ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংকের কার্যক্রম নিয়ে রুল
ফাইল ছবি
সমবায় সমিতি ব্যাংকিং কোম্পানি আইনের ধারা এবং সমবায় সমিতি আইনের ধারা ভঙ্গ করে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে আসা দি ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংক লিমিটেডের কার্যক্রম কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী ১০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সমবায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ (ডিজি) সংশ্লিষ্ট ৯ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। ১০ দিন পর রুলটি জরুরি ভিত্তিতে শুনানি হবে বলেও নির্দেশনা দেন আদালত।
এ সংক্রান্ত রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার (১৪ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশিদ আলম সরকার ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান, ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন ও অ্যাডভোকেট সালাহ উদ্দিন রিগ্যান। তাদের সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট আশিকুর রহমান ও ব্যারিস্টার ইমাম হোসেন।
আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন রিটকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন ও অ্যাডভোকেট সালাহ উদ্দিন রিগ্যান।
আরও পড়ুন: ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংককে লিগ্যাল নোটিশ
সমবায় সমিতি ব্যাংকিং কোম্পানি আইনের ধারা এবং সমবায় সমিতি আইনের ধারা ভঙ্গ করে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ব্যাংকিং কর্মকাণ্ড পরিচালনা করায় দি ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভ ব্যাংককে ২০২২ সালের ১৪ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেনের পক্ষে ব্যারিস্টার ইমাম হোসেন লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।
এর আগেও ২০১৬ সালের ২৪ মে জেলা সমবায় কার্যালয় ‘ব্যাংক’ শব্দ ব্যবহার ও অবৈধভাবে লেনদেন বন্ধ করতে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতির কাছে একটি চিঠি পাঠায়। পাশাপাশি সমবায় সমিতি আইন অনুযায়ী নিবন্ধন কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে ১৫ দিনের সময় দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেও ওই বছরের ১১ এপ্রিল এক চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানানো হয়, সমবায় অধিদপ্তর থেকে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানটি কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বিতরণ, স্থায়ী আমানত গ্রহণ এবং শরিয়া ব্যাংক তথা সামগ্রিকভাবে অবৈধ ব্যাংকিং করছে। প্রতিষ্ঠানটি জঙ্গি অর্থায়নের সঙ্গেও সম্পৃক্ত কি না, খতিয়ে দেখা দরকার।
আরও প্রায় এক বছর আগে, ২০১৫ সালের ১১ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকেও সমবায় কার্যালয়ে পাঠানো এক স্মারকে বলা হয়েছিল, প্রতিষ্ঠানটি অবৈধ ও অননুমোদিতভাবে সারাদেশে শাখা খুলে অবৈধভাবে ব্যাংকের মতো আমানত সংগ্রহ ও দাদন কার্যক্রম চালাচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৮৩৬ কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করলেও কোনো স্থাবর সম্পত্তি নেই। ফলে যেকোনো সময় ডেসটিনি, ইউনিপেটুইউ, ম্যাক্সিম ও আইডিয়ালের মতো বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।
২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত হিসাবে দি ঢাকা মার্কেন্টাইল কো-অপারেটিভের আমানতের পরিমাণ ছিল ৮৩৬ কোটি টাকা, ঋণ ৯৪৫ কোটি টাকা। আর অন্য ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণের পরিমাণ ৫১ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে সিমতির আমানতকারীর সংখ্যা ২ লাখ ১৩ হাজার ৬১৭ জন।
এফএইচ/বিএ/এএসএম