ইসলামবিদ্বেষ-অশ্লীলতার অভিযোগ
নারী সংস্কার কমিশনের প্রধানকে আইনের আওতায় আনতে লিগ্যাল নোটিশ

শরীয়াহ্ আইনে নারীদের অধিকার থাকার পরও তাদের বিষয়ে সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন নারীদের প্রতি অসম্মানজনক, ইসলামবিদ্বেষী, অশ্লীল ও কাল্পনিক প্রতিবেদন এবং সুপারিশমালা প্রকাশ করায় তা বাতিল করতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। নোটিশে নারী সংস্কার কমিশনের প্রধান ও অন্যদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে।
একই সঙ্গে কমিশন বিলুপ্ত করে নতুন করে নারীদের সংস্কার কমিশন গঠনেরও দাবি জানানো হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনে প্রদত্ত সব বেতন রাষ্ট্রীয় কোষাগারে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে লিগ্যাল নোটিশে। লিগ্যাল নোটিশে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।
- আরও পড়ুন
- নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন
- নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের ৪৩৩ সুপারিশ
- জাহাঙ্গীর-তাসনিম জারার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে লিগ্যাল নোটিশ
রোববার (২৭ এপ্রিল) জনস্বার্থে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কাউসার উল জিহাদ সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি এ লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। নোটিশের বিষয়টি আইনজীবী নিজেই জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
লিগ্যাল নোটিশে প্রতিবেদনকে নারীদের প্রতি অসম্মানজনক, ইসলামবিদ্বেষী, অশ্লীল উল্লেখ করে তা অবিলম্বে বাতিল এবং এই কমিশনে প্রদত্ত সকল ব্যয় রাষ্ট্রীয় কোষাগারে প্রদান ও উক্ত কমিশন বিলুপ্ত করে নতুন প্রতিনিধিত্বশীল নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠনের দাবি জানানো হয়েছে।
নোটিশে বলা হয়, প্রতিবেদনে অত্যন্ত সুকৌশলে এবং ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ইসলামি আইন ও পারিবারিক বিধানকে হেয় এবং নারী বৈষম্যের হাতিয়ার হিসেবে দেখানো হয়েছে। এছাড়া চরম ধৃষ্টতাপূর্ণভাবে পতিতাবৃত্তিকে প্রতিষ্ঠা করার কুপ্রয়াস চালানো হয়েছে। ইসলাম বিদ্বেষ ফুটে উঠেছে এই প্রতিবেদনের পাতায় পাতায়। এতে চূড়ান্তভাবে ইসলামকে অবমাননা করা হয়েছে। বিবাহবিচ্ছেদ এবং ভরণপোষণের ক্ষেত্রে ধর্মীয় আইন অনুসরণ বাধ্যতামূলক হওয়ায় নারী বৈষম্যের শিকার হন– এই বক্তব্য স্পষ্টত জনগণের ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত হানার মতো অপরাধ। ইসলামি পারিবারিক আইন বাদ দিয়ে সেকুলার আইন চাচ্ছে এই কমিশন। সম্পত্তিতে নারীর অংশ ৫০-৫০ করার সুপারিশ করা হয়েছে, যা আল-কুরাআনের বর্ণিত বিধানের সুস্পস্ট লঙ্ঘন।
নোটিশে আরও বলা হয়, পতিতাবৃত্তিকে সামাজিক স্বীকৃতি এবং অপরাধ হিসেবে না দেখার মতো ঘৃণ্য সুপারিশ করেছে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন। যৌনকর্মীদের স্বীকৃতি, সুরক্ষা ও সুবিধা প্রদান, যৌনকর্মীদের এবং যৌন পেশাকে অপরাধ হিসেবে না দেখা, যৌনকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া, শ্রম আইন সংশোধন করে যৌনকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। মূলত নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন পরিণত হয়েছে যৌনকর্মীদের তথা পতিতাদের আত্মকথারূপে।
- আরও পড়ুন
- নারী সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রত্যাখ্যান মহিলা জামায়াতের
- নারী সংস্কার কমিশন বাতিল করতে হবে: মামুনুল হক
বিবাহের বিষয়ে নোটিশে বলা হয়, বিবাহের মতো পারিবারিক পবিত্র বন্ধনকে হেয় এবং বাজেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে প্রতিবেদনে। বিয়ের বাইরে যেকোনো যৌন সম্পর্ককে পাপ হিসেবে দেখা হয় বলেই বিবাহের মতো পবিত্র বন্ধনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। একটি সুস্থ সমাজকে অসভ্য বর্বর করার জন্য এ থেকে আর অশ্রাব্য বক্তব্য আর হতে পারে না। সমাজব্যবস্থাকে ধ্বংস করার জন্য যাবতীয় যা করা প্রয়োজন সবই আছে এ প্রতিবেদনে।
নোটিশে আরও বলা হয়, কমিশনের প্রধানসহ অন্যদের এহেন পতিতাবৃত্তিকে বৈধতা প্রদানকারী প্রতিবেদন প্রকাশে বাংলাদেশের আপামরজনগণ ক্ষুব্ধ এবং লজ্জিত। জুলাই বিপ্লবের মহান উদ্দ্যেশ্যকে কলঙ্কিত করেছে এ প্রতিবেদন। জুলাই বিপ্লবে এদেশের মা–বোনদের, ছাত্রীদের ব্যপক উপস্থিতি এবং ভূমিকা কোনোরূপ আলোচনায় আনেনি এ কমিশন।
নারীপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও মানবাধিকারকর্মী শিরীন পারভিন হককে প্রধান করে গত বছরের নভেম্বরে ১০ সদস্যের নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ১৯ এপ্রিল বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় শিরীন পারভীন হকের নেতৃত্ব কমিশন সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে সংস্কার প্রস্তাবনার প্রতিবেদন জমা দেয়।
এফএইচ/এমকেআর/এমএস
সর্বশেষ - আইন-আদালত
- ১ স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা করলেন সাবেক মডেল হ্যাপী
- ২ অসীম-অপু উকিল দম্পতির ১৪ ফ্ল্যাট ও ৫ দোকান দেখভালে রিসিভার
- ৩ বজ্রপাতরোধে পদক্ষেপ-হতাহতদের আর্থিক সহযোগিতার নির্দেশনা চেয়ে রিট
- ৪ ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে জাতিসংঘের রিপোর্ট সংরক্ষণে হাইকোর্টের রুল
- ৫ সাম্যসহ ৩ খুনের বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনি নোটিশ