ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

ট্রেনে নারীদের কামরা বরাদ্দে হাইকোর্টে রুল শুনানির আদেশ রোববার

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:০৩ এএম, ১৭ জুলাই ২০২৫

ট্রেন ভ্রমণে নারীদের জন্য থাকতে হবে আলাদা কামরা। ট্রেনটি যদি ৫০ কিলোমিটারের বেশি চলে তাহলে কামরার সঙ্গে থাকবে শৌচাগার। বিনা অনুমতিতে কেউ কামরায় প্রবেশ করলে গুনতে হবে জরিমানা। বাংলাদেশ রেলওয়ের আইনটি ব্রিটিশ আমলের। তবে ১০০ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত নারীদের জন্য আলাদা কামরার ব্যবস্থা করেনি বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বা সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। বিষয়টি নিয়ে দেশের উচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ালেও তাতে এখন পর্যন্ত মেলেনি কোনো সমাধান।

নারীদের নিরাপদ ভ্রমণে ট্রেনে আলাদা কামরা বরাদ্দ বাস্তবায়ন চেয়ে এক বছর আগে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। পরে যাত্রীবাহী প্রতিটি ট্রেনে নারী যাত্রীদের জন্য নির্দিষ্ট কামরা বরাদ্দ রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন উচ্চ আদালত। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই রুলের নিষ্পত্তি হয়নি। ট্রেনে বরাদ্দ হয়নি নারীদের জন্য আলাদা কামরা।

তবে চলতি মাসের ১ জুলাই যাত্রীবাহী প্রতিটি ট্রেনে নারীদের জন্য নির্দিষ্ট কামরা এবং শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের নিরাপদে রেল ভ্রমণের জন্য আসন বরাদ্দের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে হাইকোর্টে জারি করা রুল শুনানির জন্য উপস্থাপন করেন রিটকারী আইনজীবী। এরপর আদালত ওই রিটের শুনানি করবেন বলে জানান।

বুধবার (১৬ জুলাই) ওই রুল শুনানির জন্য হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের ৮৫৭ ক্রমিকে ছিল। এরপর রিটের বিষয়ে জারি করা রুল শুনানির জন্য উপস্থাপন করে আদালতে নজরে আনা হলে আগামী রোবাবার (২০ জুলাই) দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট।

বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি ফয়েজ আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ সংক্রান্ত বিষয়ে আদেশ ও শুনানির দিন ঠিক করেন। বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন রিটকারী আইনজীবী আজমল হোসেন খোকন।

রেলওয়ে সূত্র জানা গেছে, ১৮৯০ সালের রেলওয়ে আইনের ৬৪ ধারা অনুসারে প্রতিটি ট্রেনে নারীদের জন্য নির্দিষ্ট কামরা থাকার কথা। ৫০ মাইলের বেশি ভ্রমণকারী ট্রেনের ক্ষেত্রে ওই কামরার সঙ্গে একটি শৌচাগার সংযুক্ত থাকবে বলা আছে। এছাড়া সেখানে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করলে জরিমানা আরোপের কথা উল্লেখ আছে ১১৯ ধারায়। ওই দুই ধারার বাস্তবায়ন না হওয়ায় ২০২১ সালের ১৩ জানুয়ারি জনস্বার্থে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মমতাজ পারভীন। এরপর রিটকারী ২৪ ফেব্রুয়ারি একটি সম্পূরক আবেদন করেন।

পরে ওই বছরের ১০ মার্চ আইনের বিধান অনুযায়ী যাত্রীবাহী প্রতিটি ট্রেনে নারী যাত্রীদের জন্য নির্দিষ্ট কামরা বরাদ্দ রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দেন হাইকোর্ট। একই বেঞ্চ ট্রেনের প্রতিটি কামরায় শিশু, প্রতিবন্ধী ও বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য কিছু আসন সংরক্ষণে পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে সে বিষয়েও জানতে চান।

রিটকারী আইনজীবী আজমল হোসেন খোকন ২০২০ সালের ১৩ অক্টোবর নারীদের জন্য আলাদা কামরা বরাদ্দ চেয়ে রেলওয়েকে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার নোটিশের কোনো জবাব দেয়নি রেল কর্তৃপক্ষ।

জানতে চাইলে আইনজীবী আজমল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ট্রেনে ভ্রমণ অত্যন্ত আরামদায়ক। কিন্তু রাতে কোনো নারী একা ট্রেনে ভ্রমণ করতে চাইলে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। দিনের বেলা নারীকে অনেক ভিড় ঠেলে উঠতে হয়। এছাড়া যেসব নারী দুধের শিশু নিয়ে ট্রেনে ওঠেন, তাদেরও একটি বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। প্রতিটি ট্রেনে নারীদের জন্য আলাদা একটি কামরার কথা বলা থাকলেও সেটি কোনো ট্রেনে বাস্তবায়ন হয়নি।

তিনি বলেন, রুলটি উচ্চ আদালতের কার্যতালিকায় শুনানির অপেক্ষায় আছে। শিগগির চূড়ান্ত শুনানি ও ইতিবাচক রায় আসবে বলে আশা করি। তখন দিন-রাত নারীরা তাদের কামরায় নির্দ্বিধায় উঠতে পারবেন। এতে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকিও কমবে। এছাড়া ট্রেনে ভ্রমণের সময় যদি নামাজের সময় হয়, তখন তারা নিয়মিত সেখানে নামাজও আদায় করতে পারবেন।

এফএইচ/বিএ/এএসএম