পাকিস্তান-সৌদি আরব প্রতিরক্ষা চুক্তিতে দুশ্চিন্তায় ভারত, কী বলছে মোদী সরকার?
শাহবাজ শরীফ ও যুবরাজ সালমান এবং নরেন্দ্র মোদী/ ছবি: সৌদি গ্যাজেট, পিএমও ইন্ডিয়া
পাকিস্তান-সৌদি আরব প্রতিরক্ষা চুক্তিতে দুশ্চিন্তায় ভারত। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ঐতিহাসিক এই ‘কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি’তে সই করেছে মুসলিম দেশ দুটি। চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশের যে কোনো একটির ওপর আক্রমণ হলে সেটিকে অন্য দেশের ওপর আক্রমণ হিসেবে গণ্য করা হবে। এই চুক্তি নয়াদিল্লির জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ সৌদি যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানের আমন্ত্রণে রিয়াদ সফরে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই চুক্তিতে সই করেন। চুক্তির পর যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রায় আট দশকের ঐতিহাসিক সম্পর্ক, ভ্রাতৃত্ব, ইসলামী সংহতি ও কৌশলগত স্বার্থের ভিত্তিতে এই প্রতিরক্ষা চুক্তি দুই দেশের নিরাপত্তা বাড়াবে এবং যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যৌথ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
আরও পড়ুন>>
পাকিস্তান-সৌদি আরব চুক্তির প্রধান দিক
- চুক্তিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, এক দেশের ওপর হামলা হলে সেটি উভয়ের ওপর হামলা হিসেবে ধরা হবে।
- পাকিস্তান একমাত্র মুসলিম দেশ যাদের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। প্রতিরক্ষা চুক্তি মোতাবেক, সৌদি আরব পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সুযোগ পাবে।
- এই চুক্তির মাধ্যমে পাকিস্তান-সৌদি আরবের মধ্যকার এতদিনের অনানুষ্ঠানিক সহযোগিতা এখন গঠনমূলক সামরিক জোটে পরিণত হয়েছে।
ভারতের জন্য এর প্রভাব
এই চুক্তিকে ভারতের জন্য উদ্বেগজনক হিসেবে দেখা হচ্ছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে,
- পাকিস্তান এখন যেকোনো আঞ্চলিক উত্তেজনায় সৌদি আরবকে পাশে টানতে পারবে, বিশেষ করে কাশ্মীর ইস্যুতে।
- রিয়াদ অতীতে একাধিকবার ইসলামাবাদকে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করেছে। এবার প্রতিরক্ষার গ্যারান্টিও পেলো পাকিস্তান।
তবে ভারত-সৌদি আরব সম্পর্কও সুসম্পর্কপূর্ণ। সৌদি আরব ভারতের পঞ্চম বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার, আর ভারত সৌদি আরবের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার।
ভারতের প্রতিক্রিয়া
পাকিস্তান-সৌদি প্রতিরক্ষা চুক্তির প্রতিক্রিয়ায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, আমরা পাকিস্তান-সৌদি আরব কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তি সই হওয়ার খবর দেখেছি। ভারত সরকার আগেই জানতো যে, দুই দেশের দীর্ঘদিনের সহযোগিতাকে আনুষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে। আমরা এই চুক্তির প্রভাব আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার ওপর কী হতে পারে, তা পর্যালোচনা করবো। ভারতের জাতীয় স্বার্থরক্ষা এবং সবক্ষেত্রে সামগ্রিক জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সূত্র: ফ্রি প্রেস জার্নাল
কেএএ/