এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কী, খরচ কেমন?
এয়ার অ্যাম্বুলেন্স হলো বিশেষায়িত উড়োজাহাজ
এয়ার অ্যাম্বুলেন্স, বিশেষায়িত উড়োজাহাজ (ফিক্সড-উইং প্লেন) বা হেলিকপ্টার (রোটারি-উইং) পরিষেবা, যা গুরুতর অসুস্থ বা আঘাতপ্রাপ্ত রোগীদের জীবন রক্ষাকারী জরুরি চিকিৎসা প্রদানের পাশাপাশি দ্রুত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরের জন্য ব্যবহৃত হয়।
সাধারণ সড়কপথে পরিবহন যেখানে দীর্ঘ সময় নিতে পারে এবং রোগীর অবস্থার অবনতি ঘটাতে পারে, সেখানে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স দীর্ঘ দূরত্বকে দ্রুত অতিক্রম করে সময় বাঁচায়। এই পরিষেবাটি সব অত্যাবশ্যকীয় জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম, যেমন ভেন্টিলেটর, ডিফিব্রিলেটর এবং আইসিইউ সরঞ্জাম দিয়ে সজ্জিত থাকে।
এর মূল উদ্দেশ্য হলো প্রত্যন্ত বা দুর্গম এলাকা থেকে, কিংবা আন্তর্জাতিকভাবে, দ্রুততম সময়ে রোগীকে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া। এই প্রক্রিয়ায় একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও প্যারামেডিক দল সার্বক্ষণিক রোগীর পর্যবেক্ষণ ও চিকিৎসা নিশ্চিত করেন।

এয়ার অ্যাম্বুলেন্স দুই ধরনের হয়ে থাকে। যেমন-
১. ফিক্সড-উইং ফ্লাইট অ্যাম্বুলেন্স
ফিক্সড-উইং এয়ার অ্যাম্বুলেন্স বলতে সাধারণত জেট বা টার্বোপ্রপ বিমানগুলোকে বোঝায়। এই বিমানগুলো উচ্চ গতিতে এবং দীর্ঘ দূরত্বের পথে উড্ডয়নের জন্য উপযুক্ত। আন্তঃশহর বা আন্তর্জাতিক রুটে যখন রোগীকে কয়েকশ বা হাজার কিলোমিটার দূরে স্থানান্তরের প্রয়োজন হয়, তখন এই পরিষেবাটি ব্যবহার করা হয়। এর প্রধান সুবিধা হলো, এদের কেবিন সাধারণত বড় হয়, যেখানে উন্নত এবং পূর্ণাঙ্গ আইসিইউ সেটআপ স্থাপন করা সম্ভব। দূরপাল্লার ফ্লাইটে রোগীদের আরামদায়ক এবং স্থিতিশীল পরিবেশে চিকিৎসা প্রদানের জন্য এই ধরনের বিমান অত্যন্ত কার্যকর।
২. রোটারি-ফ্লাইট অ্যাম্বুলেন্স
রোটারি-ফ্লাইট অ্যাম্বুলেন্স বা হেলিকপ্টার অ্যাম্বুলেন্সগুলো স্বল্প দূরত্বে দ্রুত স্থানান্তরের জন্য ব্যবহৃত হয়। এদের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, এগুলো দ্রুত উড্ডয়ন ও অবতরণ করতে পারে এবং এর জন্য বড় রানওয়ের প্রয়োজন হয় না; বরং হাসপাতাল প্রাঙ্গণ, খোলা মাঠ বা জরুরি ল্যান্ডিং প্যাড ব্যবহার করতে পারে। প্রত্যন্ত বা দুর্গম এলাকা থেকে রোগীকে উদ্ধার করে দ্রুত কাছের একটি বিশেষায়িত হাসপাতালে পৌঁছানোর জন্য হেলিকপ্টারই সবচেয়ে কার্যকর মাধ্যম। এগুলো মূলত শহর বা দেশের অভ্যন্তরে জরুরি ‘বেড-টু-বেড’ স্থানান্তরের সুবিধা প্রদান করে।

এয়ার অ্যাম্বুলেন্স খরচ কেমন?
এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের খরচ একটি প্রিমিয়াম পরিষেবা হওয়ায় বেশ ব্যয়বহুল। এই খরচ কয়েক লাখ পর্যন্ত হতে পারে। তবে তা একাধিক কারণের ওপর নির্ভর করে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারক হলো স্থানান্তরের দূরত্ব এবং রুটের প্রকৃতি যেমন এটি অভ্যন্তরীণ নাকি আন্তর্জাতিক স্থানান্তর। দ্বিতীয়ত, বিমানের প্রকারভেদ (জেট বনাম হেলিকপ্টার) খরচের ওপর বড় প্রভাব ফেলে।
এছাড়াও রোগীর চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; যেমন রোগীর যদি ভেন্টিলেটর বা ইসিএমও-এর মতো বিশেষ যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয়, তবে বিশেষায়িত মেডিকেল টিমের কারণে খরচ বৃদ্ধি পায়। বিমানবন্দর ব্যবহারের ফি, ল্যান্ডিং চার্জ, এবং অন্যান্য লজিস্টিকস খরচও মোট ব্যয়ের অন্তর্ভুক্ত থাকে। এই সব কারণের ভিত্তিতে চূড়ান্ত মূল্য পরিবর্তিত হয়।
আরও পড়ুন
অনলাইন জুয়া সময়ের নীরব ঘাতক
পাঁচ শতাব্দীর ভূকম্পনের ইতিহাস
কেএসকে/জেআইএম