ঝিনাইদহ পৌর নির্বাচন: আ’লীগের খালেকের প্রার্থিতা ফেরাতে রুল
ফাইল ছবি
ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আব্দুল খালেকের প্রার্থিতা বাতিল কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না সেটি জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি ও আদেশের জন্য বুধবার (৮ জুন) দিন ঠিক করেছেন আদালত। সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার ড. মোহাম্মদ ইয়াসিন খান আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন।
এ সংক্রান্ত রিটের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (৭ জুন) বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি কাজি জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ।
আদালতে আজ রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিরি সভাপতি ও সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মোমতাজ উদ্দিন ফকির, অ্যাডভোকেট শাহ মঞ্জুরুল হক ও এমএস সাঈদ আহমেদ রাজা। তাদের সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার হারুনুর রশিদ খান।
ইসির পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট তৌহিদুল ইসলাম। অন্যদিকে আরেক প্রার্থীর পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফিদা এম কামাল, সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মুরাদ রেজা ও অ্যাডভোকেট এবিএম ইলিয়াস কচি। এসময় নির্বাচন কমিশনের ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার ড. মোহাম্মদ ইয়াসিন খান উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ২ জুন ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচনে একাধিকবার নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আব্দুল খালেকের প্রার্থিতা বাতিল করেছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নির্বাচন কমিশনের আদেশক্রমে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় উপসচিব (নির্বাচন প্রশাসন) মো. মিজানুর রহমান গত ২ জুন তার প্রার্থীতা বাতিল করেন। প্রার্থিতা বাতিল করার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের চিঠিতে বলা হয়, যেহেতু প্রতিদ্বন্দ্বী প্রাণী হিসেবে পৌরসভা (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৫ এর বিধান লঙ্ঘন করেছেন। সেহেতু, এ ক্ষণে পৌরসভা (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৫ এর বিধি ৩২ অনুসারে নির্বাচন কমিশন ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচনের মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. আব্দুল খালেকের প্রার্থিতা বাতিল করলেন।
এতে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনঘোষিত সময়সূচি অনুসারে আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠিতব্য ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মেয়র প্রার্থী মো. আবুল খালেক ও তার সমর্থকরা মিছিল-শোভাযাত্রা করে গত ১৮ মে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদীর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালিয়েছেন, যা ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া এবং বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, আব্দুল খালেক তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদীর প্রচারে বাধা দিয়েছেন। আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের ব্যাখ্যা চাওয়ার পর তিনি ক্ষমা চান। ভবিষ্যতে নিৰ্বাচন আচরণবিধি মেনে চলবেন বলেও অঙ্গীকার করেন। এরপরও আব্দুল খালেকের সমর্থকরা বুধবার (১ জুন) কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী ও তার সমর্থকদের আক্রমণ করে আহত করেন, যা বিভিন্ন পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওতে প্রকাশ পায়।
এসব কারণে পৌরসভা (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা-২০১৫ একাধিকবার লঙ্ঘন হওয়ায় আব্দুল খালেকের মেয়র পদে প্রার্থিতা ওই বিধিমালার ৩২ অনুচ্ছেদ অনুসারে বাতিল করা হয়েছে।
আগামী ১৫ জুন ঝিনাইদহ পৌরসভার নির্বাচন। এ নির্বাচনে আব্দুল খালেক বাদে মেয়র প্রার্থী তিনজন। তারা হলেন—স্বতন্ত্রপ্রার্থী কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল, মিজানুর রহমান মাসুম এবং ইসলামী অন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মো. সিরাজুল ইসলাম
এফএইচ/ইএ/জেআইএম