জাতীয় নির্বাচন
রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে সাংস্কৃতিক ইশতেহার চাইলেন শিল্পীরা
হামিন আহমেদ, জিয়াউর রহমান ও জন কবির
জাতীয় নির্বাচন সামনে। দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন যখন নানামুখী প্রতিশ্রুতি, উন্নয়ন পরিকল্পনা আর নানা অঙ্গীকারে ব্যস্ত, ঠিক তখনই সংগীতজগতের সামনে ছুঁড়ে দেওয়া হলো এক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সংস্কৃতি ও সংগীতচর্চায় রাজনৈতিক দলগুলোর পরিকল্পনা কী?
এই প্রশ্ন তুলেছেন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘মাইলস’-এর নন্দিত সদস্য হামিন আহমেদ। তিনি নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্টে লেখেন, দেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন খাতে পরিকল্পনার কথা জানালেও সংগীত ও সংস্কৃতি নিয়ে কখনও কোনো দলই প্রকাশ্যে ইশতেহার দেয়নি। অথচ একটি জাতির মানসিক বিকাশ, পরিচয়, মানবিকতা ও প্রজন্ম গঠনে সংস্কৃতি বিশেষত সংগীত বড় ভূমিকা রাখে। তাই আসন্ন নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে হামিন আহমেদ জানতে চান, ‘সংগীতের ভবিষ্যৎ নিয়ে আপনাদের পরিকল্পনা কী?’
আরও পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্র থেকে হঠাৎ যে কারণে সৌদি গেলেন জায়েদ খান
শাকিব খান ছাড়া কেউ আগ্রহী নন, তখন আদরকে নিয়ে চ্যালেঞ্জ
হামিন আহমেদের এই পোস্ট ভাইরাল হতেই সংগীতাঙ্গনে শুরু হয় আলোচনার ঝড়। দেশের শীর্ষ শিল্পী, ব্যান্ডশিল্পী ও সংগীতপ্রেমীরা পোস্টটি শেয়ার করে নিজেদের সমর্থন জানাচ্ছেন। শিরোনামহীন ব্যান্ডের সদস্য জিয়াউর রহমান, জনপ্রিয় গায়ক ও অভিনেতা জন কবিরসহ বহু শিল্পী লিখেছেন বাংলাদেশের সংগীতশিল্প এত দূর এসেছে শিল্পীদের প্রচেষ্টা, শ্রোতাদের ভালোবাসা আর সীমাহীন আত্মত্যাগে। কিন্তু নীতিগত সহযোগিতা বা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাব সবসময়ই শিল্পীদের পিছিয়ে দেয়।
শিরোনামহীনের জিয়া ফেসবুকে হামিন আহমেদের পোস্টটি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘আপনাদের পরিকল্পনা ঘোষণা করুন। দ্বিধা ঝেড়ে ফেলার এখনই উপযুক্ত সময়। আপনাদের দল ক্ষমতায় এলে সংগীতের পথচলায় আপনাদের পরিকল্পিত রোডম্যাপ কি? আমরা মিউজিসিয়ান, মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি কর্মী, সাউন্ড ইন্ডাস্ট্রি কর্মী, অডিও ভিজ্যুয়াল প্রেজেন্টেশন ইন্ডাস্ট্রি কর্মী, মাঠ, মঞ্চ শ্রমিক এবং সর্বোপরি সংগীতপ্রেমী ভক্ত-শ্রোতারা আপনাদের রোডম্যাপ জানতে চাই যাতে আমাদের রোডম্যাপের সাথে মিল এবং অমিল সম্পর্কে আমাদের জানায় ভুল না থাকে।’
শিল্পীদের মতে, প্রযুক্তির যুগে সংগীতশিল্পকে বাঁচাতে প্রয়োজন আধুনিক কপিরাইট ব্যবস্থা, সংগীতশিল্পীদের স্বাস্থ্য ও বীমা সুরক্ষা, শিল্পীদের জন্য কর্মসংস্থানমুখী পরিকল্পনা, দেশের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আধুনিকায়ন এবং বিশ্ববাজারে বাংলা গান তুলে ধরার রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ।
জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসার এই সময়ে সাংস্কৃতিক ইশতেহার নিয়ে নতুন করে যে আলোচনা শুরু হলো, তা নিঃসন্দেহে দেশের সংগীতশিল্পীদের জন্য ইতিবাচক একটি পরিবর্তনের বার্তা। এখন নজর রাজনৈতিক দলগুলোর দিকে, তারা কি এবার সংগীতকে প্রাপ্য গুরুত্ব দেবে? দলগুলো কি ভাবছে সেটা এখন জানতে চান সংস্কৃতিকর্মীরা।
এলআইএ