বিল না পেয়ে রোগী আটক-মৃত্যু
নোয়াখালীর প্যানকেয়ার হাসপাতালের আইসিইউ সিলগালা
নোয়াখালী সদরে প্যানকেয়ার আইসিইউ হাসপাতাল অ্যান্ড নরমাল ডেলিভারি সেন্টারে অভিযান চালিয়েছেন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। এসময় অসঙ্গতি পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির আইসিইউ ও রেডিওলোজি বিভাগ বন্ধ করে দিয়েছেন বিচারক। এছাড়া দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।
বুধবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় চালানো এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহসান হাফিজ।

এর আগে বিল না পেয়ে এক রোগীকে আটক ও হত্যার অভিযোগ ওঠে এ হাসপাতালের বিরুদ্ধে। অভিযানে ওই ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নাঈমা নুসরাত জেবিনও উপস্থিত ছিলেন।
আদালত সূত্র জানায়, অভিযানে আইসিইউ ও রেডিওলোজি বিভাগে চিকিৎসক, নার্সসহ পর্যাপ্ত জনবল না পেয়ে তা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এছাড়া ভোক্তা অধিকারসহ বিভিন্ন আইনে হাসপাতালের মালিক আবদুল মালেক মানিককে দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: হাসপাতালের বিল না পেয়ে রোগী আটক, বারান্দায় মিললো মরদেহ-
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহসান হাফিজ অভিযানের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে এ অভিযান চালানো হয়েছে। ভবিষ্যতে অসঙ্গতিপূর্ণ কিছু পেলে আবারও অভিযান চালানো হবে।
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নাঈমা নুসরাত জেবিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ হাসপাতালে নিয়মবহির্ভূতভাবে একজন বিষপান করা রোগীকে ভর্তি করেছে। আবার টাকার জন্য সেই রোগীকে আটক করার অভিযোগের সত্যতা পেয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। সে বিষয়েও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
এদিকে অভিযানের সময় প্যানকেয়ারের মালিক আবদুল মালেক মানিক সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন। তিনি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে দেশ টেলিভিশনের নোয়াখালী প্রতিনিধি খায়রুল আনাম রিফাতকে ধাক্কা দিয়ে লাঞ্ছিত করেন। পরে আদালত শাস্তির ভয় দেখালে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।

শুক্রবার (১৮ আগস্ট) রাতে বিষপানে আহত সোনাইমুড়ি উপজেলার আমকি গ্রামের বাবর আহম্মদকে (২৪) নোয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল থেকে নিজের হাসপাতালে ভর্তি করেন মানিক। পরেরদিন শনিবার বিকেলে ৪৭ হাজার টাকা বিল করলে রোগীর পরিবার ২৫ হাজার টাকা দেয়। বাকি টাকা দিতে না পারায় কক্ষে তালা মেরে রোগীকে আটক করে লোকজনকে বের করে দেওয়া হয়। পরদিন (রোববার) দুপুরে সদর হাসপাতালের বারান্দায় বাবরের মরদেহ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় নিহতের স্বজনরা জেলা প্রশাসককে অভিযোগ দিলে সিভিল সার্জন কার্যালয় তদন্ত কমিটি গঠন করে। সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নাঈমা নুসরাত জেবিনের নেতৃত্বে সেই কমিটি অভিযোগের সত্যতা পেয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার।
ইকবাল হোসেন মজনু/এসআর/জিকেএস