ঘন কুয়াশায় ঢেকেছে কুড়িগ্রাম, বিপর্যস্ত জনজীবন
ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে কুড়িগ্রামের জনপদ। শীতের তীব্রতা বাড়ায় বিপর্যস্ত জনজীবন। বিশেষ করে গ্রাম-গঞ্জে শীতের প্রভাবে খেটে খাওয়া মানুষগুলো পড়ছেন বিপাকে। এছাড়া শিশু ও বৃদ্ধরা ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগারের তথ্যমতে, শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় জেলায় ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। দিন গড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।

কুড়িগ্রামে মধ্যরাত থেকে ঘন কুয়াশা পড়ায় বাড়ছে শীতের তীব্রতা। ফলে দিনের বেলাতেও যানবাহনকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে সড়কে। শীত বাড়ায় বিপাকে পড়ছে খেটে খাওয়া মানুষ। সময় মতো কাজে যোগ দিতে তাদের বেগ পেতে হচ্ছে। এছাড়া শিশু ও বয়স্কদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন নদীর তীরবর্তী চরাঞ্চলের বাসিন্দারা। উষ্ণ কাপড়ের অভাবে দুস্থ ও অসহায় মানুষদের ভোগান্তি বাড়ছে।

কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার পাঁচগাছি ইউনিয়নের শ্রমিক আবু হোসেন বলেন, আমি হোটেলে কাজ করি। সকাল ৬টার মধ্যে কাজে পৌঁছাতে হয়। ঘন কুয়াশা ও শীতের কারণে কাজে যোগ দিতে কষ্ট হচ্ছে। কী করবো, কাজ না করলে তো আর সংসার চলে না।

অটোরিকশাচালক সাইদুল ইসলাম জানান, কুয়াশার কারণে সড়কে অটো চালাতে তাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। সকালবেলা হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে। তাছাড়া যাত্রীও কমে গেছে। এরকম কুয়াশা প্রতিদিন পড়তে থাকলে আয় কমে যাবে। এতে সংসার খরচ চালাতে তাদের হিমশিম খেতে হবে।

কৃষক জসিমউদ্দিন বলেন, বীজতলায় পানি দিতে যাচ্ছি। অতিরিক্ত শীত ও কুয়াশায় ধানের চারা বেড়ে উঠতে সমস্যা হয়। এভাবে কুয়াশা পড়তে থাকলে বীজতলার ক্ষতি হবে।

এছাড়া ঘন কুয়াশা পড়ায় কাজে যেতে দেরি হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই সরকার বলেন, জেলার ৯টি উপজেলায় ৩৮ হাজার শীতবস্ত্র বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা বিতরণের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। এছাড়া দুস্থ ও অসহায় মানুষদের পাশে বেসরকারিভাবে বিভিন্ন সংগঠন শীতবস্ত্র বিতরণের কাজ শুরু করেছে।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তুহিন মিয়া বলেন, শুক্রবার কুড়িগ্রামে তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ ১২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। দিনদিন জেলার তাপমাত্রা আরও কমতে থাকবে এবং শীতের তীব্রতা বাড়বে।
ফজলুল করিম ফারাজী/এমআরআর/এমএস