের ভালোভাবে অনুরোধ করে বলেছি রাস্তা অবরোধ করে সমাবেশ করার বিধান নেই। আপনাদের যদি করতে হয় তাহলে অন্য কোনো চিন্তাভাবনা করেন।’
তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের কথা না শুনে পুলিশের ওপর বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ককটেল চার্জ করেন। আমরা জনগণের জানমালের ক্ষতির হাত থেকে বাঁচানোর জন্য আমাদের যে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার সেটা নিয়েছি।’

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি অ্যাডিশনাল এসপির সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন মেইন সড়কে যানজট করা যাবে না। পরে আমি আমাদের নেতাকর্মীদের মেইন রোড থেকে সরিয়ে দিলাম। এরপর আমি তাকে বললাম আমি রওনা হবো। বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা আসছেন, তারা চলে যাবে। তারা তো শহরের চাষাঢ়ায় গিয়ে গাড়িতে উঠবে। তিনি বললেন রাস্তায় যেন যানজট না হয়। আমি বললাম ঠিক আছে। আমি রওনা হই, আমার সঙ্গে নেতাকর্মীরাও রওনা হয়। আর তখনই আমাদের ওপর হামলা করা হয়। পুলিশের হামলায় আমাদের প্রায় পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে।’
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আল ইউসুফ খান টিপু জাগো নিউজকে বলেন, ‘আজ আমাদের বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ছিল। সেজন্য শান্তিপূর্ণ শোভাযাত্রার জন্য ডিসি-এসপিকে অবগত করে আমরা ছয় দিন আগেই জেলা বিএনপির আহ্বায়কের নেতৃত্বে চিঠি দিয়েছিলেন। আমরা তাদের অবগত করেই আজকের পোগ্রামের আয়োজন করি। হঠাৎ পুলিশ এসে আমাদের বাধা দেয়।’
তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের বলেছি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে চলে যাবো। তারা বলেন না, করতে পারবেন না। পরে আমরা বলি ঠিক আছে হেঁটে চলে যাই। কিন্তু তারা আমাদের হেঁটে যেতেও দেবেন না। পরে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা আসতেই টিয়ারশেল, গুলিসহ যা আছে সবকিছু নিয়ে আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমাদের প্রায় ২০০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। একজন মারা গেছে।’
মোবাশ্বির শ্রাবণ/এসআর