গৃহবধূর চুল কর্তন : মামলার পরও দেদারসে ঘুরছে আসামিরা
কুষ্টিয়ার খোকসায় থানা থেকে ছাড়া পেয়ে ইভটিজিং মামলার বাদীকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে মাথার চুল কেটে মুখে চুন-কালি মাখিয়ে দেওয়ার ঘটনায় মামলা হলেও পুলিশ এখনও পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি। বখাটের ভয়ে গহবধূর স্বামী ও সন্তানরা বাড়ি ফিরতে পারছে না।
এদিকে এ ঘটনার সংবাদ মিডিয়ায় প্রকাশ হওয়ায় স্থানীয় সাংবাদিকদের সায়েস্তা করতে পুলিশ আদাজল খেয়ে মাঠে নেমেছে। তিন সন্তানের জননী গৃহবধূ সামেলা খাতুনের মাথার চুল কেটে শারীরিক নির্যাতন করার ঘটনার দুইদিন পর বখাটে তৌহিদ ও সুমনসহ ৬ জনকে আসামি করে খোকসা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ আইনে একটি মামলা দায়ের হয়েছে। কিন্তু বখাটেদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না বলে গৃহবধূর স্বামী মিন্টু শেখ অভিযোগ করেছেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, প্রথম দফায় থানা থেকে ছাড়া পাওয়া বখাটেরা দল বেঁধে প্রকাশ্যে গোটা গ্রামে মহড়া দিয়ে বেড়াচ্ছে। তাদের ভয়ে মিন্টু ও তার তিন সন্তান গত দুই দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি স্ত্রীর কাছে বসে কাটাচ্ছেন। অপর দিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের এসআই রেজা ও থানা থেকে আসামি ছেড়ে দেয়ার সঙ্গে জড়িত এসআই কার্তিক তাদের (পুলিশের) দোষ না দিতে হাসপাতালে গিয়ে বাদীকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ সামেলা খাতুন জানান, বখাটে তৌহিদ, সুমনসহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে থানায় দুই দফায় অভিযোগ করা হলেও পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করছে না। ইতোমধ্যে পুলিশের এসআই রেজা কয়েক দফায় হাসপাতালে গিয়ে বাদীকে হুমকি ধামকি দিয়ে এসেছেন বলে তিনি অভিযোগ করেন। এদিকে এ ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানোর পরও আসামিরা গৃহবধূর বাড়ি-ঘর ভেঙে উচ্ছেদ করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। ভয়ে তার তিন শিশু সন্তান ও স্বামী বাড়ি যেতে পারছেন না।
বখাটেদের হাতে নির্যাতিত গৃহবধূর স্বামী মিন্টু শেখ বলেন, এই বখাটের জন্য কয়েক বছর আগে সে গ্রাম ছেড়েছিল। রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যস্থতায় সম্প্রতি তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। বখাটেদের তাণ্ডবে এবার তাকে গ্রাম নয় দেশ ছাড়তে হবে।
নির্যাতিতা গৃহবধূর শারীরিক অবস্থা কেমন জানতে চাওয়া হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. কামরুজ্জামান সোহেল জানান, রোগীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে তবে মাথার চুল কেটে নেওয়ায় তিনি কিছুটা হলেও মানসিক বিপর্যয়ের শিকার হয়েছেন। শুধুই কান্না কাটি করছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের এসআই রেজা বলেন, গহবধূর চুল কেটে নির্যাতন করার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলাটির তদন্ত চলছে।
আল-মামুন সাগর/এমএএস/এবিএস