বাজার থেকে কিটক্যাট চকলেটের লট অপসারণের নির্দেশ
আগামী ২১ জানুয়ারির মধ্যে বাজার থেকে কিটক্যাট চকলেটের লট অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন নিরাপদ খাদ্য আদালত। সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) এই আদেশ দেওয়া হয়।
আদেশে আদালত সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে ২০২৬ সালের ২১ জানুয়ারির মধ্যে বিতর্কিত নেসলে কিটক্যাট চকলেট লট বাজার থেকে অপসারণের নির্দেশ দেন। বাদীপক্ষের দাখিলি দরখাস্ত মতে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এ আদেশ বহাল থাকবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক কামরুল হাসান আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, বাজার থেকে কিটক্যাট চকলেটের লট অপসারণ চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছিল আজ। পরে আদালত কিটক্যাট চকলেটের লট অপসারণের নির্দেশ দেন।
ডিএসসিসির নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শকের আবেদনে বলা হয়, ‘নেসলে বাংলাদেশ কিটক্যাট চকলেট একটি অনিবন্ধিত, অননুমোদিত, অস্পষ্ট এবং নিম্নমানের পণ্য; যা অনিরাপদ, ভেজাল এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জনগণের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে, ভেজাল ও অনিরাপদ খাদ্য নিয়ন্ত্রণ করতে এবং খাদ্য ব্যবসায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে; আদালতকে নেসলে বাংলাদেশকে বাজার থেকে কিটক্যাট চকোলেট প্রত্যাহার এবং ধ্বংস করার নির্দেশ দেওয়ার জন্য এবং বিএসটিআই লাইসেন্স এবং ছাড়পত্র না পাওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশে নেসলে কিটক্যাট চকলেটের আমদানি, বিপণন এবং বিক্রয় সাময়িকভাবে স্থগিত করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।’
গত ১৪ নভেম্বর নিম্নমানের কিটক্যাট চকলেট বাজারজাতের দায়ে নেসলে বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিপাল আবে বিক্রমা ও পাবলিক পলিসি ম্যানেজার রিয়াসাদ জামানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন নিরাপদ খাদ্য আদালত। তখন তাদের গ্রেফতারে মামলার আবেদনটি করেছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক (স্যানিটারি ইন্সপেক্টর) কামরুল হাসান। আজ ১৫ ডিসেম্বর সেই মামলায় পরবর্তী শুনানির তারিখ ছিল।
এদিকে নিম্নমানের কিটক্যাট চকলেটের বিরুদ্ধে আগে থেকেই আরেকটি মামলা চলমান। ওই মামলায় কিটক্যাটের আমদানিকারক সুমাইয়া এন্টারপ্রাইজের (৭ মকিম কাটারা, সাখাওয়াত ম্যানশন, চকবাজার ঢাকা) মালিক মো. মোজাম্মেল হোসাইনকে আসামি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে নিরাপদ খাদ্য আইনে মামলা করা হয়েছে।
ওই মামলার তদন্তে নেসলে বাংলাদেশের আমদানি করা কিটক্যাট চকলেট ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়। সেই পরীক্ষায়ও নিম্নমানের বলে রিপোর্ট এসেছে।
ল্যাবরেটরির রিপোর্টে বলা হয়েছে, চকলেটে দুধের কঠিন অংশ ১২ থেকে ১৪ শতাংশ অথবা তার ঊর্ধ্বে হওয়ার কথা, সেখানে ল্যাব পরীক্ষায় মাত্র ৯ দশমিক ৩১ শতাংশ পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে দুগ্ধচর্বির মান ২ দশমিক ৫ থেকে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ কিংবা তার বেশি থাকার কথা। কিন্তু রাসায়নিক পরীক্ষায় মাত্র ১ দশমিক ২৩ শতাংশ পাওয়া গেছে। বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য খাদ্য পরীক্ষাগার এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এমন রিপোর্ট দিয়েছে।
পরে ওই রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন স্যানিটারি ইন্সপেক্টর কামরুল হাসান। মামলার শুনানি শেষে নেসলে বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিপাল আবে বিক্রমা এবং পাবলিক পলিসি ম্যানেজার রিয়াসাদ জামানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ দেওয়া হয়েছিল। এখন তারা জামিনে আছেন।
এমএমএ/বিএ