ছেলের বয়স ১১, মেয়ের ১৪
পিতার পরিচয় নির্ধারণে ডিএনএ টেস্টের নির্দেশ
ফাইল ছবি
বাগেরহাটের এক নারীর ছেলে সন্তানের পিতৃত্বের পরিচয় নির্ধারণ করতে ডিএনএ টেস্ট করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১১ বছর বয়সী শিশুর সঙ্গে দৈহিক সম্পর্কের জেরে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীর সন্তান সম্ভাবনার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিচারিক (নিম্ন) আদালতে ১০ বছরের সাজায় দণ্ড নিয়ে কারাগারে থাকা ছেলের উচ্চ আদালত হাইকোর্টে গড়িয়েছে। কিশোরী ওই ছেলেকে তার গর্ভজাত সন্তানকে ওই কিশোরের দাবি করে পিতৃপরিচয়ের জন্যে মামলা করেন। কিন্তু সেই অভিযোগ অস্বীকার করছে কিশোর। তাই বিচারিক আদালতের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে দণ্ড নিয়ে আপিল আবেদন করার পর ছেলে অস্বীকার করায় ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ) টেস্টের আবেদন জানান ছেলে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এ নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে অ্যাডভোকেট মো. সাইফুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, তিন বছরের ছোট শিশুর সঙ্গে প্রেমের জেরে সম্পর্ক হওয়ার পর শিশু গর্ভবর্তী হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিচারিক আদালতে (নিম্ন) বিচার শেষে অভিযুক্তকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করা হয়েছে। ওই রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল আবেদন শুনানিতে আমরা অভিযুক্ত ও তার তদবির কারকের সঙ্গে কথা বলে যেটুকু জানতে পেরেছি তাতে একটু সন্দেহের সৃষ্টি হওয়াই আমরা বাগেরহাটের ওই নারীর ছেলে সন্তানের পিতৃত্বের পরিচয় নির্ধারণ করতে ডিএনএ টেস্ট করার নির্দেশ চেয়েছিলাম। ওই আবেদন শুনানি নিয়ে ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ) টেস্টের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে মামলার আসামি শামীম মুন্সির করা আপিল আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে বৃহস্পবিার (১০ আগষ্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী সাইফুর রহমান আরও বলেন, ঘটনার সময় মামলার আসামি শামীম মুন্সির বয়স ছিল ১১ বছর। ওই সময় ভিকটিমের বয়স ছিল ১৪ বছর। সালমার বাবার নাম রুস্তম আলী ফরাজি। বাগের হাট জেলার শরণ খোলায় বাড়ি ভিকটিমের। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০০৪ সালের ১১ জানুয়ারি ভিকটিমকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করেন শামীম ফরাজী। কিন্তু বিয়ে করতে রাজি না হওয়া ২০০৪ সালের ১৯ জানুয়ারি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারা অনুযায়ী মামলা দায়ের করে ভিকটিমের পরিবার।
মামলায় শামীম মুন্সির বাবা মা বোনসহ ৬ জনকে আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের সময় আসামি ও ভিকাটিমের কারও বয়স উল্লেখ করা হয়নি। পরে বয়স নির্ধারণ করে নতুন করে মামলা করা হয়। এ মামলার বিচার শেষে আসামিকে দশ বছরের সাজা দেন আদালত। পরে জামিন নিয়ে কারামুক্ত হন শামীম। কিন্তু কখনোই শামীম শিকার করেনি তার ধর্ষণ ও ছেলের কথা।
এরপর আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন আসামি। শুনানি শেষে আদালত ভুক্তভোগী নারীর গর্ভে জন্ম নেওয়া শিশুর পিতৃপরিচয় নিশ্চিত করতে আদেশ দেন।
এফএইচ/এমআইএইচএস/জেআইএম