ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

খুলনায় আ. লীগের ৪০ বিএনপির ১০ প্রার্থী বিদ্রোহী

প্রকাশিত: ০৭:৫০ এএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে খুলনায় আ.লীগের ৪০ এবং বিএনপির ১০ জন নেতাকর্মী বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে তাদের মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। বিদ্রোহী এসব প্রার্থীরা তাদের মনোনয়ন ফেরত না নিলে তাদের বিরূদ্ধে সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দু`দলের শীর্ষ স্থানীয় নেতারা।

খুলনার ৬৭টি ইউনিয়নে আ.লীগের মনোনীত প্রার্থীর বিপরীতে বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন ৪০ জন। এক্ষেত্রে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে ইউপি নির্বাচনে অংশ নেয়া বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ দু’নেতা। একই সঙ্গে দলের স্বার্থে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকা প্রতীকের বিজয় সুনিশ্চিত ও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বিদ্রোহীদের মননোনয়ন প্রত্যাহার করে নেয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন তারা।

খুলনা জেলা আ.লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ প্রশাসক শেখ হারুনুর রশীদ বলেন, কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন, দলের পদভুক্ত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি দলের স্বার্থে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের বিজয় সুনিশ্চিত করার আহ্বান জানান। এছাড়া প্রত্যাহারের ধার্যকৃত দিনের মধ্যে বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি প্রত্যহারের আহ্বানও জানানো হবে বলেও তিনি বলেন।

সাধারণ সম্পাদক এস এম মোস্তফা রশিদী সুজা এমপি জানান, রাজনৈতিক কৌশলের কারণে দলের একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। আবার দলের মনোনয়ন না পেয়েও অনেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। তিনি বলেন, দলের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন ইতোমধ্যে নির্ধারিত সময়ের ভেতরে প্রত্যাহার করে নিতে বলা হয়েছে এবং এ সময়ের মধ্যেই তারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন বলে বিশ্বাস তার। অন্যথায় কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, মূল দলের বাইরে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা প্রার্থী হলে প্রত্যাহার করে নিতে সেই সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের বলা হবে।

অপরদিকে খুলনায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী তালিকার বাইরে দলের অন্তত ১০ নেতা নির্বাচনী মাঠে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন। আবার নির্বাচনী কৌশল হিসেবে দুটি ইউনিয়নে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের স্ত্রী ও ছেলে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
 
এদিকে, এবারের নির্বাচনে দলে কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী থাকবে না বলে দলের নেতৃবৃন্দ মন্তব্য করেছেন। ইতোমধ্যে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের জন্য বিদ্রোহী প্রার্থীদের বলা হয়েছে। দলের মনোনীত প্রার্থীদের বিপক্ষে বিদ্রোহী প্রার্থীরা আগামী ২ মার্চের মধ্যে প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন দলের স্থানীয় পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা।

দলের একাধিক সূত্র জানায়, খুলনা জেলার ৯ উপজেলার ৬৮ ইউনিয়নের মধ্যে ৬৭টি ইউনিয়নে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২২ মার্চ। তবে, জেলার ৬৭টি ইউনিয়নের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৬টি ইউনিয়নে দলীয় কোন প্রার্থী খুঁজে পায়নি বিএনপি। এর মধ্যে রয়েছে দাকোপের কামারখোলা, তিলডাঙ্গা, লাউডোব ও কৈলাশগঞ্জ, তেরখাদার সাচিয়াদহ ইউনিয়ন এবং পাইকগাছা উপজেলার লস্কর ইউনিয়ন।

অপরদিকে, তেরখাদা ইউনিয়নে দল মনোনীত প্রার্থী মো.মহিবুলাহ্ এবং ছাগলাদাহ ইউনিয়নের প্রার্থী মঞ্জু আহসান দারুর মনোনয়নপত্র গত ২২ ফেব্রুয়ারি সরকারি দলের প্রার্থীরা ছিঁড়ে ফেলেছে বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন বিএনপি নেতারা। এ দু’টি ইউনিয়নে দলের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেনি। ফলে এবারের নির্বাচনে ৫৯টি ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থী রয়েছেন। তবে, এসব ইউনিয়নেও দলীয় প্রার্থীদের বিপরীতে রয়েছেন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী। এসব বিদ্রোহী প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন।

ব্যতিক্রম হিসেবে সোলাদানাতে বিএনপি মনোনীত বর্তমান চেয়ারম্যান এসএম এনামুল হকের সঙ্গে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তার স্ত্রী ইয়াসমিন আক্তার সোমা। এটাকে নির্বাচনী কৌশল হিসেবে দেখছেন নেতা-কর্মীরা। কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নে নির্বাচনী কৌশল হিসেবে বিএনপি মনোনীত বর্তমান চেয়ারম্যান সরদার মতিয়ার রহমান ও তার ছেলে আবুল কালাম কাজল দু’জনই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

ডুমুরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান খান মনসুর আলী জানান, ডুমুরিয়ার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে পাঁচটি ইউনিয়নে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ৫ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তবে এসব প্রার্থীরা নির্ধারিত সময়ের আগেই তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. এস এম শফিকুল আলম মনা জানান, এবারের নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থীদের বিপক্ষে দলের কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী থাকবে না বলে আমি বিশ্বাস করি। আর যারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, তাদের প্রত্যাহারের জন্য বলা হয়েছে। আগামী ২ মার্চ প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। এর মধ্যে দল মনোনীত প্রার্থীদের বিপক্ষে দলের কোনো নেতা প্রার্থী থাকলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ সময় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে ধানের শীষ প্রতীককে নির্বাচিত করতে দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।

আলমগীর হান্নান/এফএ/এসএস/এমএস