ভিডিও EN
  1. Home/
  2. আইন-আদালত

কলাপাড়ার চিংগরিয়া খাল রক্ষার নির্দেশ হাইকোর্টের

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:২৬ পিএম, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩

পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌরসভায় চিংগরিয়া খালের জায়গা ব্যক্তিবিশেষের নামে দেওয়া বন্দোবস্ত বাতিলের অগ্রগতি জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে আদেশ হাতে পাওয়ার ছয় মাসের মধ্যে এসএ ৪৪১, ৪৪৩, ৫২৬ ও ৮৪২ নম্বর দাগে অবস্থিত ভূমির সব তথ্যসহ পূর্ণ একটি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এছাড়া খালের ৫ দশমিক ৪৬ একর ভূমি উদ্ধার ও ব্যক্তিবিশেষের নামে দেওয়া বন্দোবস্ত বাতিলের ব্যর্থতা সংবিধান ও দেশে প্রচলিত আইনের পরিপন্থি বিধায় কেন তা অবৈধ, অসৎ উদ্দেশ্যে প্রণোদিত এবং জনস্বার্থবিরোধী ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।

রুলে ৫ দশমিক ৪৬ একর খাল ও নদী হিসেবে রেকর্ডীয় ভূমি উদ্ধারের এবং আইনবহির্ভূতভাবে খাল ও নদী হিসেবে রেকর্ডীয় ভূমির শ্রেণি নাল শ্রেণিতে রূপান্তরিত ভূমি রেকর্ড সংশোধনের নির্দেশ কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ভূমি জরিপ ও রেকর্ড অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব), কলাপাড়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পটুয়াখালী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এবং কলাপাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রোববার (৩ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি মো: আতাবুল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এদিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। বেলা‘র পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আশরাফ আলী ও তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট এস. হাসানুল বান্না।

চিংগরিয়া খালের ভূমি রেকর্ড সংশোধন, বেআইনিভাবে দেওয়া বন্দোবস্ত বাতিল ও খাল পুনরুদ্ধার চেয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) জনস্বার্থে একটি রিট দায়ের করে। রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে হাইকোর্ট এ আদেশ দেন।

পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌরসভার ভেতর দিয়ে একটি খাল প্রবাহিত হয়েছে যা স্থানীয়ভাবে ‘চিংগরিয়া খাল’ নামে পরিচিত। খালটি কলাপাড়ার খেপুপাড়া মৌজায় আন্ধারমানিক নদী থেকে উৎপন্ন হয়ে কলাপাড়া পৌরসভার ১ থেকে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের অংশবিশেষের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে প্রায় চার কিলোমিটার অতিক্রম করে একই মৌজার চাকামইয়া-নিশানবাড়িয়া নদীর (দোন) সঙ্গে মিশেছে। কলাপাড়া ভূমি অফিসের তথ্যানুযায়ী খালটির মূল স্রোতধারা খেপুপাড়া মৌজার ৪৪৩, ৫২৬ ও ৮৪২ নম্বর দাগের ওপর দিয়ে প্রবাহিত।

খালটি কলাপাড়া পৌরসভার মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত একমাত্র খাল। পাঁচ হাজার পৌরবাসীর কাছে এ খালের গুরুত্ব অপরিসীম। কৃষিকাজ, পানি নিষ্কাশন, জলাবদ্ধতা নিরসনসহ দৈনন্দিন কাজে ব্যবহার্য পানির একমাত্র উৎস এ খালটি। কলাপাড়া পৌরসভাটি উপকূলীয় এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় প্রতিবছর বর্ষাকালে ও জলোচ্ছ্বাসের সময় সমুদ্রের লোনাপানিতে এখানকার ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ডুবে যায়। লবণাক্ত এ পানি এ খাল দিয়েই দ্রুত নিষ্কাশিত হয়ে থাকে। জনগুরুত্বপূর্ণ এ খালটি কলাপাড়া উপজেলা ভূমি অফিস খাল হিসেবে চিহ্নিত ভূমির শ্রেণি নাল হিসেবে পরিবর্তন করে।

পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক (ডিসি) উল্লিখিত খালের অংশবিশেষ ব্যক্তিবিশেষের কাছে দীর্ঘস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রদান করে। বন্দোবস্ত গ্রহীতারা খালের অংশে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষের পাশাপাশি বিভিন্ন সময় খাল ভরাট করে নির্মাণ করেছে বিভিন্ন স্থাপনা। ফলশ্রুতিতে জনগুরুত্বপূর্ণ এ খাল সংকীর্ণ হওয়ায় বিপাকে পড়েছে কৃষিনির্ভর জনগোষ্ঠী। জলাবদ্ধতায় ফসল ফলাতে পারছে না শত শত একর জমির মালিক। খালের ভূমি রেকর্ড সংশোধন ও শ্রেণি পরিবর্তন এবং বেআইনিভাবে প্রদান করা বন্দোবস্ত বাতিলসহ খালটি যথাযথ সংরক্ষণে বেলা উল্লিখিত মামলা দায়ের করে।

এফএইচ/বিএ/জেআইএম