আসিয়ানভুক্ত দেশে রপ্তানি বাড়াতে করণীয়
আসিয়ানভুক্ত দেশগুলো বাণিজ্যের বড় বাজার হলেও পিছিয়ে বাংলাদেশ/জাগো গ্রাফিক্স
• পণ্যের বৈচিত্র্য, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি
• মান ও সার্টিফিকেশন নিশ্চিতকরণ
• এসএমই খাতে বিশেষ প্রণোদনা
• বাজার গবেষণা ও নতুন পণ্য উদ্ভাবন
আসিয়ানভুক্ত (অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনস) দেশগুলোতে যে সম্ভাবনা রয়েছে তার তুলনায় বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ খুবই সীমিত। অর্থনীতির আকার, জনসংখ্যা, খাদ্যাভ্যাস, ক্রয়ক্ষমতা, সাংস্কৃতিক সাদৃশ্য প্রভৃতি বিবেচনায় দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলো বাণিজ্যের বড় বাজার। এসব দেশে বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়াতে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে বাংলাদেশ এশিয়ান দেশগুলোতে ৭১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যা দেশের মোট ৪৮ দশমিক ২৮ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানির মাত্র ১ দশমিক ৬১ শতাংশ।
সামগ্রিকভাবে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আসিয়ান দেশগুলোর মোট রপ্তানি আয় ৭৭৭ দশমিক ৫৯ মিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের ৭৫৮ দশমিক ০৭ মিলিয়ন ডলারের তুলনায় ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ বৃদ্ধি নির্দেশ করে।
রপ্তানির চিত্র
২০২৪-২৫ অর্থবছরে আসিয়ান দেশগুলোর রপ্তানি আয়ের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বেশিরভাগ দেশের রপ্তানি আয় বেড়েছে। ইন্দোনেশিয়া এবছর রপ্তানি খাতে ভালো পারফর্ম করেছে। তাদের রপ্তানি আয় ৪৮ দশমিক ২৩ মিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ৫৬ দশমিক ৭১ মিলিয়ন ডলার হয়েছে, যা ১৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নির্দেশ করে।
বাংলাদেশ এখনো আসিয়ান দেশগুলোর বাজারকে পর্যাপ্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না, যার প্রধান কারণ উদ্যোগের অভাব। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের রপ্তানি কার্যক্রম মূলত ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও উত্তর আমেরিকাকেন্দ্রিক হওয়ায় আসিয়ান অঞ্চলের জন্য উপযুক্ত ও বৈচিত্র্যময় পণ্যের ঘাটতি রয়েছে।- পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এম মাসরুর রিয়াজ
কাম্বোডিয়ার রপ্তানি আয় ১৩ দশমিক ১২ মিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ১৫ দশমিক ৮১ মিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা ২০ দশমিক ৫১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। ভিয়েতনাম ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১১০ দশমিক ৭৬ মিলিয়ন ডলার আয় করেছিল, যা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেড়ে ১২৮ দশমিক ৯৬ মিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। প্রবৃদ্ধি ১৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
সিঙ্গাপুরের রপ্তানি আয় ১০৩ দশমিক ৩৪ মিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ১০৯ দশমিক ২০ মিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে, প্রবৃদ্ধির হার ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ। মিয়ানমারের রপ্তানি আয় ৩১ দশমিক ৪২ মিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে ৩৪ দশমিক ৮৩ মিলিয়নে উন্নীত হয়েছে, যা ১০ দশমিক ৮৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি।
থাইল্যান্ডের রপ্তানি আয় সামান্য কমে ৬৩ দশমিক ৮৩ মিলিয়ন ডলার থেকে ৬১ দশমিক ৮৪ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। যদিও সংখ্যাগত পার্থক্য খুব বেশি নয়, তবে এটি ৩ দশমিক ১২ শতাংশ হ্রাস নির্দেশ করে। ফিলিপাইনসের রপ্তানি আয় ৯১ দশমিক ৫৩ মিলিয়ন ডলার থেকে কমে ৮৫ দশমিক ৬৫ মিলিয়নে নেমে এসেছে, হ্রাস হয়েছে ৬ দশমিক ৪২ শতাংশ।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া এফটিএ হলে খুলবে আসিয়ানে রপ্তানির দুয়ার
মালয়েশিয়ায় হালাল পণ্য মেলায় ১৫ লাখ ডলারের অর্ডার পেলো প্রাণ
হালাল পণ্যের বাজারে অবস্থান শক্ত করতে মালয়েশিয়ার মিহাসে প্রাণ
মালয়েশিয়ার রপ্তানি আয় ২৯৩ দশমিক ৯১ মিলিয়ন ডলার থেকে কমে ২৮২ দশমিক ৫৫ মিলিয়নে নেমেছে, কমেছে ৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ। লাওসের রপ্তানি আয় সামান্য কমেছে, ০ দশমিক ৮ মিলিয়ন ডলার থেকে ০ দশমিক ৭৪ মিলিয়নে, যা ৭ দশমিক ৫ শতাংশ হ্রাস নির্দেশ করে। সবচেয়ে বড় হ্রাস লক্ষ্য করা গেছে ব্রুনাইতে, যেখানে রপ্তানি আয় ১ দশমিক ৪৮ মিলিয়ন ডলার থেকে কমে ১ দশমিক ২৭ মিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে, অর্থাৎ ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ হ্রাস।
এ অঞ্চলে রপ্তানি বিপুল সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন রপ্তানি বাড়ছে না সে প্রশ্ন সবার। রপ্তানিকারক, অর্থনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাণিজ্যিক চুক্তির অভাব, আঞ্চলিক ইন্টিগ্রেশন, পরিবহন ও লজিস্টিকস সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জের কারণে বাংলাদেশ এখনো এ বাজারের সম্ভাবনা পুরোপুরি কাজে লাগাতে পারেনি।
সীমিত পণ্যে ঝুড়ি ও তৈরি পোশাক খাতে অতিমাত্রায় নির্ভরশীলতা আসিয়ান বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা। অথচ এ অঞ্চলে ভোক্তাপণ্যের, বিশেষ করে কৃষিপণ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য ও পানীয়জাত পণ্যের বিপুল চাহিদা রয়েছে।- বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মাহবুব আলম শাহ
বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়ানোর জন্য এ অঞ্চল অতি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর জনসংখ্যা অনেক বেশি এবং সংস্কৃতি ও খাদ্যাভ্যাসে সাদৃশ্য। ফলে রপ্তানির জন্য বাংলাদেশের জন্য বড় সুযোগ তৈরি করে। দ্য গ্লোবাল ইকোনমি ডটকমের ২০২৪ সালের তথ্য অনুযায়ী, আসিয়ান অঞ্চলের ১০টি সদস্য দেশের মোট জনসংখ্যা প্রায় ৬৯ কোটি ৩০ লাখ।
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এম মাসরুর রিয়াজ জাগো নিউজকে বলেন, ‘বাংলাদেশ এখনো আসিয়ান দেশগুলোর বাজারকে পর্যাপ্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না, যার প্রধান কারণ উদ্যোগের অভাব। দীর্ঘদিন ধরে আমাদের রপ্তানি কার্যক্রম মূলত ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও উত্তর আমেরিকাকেন্দ্রিক হওয়ায় আসিয়ান অঞ্চলের জন্য উপযুক্ত ও বৈচিত্র্যময় পণ্যের ঘাটতি রয়েছে।’

রিয়াজ বলেন, ‘অন্যদিকে, আমাদের কাছে এমন ধরনের পণ্য নেই, যা আসিয়ান দেশগুলোর বাজারে প্রবেশের জন্য প্রয়োজনীয়। এই বাজারে প্রবেশের অন্যতম বড় বাধা হচ্ছে পণ্যের মান ও সার্টিফিকেশনের অভাব। আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে প্রয়োজনীয় সার্টিফিকেশন ছাড়া এসব দেশে পণ্য পাঠানো কঠিন।’
আরও পড়ুন
রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে চাই বুদ্ধিদীপ্ত কৌশল-সুশাসন
চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে রপ্তানি আয় বেড়েছে
বাংলাদেশসহ ১০ দেশে ফান্ডসচেইন ব্যবহার করছে বিশ্বব্যাংক
তিনি আরও বলেন, ‘আসিয়ান দেশগুলো পারস্পরিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে একাধিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করেছে, যার মাধ্যমে তারা একে অপরের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশ এসব আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তির বাইরে থাকায় আমাদের পণ্যের জন্য এই সুবিধা নেই, যা আমাদের প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ার মূল কারণ হিসেবে কাজ করছে।’
সুতরাং, আসিয়ান বাজারে সফলতা অর্জনের জন্য বাংলাদেশকে এই ধরনের বাণিজ্য চুক্তিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং পণ্যের মানোন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে বলে জানান এ অর্থনীতিবিদ।
বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মাহবুব আলম শাহ জাগো নিউজকে বলেন, ‘সীমিত পণ্যে ঝুড়ি ও তৈরি পোশাক খাতে অতিমাত্রায় নির্ভরশীলতা আসিয়ান বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা। অথচ এ অঞ্চলে ভোক্তাপণ্যের, বিশেষ করে কৃষিপণ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য ও পানীয়জাত পণ্যের বিপুল চাহিদা রয়েছে। এই দেশগুলো নিজেরাই পোশাক উৎপাদন করে, ফলে তারা এ ধরনের পণ্য আমদানিতে আগ্রহী নয়।’
আসিয়ান অঞ্চলটি হালাল খাদ্য ও পানীয় বাজারে বিশাল সম্ভাবনাময়, বিশেষ করে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া। এ সুযোগ কাজে লাগাতে হলে বাংলাদেশকে সনদপ্রাপ্তি ও হালাল সার্টিফিকেশন নিশ্চিত করার দিকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।- পিনাকল ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম ভূঁইয়া
‘আসিয়ান বাজারের সুযোগ কাজে লাগাতে হলে বাংলাদেশকে এমন পণ্যের উৎপাদন ও রপ্তানি বাড়াতে হবে, যেগুলোর এ অঞ্চলে উচ্চ চাহিদা রয়েছে। আমার মতে, কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণ, পানীয়জাত পণ্য, গৃহস্থালির সামগ্রী, সিরামিকস, খেলনা ও সফট ড্রিংকস— এই খাতগুলো বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনাময় ‘গেম চেঞ্জার’ হতে পারে।’ মন্তব্য করেন মাহবুব।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সার্টিফিকেশন জটিলতা ও উচ্চ করহার আসিয়ান বাজারে প্রবেশের বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার যদি এই বাজার দখল করতে চায়, তাহলে প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করা।’
পাশাপাশি মালয়েশিয়াকে টার্গেট করা জরুরি জানিয়ে বলেন, ‘মালয়েশিয়াকে আসিয়ান অঞ্চলে প্রবেশের গেটওয়ে হিসেবে ধরা হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, মালয়েশিয়ান বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে অংশীদারত্ব ও যৌথ বিনিয়োগ গড়ে তোলা। কারণ তাদের এই বাজার সম্পর্কে বাস্তব অভিজ্ঞতা ও বিশদ জ্ঞান রয়েছে, যা বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের জন্য অমূল্য সহায়তা হতে পারে।’
মাহবুব আরও বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি থাকায় তারা বাজার দখল করছে। বাংলাদেশি পণ্য ৩০ শতাংশ শুল্ক দিয়ে টিকে থাকা কঠিন।’
পিনাকল ফুডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম ভূঁইয়া বলেন, ‘আসিয়ান অঞ্চলটি হালাল খাদ্য ও পানীয় বাজারে বিশাল সম্ভাবনাময়, বিশেষ করে মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া। এই সুযোগ কাজে লাগাতে হলে বাংলাদেশকে সনদপ্রাপ্তি ও হালাল সার্টিফিকেশন নিশ্চিত করার দিকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। পিনাকাল ফুডস মালয়েশিয়ায় প্রাণপণ্যের একমাত্র সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের মানসম্মত খাদ্য ও পানীয় পণ্য উৎপাদিত হয়, কিন্তু সঠিক আন্তর্জাতিক সার্টিফিকেশন ও হালাল সনদের অভাবে অনেক উৎপাদক এসব পণ্য রপ্তানি করতে পারছেন না। ফলে একটি সম্ভাবনাময় বাজার হাতছাড়া হচ্ছে। এ সমস্যা সমাধানে সরকারকে দ্রুত ও কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।’
একটি কেন্দ্রীয় হালাল সার্টিফিকেশন অথোরিটি গঠন করা, রপ্তানিমুখী শিল্পগুলোর জন্য সনদপ্রাপ্তি প্রক্রিয়া সহজ ও সময়সাশ্রয়ী করা, আন্তর্জাতিক মান অনুসারে প্রশিক্ষণ ও অবকাঠামো উন্নয়ন করা জরুরি বলে জানান তিনি।
সেলিম বলেন, ‘ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য সার্টিফিকেশন খরচে সহায়তা বা ভর্তুকি দিতে হবে। যদি এসব উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাহলে বাংলাদেশ হালাল খাদ্য ও পানীয় রপ্তানিতে আসিয়ান অঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করতে পারবে। সরকার ও বেসরকারি খাতের যৌথ প্রচেষ্টায় এ সুযোগ কাজে লাগানো এখন সময়ের দাবি।’
বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হলে আগামী তিন থেকে পাঁচ বছরের মধ্যে রপ্তানি আয় উল্লেখযোগ্যহারে বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার (উপ-হাইকমিশনার) মোসাম্মাত শাহানারা মনিকা বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় আমাদের বাজার সম্ভাবনা প্রচুর, কিন্তু শুল্ক ও বিধি-নিষেধের সহজীকরণ ছাড়া টিকে থাকা কঠিন। এফটিএ নিয়ে আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে। ২০২৬ সালের মাঝামাঝি আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হতে পারে।’
শাহানারা মনিকা আরও বলেন, ‘প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রপ্তানি বাড়াতে হলে এফটিএর বিকল্প নেই। তবে পণ্যের পাশাপাশি সেবা খাতের মাধ্যমেও বাণিজ্য ঘাটতি পূরণের সুযোগ রয়েছে।’
বাংলাদেশের পণ্যের মানোন্নয়ন ও প্রযুক্তিগত আধুনিকায়নের জন্য বিদেশি বিনিয়োগ অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন মাসরুর রিয়াজ। তিনি বলেন, ‘এ লক্ষ্যে মালয়েশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা গড়ে তোলা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ দেশটি একটি বড় আঞ্চলিক অর্থনৈতিক শক্তি এবং বাংলাদেশের সঙ্গে সংস্কৃতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের সঙ্গে বেশ কিছু মিল রয়েছে। মালয়েশিয়ার উন্নত প্রযুক্তি, উৎপাদন দক্ষতা এবং আন্তর্জাতিক মান অনুসরণের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশকে পণ্য ও সেবার গুণগত মানোন্নয়নে সহায়তা করতে পারে।’
এটি বাস্তবায়নের জন্য আমাদের মালয়েশিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা, বিনিয়োগ চুক্তি ও বাণিজ্য চুক্তি সইয়ের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। পাশাপাশি, প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং মানোন্নয়নে প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা পাওয়ার জন্য সক্রিয় কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাতে হবে বলে মনে করেন এ অর্থনীতিবিদ।
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান বলেন, মালয়েশিয়ার মতো অংশীদারদের সঙ্গে কার্যকর সংযোগ গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি, যাতে আসিয়ান বাজারে বাংলাদেশের প্রবেশাধিকার ও অবস্থান সুদৃঢ় করা যায়। এছাড়াও বন্দর ও লজিস্টিক অবকাঠামো উন্নয়ন জরুরি। পাশাপাশি বাজার গবেষণা ও পণ্য উদ্ভাবন কার্যক্রম আরও জোরদার করতে হবে। আসিয়ান দেশগুলোর ভোক্তাদের চাহিদা, রুচি ও মূল্য সংবেদনশীলতা বুঝে পণ্য ডিজাইন, ব্র্যান্ডিং এবং বিপণন কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।’
আইএইচও/এএসএ/এমএফএ/এমএস