বগুড়ায় দুই দিনব্যাপী পিঠা উৎসব শুরু
হিম হিম শীতে বগুড়ায় উষ্ণতা ছড়াতে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী পিঠা উৎসব। পিঠা উৎসবের প্রথম দিন নারী ও শিশুদের ছিলো উপচেপড়া ভিড়। শিশুরা পিঠা উৎসবে এসে নতুন নতুন পিঠার নাম জেনে আনন্দ প্রকাশ করে তারা।
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) শিশু সংগঠন ভোর হলো ও লিটল থিয়েটারের আয়োজনে শহরের কথাসাহিত্যিক রোমেনা আফাজ মুক্ত মঞ্চে দুইদিন ব্যাপী পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, পিঠা উৎসবে শিশুরা তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে ঘুরছে। নতুন নতুন নামের পিঠা দেখে উৎসাহিত হচ্ছে তারা। কেউ আবার পিঠা খেয়ে স্বাদ নিচ্ছেন। নানা স্বাদের বাহারি পিঠা নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেছিল বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। নারী উদ্যোক্তারা এবং শখের বসে বেশ কিছু গৃহিণীও আসেন পিঠা মেলায় অংশ নিতে।

পিঠা উৎসবে স্টল দিয়েছেন সুহাদা জামান। জাগো নিউজকে তিনি জানান, উৎসবে নিজ দায়িত্ববোধ থেকে এসেছেন। উৎসবে আসবার পর কোন পিঠা কিভাবে তৈরি করতে হয় সেটা অনেকেই জানতে চেয়েছেন। কেউ পিঠা তৈরি করা দেখছেন। আবার অনেকেই পরিবারের জন্য পিঠা নিয়ে গেছেন।
এলিনা জাহান আরেকচন জানান, তারা প্রায় ১৭ প্রকার পিঠা তৈরি করেছেন। নতুন প্রজন্মকে পিঠার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে পিঠা উৎসবে যোগ দিয়েছেন। পিঠার পাশাপাশি হাতে তৈরী গহনা, হ্যান্ড পেইন্ট এর বিভিন্ন কাজও প্রদর্শন করেছেন।
জানা যায়, আইলা প্রজ্জ্বালন করে বর্ণিল পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন বগুডা-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু। এসময় নৃত্য ছন্দম আর্টস একাডেমির শিল্পীরা আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে। এছাড়া কলেজ থিয়েটার পরিবেশন করে বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের দলীয় সংগীত। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বগুড়া থিয়েটারের সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য্য শংকর।
আলোচনা শেষে ভোর হলো সাংস্কৃতিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আবৃত্তি পরিবেশিত হয়। পরে অনুষ্ঠিত হয় শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা।

বিকেলে বগুড়া সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের প্রচার সম্পাদক লুবনা জাহানের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে প্রকাশ শৈলী। এরপরে উচ্চারণ একাডেমির দলীয় পরিবেশনা ও কলেজ থিয়েটার পরিবেশন করে নাটক যুদ্ধ এবং যুদ্ধ।
আয়োজক কমিটির প্রধান তৌফিক হাসান ময়না জানান, লিটল থিয়েটার এবং ভোর হলো দীর্ঘদিন ধরে পিঠা উৎসব আয়োজন করে আসছে। শহুরে সমাজ বাঙ্গালীর যে ঐতিহ্য পিঠাপুলি, পায়েস এগুলো ভুলতে বসেছে। শিশুদের মাঝে পিঠা চেনানো, স্বাদ গ্রহণ, আর বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় ঘটিয়ে দেওয়াই এ আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য।
শনিবার পিঠা উৎসবের সমাপনী দিনে সকালে অনুষ্ঠিত হবে কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সবশেষে বগুড়া থিয়েটার পরিবেশন করবে নাটক ‘নানা রঙের দিন’।
এনআইবি/এএসএম