ক্ষতিপূরণসহ সার্ভিস চালুর দাবি অগ্রণী ব্যাংক এজেন্টদের
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন অগ্রণী ব্যাংক এজেন্ট মালিকরা
হঠাৎ করে অগ্রণী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা বন্ধ করে দেওয়ায় সারাদেশে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন এজেন্ট মালিকরা। ক্ষতিপূরণসহ দ্রুত সেবা চালুর দাবি জানিয়ে এজেন্ট ঐক্য পরিষদ বুধবার (৩ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংগঠনের আহ্বায়ক মো. আবু সাইদের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনিরুল ইসলাম, আসেকে রাসুল, প্রকৌশলী মেজবাহ, সাহিদা আক্তার, নাসরিন সুলতানা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ২০ জুন ২০২৫ কোনো ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংক তাদের এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা বন্ধ করে দেয়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ১০ লাখ ৫০ হাজার গ্রাহক ও পাঁচ লাখ অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবহারকারী। বিশেষ করে ভাতাভোগী, কৃষক, শ্রমিক, প্রবাসী এবং রেমিট্যান্স গ্রহণকারীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
‘২০১৬ সাল থেকে অগ্রণী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা পরিচালিত হলেও হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ৫৬৭টি এজেন্ট আউটলেট এবং প্রায় তিন হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। এজেন্ট মালিকদের দাবি-এই সেবায় কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ আজ ঝুঁকির মুখে।’
এ জেড ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আবু সাইদ বলেন, দীর্ঘদিনের বকেয়া বিল পরিশোধ এবং সার্ভার চালুর দাবিতে ২৪ নভেম্বর থেকে টানা দশ দিন ধরে অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে আমরণ অবস্থান করছেন এজেন্ট মালিকরা। এটি তাদের পঞ্চম দফা আন্দোলন।
সংবাদ সম্মেলনে তিন দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো-
১. অনতিবিলম্বে সব বকেয়া পরিশোধ ও ক্ষতিপূরণ দিয়ে এজেন্ট সেবা চালু করতে হবে। হাইকোর্টের আদেশ দ্রুত বাস্তবায়ন এবং আপিল বিভাগে করা আপত্তি প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা।
২. নারী ও তরুণ উদ্যোক্তাদের দুর্দশার জন্য দায়ী চেয়ারম্যানের পদত্যাগ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৩. চলমান আরবিট্রেশন মামলা বারবার পেছানো বন্ধ করে দ্রুত নিষ্পত্তি করতে হবে।
এজেন্ট ঐক্য পরিষদ বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছেও এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা পুনরায় চালু করার জন্য অনুরোধ জানান তারা। আহ্বায়ক আবু সাইদ অভিযোগ করেন, প্রতিটি আউটলেট চালাতে মাসে ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা খরচ হয়। সেবা বন্ধ থাকায় এখন এই ব্যয় আমাদের ব্যক্তিগত অর্থ থেকে বহন করতে হচ্ছে। আমরা উদ্যোক্তারা নিঃস্ব হয়ে পথের ভিখারি হয়ে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, ব্যাংকের এমডি বা চেয়ারম্যান কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে গেলে তারা নাকি জানিয়ে দেন, ‘এজেন্ট উদ্যোক্তারা গেটে মারা গেলেও সমাধান নেই।’ ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও জিএম রাউফা হক সফটওয়্যার আপগ্রেড করে নতুনভাবে চুক্তি করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন তারা সেই প্রতিশ্রুতি অস্বীকার করছেন। ক্ষমতাবান কিছু কর্মকর্তা ব্যক্তিগত স্বার্থে সফল একটি সেবা নেটওয়ার্ক ধ্বংস করছেন।
সংগঠনের নেতারা বলেন, সারাদেশের নারী ও তরুণ গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। আমাদের উদ্যোগ, বিনিয়োগ ও স্বপ্ন আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এই অসাধু চক্রের দ্রুত বিচার চাই।
ইএআর/এমআরএম/জেআইএম