সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাসকিনকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ
ফাইল ছবি
সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাসকিন আহমেদ চিশতিকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। এসময় ভারপ্রাপ্ত মেয়র (প্যানেল মেয়র) কাজি ফিরোজ হাসানকে ‘সন্ত্রাসীর মতো আচরণ করবেন না’ বলে সতর্ক করেছেন আদালত।
নির্বাচিত মেয়র ও বিএনপি নেতা তাসকিন আহমেদকে সব ক্ষমতা (চেক বই, রেজিস্ট্রার ও অন্যান্য) বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়ে ভারপ্রাপ্ত মেয়রকে উদ্দেশ করে আদালত বলেছেন, আদালতের আদেশ মান্য করুন। আদালতের আদেশ অমান্য করলে আপনার বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জরিমানা করা হবে।
আদালতের আদেশ যথাযথভাবে প্রতিপালন না করায় তলবে উপস্থিত হয়ে ভারপ্রাপ্ত মেয়র নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এরপর সোমবার (১৯ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মো. শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।
শুনানির শুরুতে এজলাসের বাইরে অবস্থান করা ভারপ্রাপ্ত মেয়র কাজি ফিরোজ হাসান বিচারকের সামনে আসতে চাননি। এরপর আইনজীবীদের সহায়তায় তাকে এজলাসে আনা হয়। তাকে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, আপনি প্যানেল মেয়র। মেয়রকে বরখাস্তের স্টে-অর্ডার আগেই পেয়েছেন। তাহলে ব্যাংকে চিঠি দিয়ে থ্রেট দিলেন কেন? ব্যাংকের সামনে ময়লার ট্রাক রেখেছিলেন, এগুলো তো ভালো কাজ না। আপনি একজন জনপ্রতিনিধি। জনপ্রতিনিধির কাজ মানুষের সেবা করা। থ্রেট দেবেন না। আপনি ব্যাংকগুলোকে সহযোগিতা করতে পারতেন।
কাজি ফিরোজ হাসান তখন আদালতের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকেন। এসময় আদালতে জানানো হয়, গত সাত মাস ধরে কর্মচারীদের বেতন আটকে রয়েছে।
আদালত বলেন, কর্মচারীদের বেতন আটকে রাখবেন না। আপনার কারণে কর্মচারীরা যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে আপনাকে হেভি ফাইন করা হবে। আপনি কোর্টের অর্ডার অমান্য করেছেন। আদালতের আদেশ অমান্য করলে শাস্তি দেওয়া হবে।
এরপর আদালত সাতক্ষীরা পৌরসভার মেয়র তাসকিন আহমেদকে সব ক্ষমতা বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দেন।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ সাইফুজ্জামান, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ। মেয়র তাসকিন আহমেদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার ইমরুল হায়দার ও অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ। সিটি ব্যাংকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার আশরাফ।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি মেয়র তাসকিন আহমেদকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে প্যানেল মেয়র-১ কে আর্থিক ক্ষমতাসহ ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব দেয়। বরখাস্তের আদেশ ও আর্থিক ক্ষমতার আদেশটি হাইকোর্ট স্থগিত করেন ১৪ ফেব্রুয়ারি।
কিন্তু তিনি জোর করে নিজেকে ভারপ্রাপ্ত মেয়র দাবি করে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। হাইকোর্টের আদেশের বিষয়টি সিটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অবগত হওয়ার পর তার সই করা কোনো ধরনের চেক বা লেনদেন পৌরসভার পক্ষ থেকে আসলে সেটিকে গ্রহণ না করায় সিটি ব্যাংক, সাতক্ষীরা শাখা কর্তৃপক্ষের প্রতি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। জানতে চাওয়া হয়, তাদের ট্রেড লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না? তাদের বিরুদ্ধে কেন ফৌজদারি মামলাসহ দুদকে কমপ্লেইন করা হবে না?
বিষয়টি সিটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আদালতের নজরে নিয়ে আসে এবং এই মামলায় অতিরিক্ত বিবাদী হওয়ার জন্য এপ্লিকেশন করে। হাইকোর্ট তাদের আবেদনটি গ্রহণ করে এবং প্যানেল মেয়র-১ কাজী ফিরোজ হাসানকে তলব করেন।
এফএইচ/এমএইচআর/জেআইএম