ঘুস না পেয়ে ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগ ভূমি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে
বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মাহবুবুল আলমের বিরুদ্ধে সরেজমিন প্রতিবেদন দিতে অর্ধলাখ টাকা ঘুস দাবির অভিযোগ উঠেছে। চাহিদামতো ঘুস না পেয়ে ভুয়া প্রতিবেদন করায় তার বিরুদ্ধে দুদক, জেলা প্রশাসক ও ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন জিহাদ আলী সরকার নামের এক ভুক্তভোগী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভবানীপুর ইউনিয়নের বালেন্দা মৌজার মৃত ওমর আলী (জিহাদ আলীর বাবা) ৪২ শতাংশ জমি চান মাহমুদ সরকার ও আজবাহাতুন বেওয়ার কাছ থেকে কিনে ভোগদখল করে আসছিলেন। কিন্তু আরএস রেকর্ড ওমর আলীর নামে না হয়ে মা আমেনা বিবির নামে হয়। আমেনা বিবি ওই জমি তার অপর দুই ছেলের নামে লিখে দেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জিহাদ আলী বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। এ বিষয়ে আদালত শেরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমির কাছে তদন্ত প্রতিবেদন চাইলে তিনি ভবানীপুর ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মাহবুবুল আলমকে দায়িত্ব দেন।
প্রতিবেদনে মাহবুবুল আলম উল্লেখ করেন, ‘বাদীর পিতা ওমর আলী ওই সম্পত্তি চান মাহমুদ সরকারের কাছ থেকে কিনলেও ওমর আলী বা তার পুত্রদের নামে আরএস রেকর্ড প্রস্তুত হয়নি। সরেজমিনে তদন্তকালে দেখা যায়, আরএস রেকর্ডের মালিক আমেনা বিবির কাছ থেকে বিবাদী ওই সম্পত্তি কিনে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে ভোগদখল করে আসছেন। তদন্তের সময় সরেজমিনে উপস্থিত লোকজনদের কাছ থেকে আরও জানা যায়, ওই সম্পত্তিতে বাদীর কোনো দখল নেই। সম্পূর্ণ সম্পত্তি বিবাদী আবু বকর দিং ওই সম্পত্তি ভোগদখল করেন।’
তার এ তদন্ত প্রতিবেদনে বাদী নারাজির আবেদন করেন। পরে আদালত শেরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) পুনরায় তদন্ত প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেন। পরবর্তী সময়ে সহকারী কমিশনার ভূমি একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন, যেখানে ভবানীপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মাহবুবুল আলমের প্রতিবেদন মিথ্যা প্রমাণিত হয়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী জিহাদ আলী বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন তৈরির আগে ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম আমার কাছে থেকে ৫০ হাজার টাকা ঘুস দাবি করেন। সেই টাকা না দেওয়ায় তিনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে মিথ্যা প্রতিবেদন জমা দেন। এজন্য তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছি।’
জানতে চাইলে অভিযুক্ত ভবানীপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম বলেন, ‘আমি ঘুস খাই না। তবে আমার ওখানে যারা কম্পিউটারের কাজ করে তারা টাকা নেয়। আমি লোকজনের কাছ থেকে শুনে প্রতিবেদন দিয়েছি।’
শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা সুলতানা বলেন, একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসআর/জিকেএস