ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

‘মন্ত্রীর গাড়িচালকের ফোনে’ কৃষককে থানায় আটকে রাখার অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধি | লালমনিরহাট | প্রকাশিত: ০৭:৩৪ পিএম, ০৮ অক্টোবর ২০২২

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে রাস্তার পাশের জমির ঘাস কাটা নিয়ে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর গাড়িচালকের সঙ্গে তর্ক করায় এক কৃষককে তিন ঘণ্টা থানায় নিয়ে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার (৭ অক্টোবর) রাত ৯টা থেকে দুপুর পৌনে ১২টা পর্যন্ত ফুল কমল (৪০) নামের ওই কৃষককে কালীগঞ্জ থানায় আটকে রাখা হয়।

ভুক্তভোগী কৃষক ফুল কমলের বাড়ি কালীগঞ্জের দলগ্রাম ইউনিয়নের শ্রীখাতা। পাশের কাশিরাম গ্রামে বাড়ি সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের। তিনি লালমনিরহাট-২ (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য। তার গাড়িচালকের নাম আতিয়ার রহমান (৩৭)।

এদিকে কালীগঞ্জের কাকিনা উত্তর বাংলা কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক ও কাশিরাম গ্রামের বাসিন্দা এস তাবাসসুম রায়হান মুসতাযীর এ ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করে তার ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়েছেন। এতে তিনি অভিযোগ করেন, গাড়িচালক আতিয়ার রহমান প্রতিদিনের মতো শুক্রবার প্রাতভ্রুমণে বের হন। শ্রীখাতা মৌজায় প্রধান সড়কে পৌঁছে দেখেন কয়েকজন কৃষক রাস্তাসংলগ্ন জমির পাশের ঘাস কাটছেন গরুর জন্য। আতিয়ার ঘাস কাটতে নিষেধ করেন। তখন ফুল কমল এর প্রতিবাদ জানান। এতে ক্ষিপ্ত হন আতিয়ার।

তাবাসসুম রায়হান স্ট্যাটাসে আরও উল্লেখ করেন, ঘটনার পর রাত ৯টায় কালীগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নুরুজ্জামানের নির্দেশে শ্রীখাতা গ্রামের বাড়ি থেকে কমলকে ধরে নিয়ে যান স্থানীয় চৌকিদার। এরপর তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে গাড়িচালক আতিয়ারের কাছে মাফ চাইতে বলেন এসআই নুরুজ্জামান। রাত ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে কমলকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ফুল কমল (৩৫) বলেন, ‘থানায় আটক থাকার সময় আমাকে এসআই নুরুজ্জামান হুমকি দেন, কানে থাপ্পড় দেন। বলেন, থানা থেকে গিয়ে মন্ত্রীর গাড়িচালকের সঙ্গে দেখা করে হাত-পা ধরে ক্ষমা চাইতে। নইলে জেলে পচে মরবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘শনিবার সারাদিন আমাকে ও পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে। আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি, কখন যে কী হয়।’

রাস্তাসংলগ্ন ওই জমি নিজের বলে জানিয়েছেন এস তাবাসসুম রায়হান। তিনি বলেন, ‘এলাকার গরিব লোক সেখান থেকে গরুর জন্য ঘাস কেটে নিয়ে যায়। এতে আমার সমস্যা নেই। মন্ত্রীর গাড়িচালককে ওই দায়িত্ব কে দিয়েছিলেন? একজন গরীব মানুষকে থানায় এভাবে আটকে রেখে নির্যাতন কতটা যৌক্তিক ও বিধি সম্মত।’

তবে হুমকির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কালীগঞ্জ থানার এসআই মো. নুরুজ্জামান। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘মন্ত্রীর গাড়িচালক আতিয়ার রহমানের মৌখিক অভিযোগে কমলকে স্থানীয় চৌকিদার দিয়ে শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে থানায় ডেকে আনা হয়। রাত পৌনে ১২টার দিকে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’

গাড়িচালক আতিয়ার রহমান বলেন, ‘রাস্তার ধারের ঘাস কাটতে দেখে আমি তাদের মানা করি, ওরা শোনেনি। থানায় ফোন করেছি বিষয়টি দেখার জন্য। এরপর কী হয়েছে তা আমার জানা নেই।’

এদিকে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ টি এম গোলাম রসুল জাগো নিউজকে বলেন, ‘সে তো মাদক ব্যবসায়ী, বিভিন্ন জায়গায় মাদক সরবরাহের খবর পেয়ে তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাকে কোনো ধরনে হুমকি বা নির্যাতন করা হয়নি।’

রবিউল হাসান/এসজে/জেআইএম