ভিডিও EN
  1. Home/
  2. সাহিত্য

জাহিদ নয়নের কবিতা

রাত্রির পলাশে আগুন এবং অন্যান্য

সাহিত্য ডেস্ক | প্রকাশিত: ০২:১৭ পিএম, ২৯ মে ২০২৫

রাত্রির পলাশে আগুন

ঘুমিয়ে আছে নদীর চোখ
আলোর নিচে ঝরে পড়ে বিস্মৃত শিরিষের পাতা
আমি সেই আগুনপোড়া পাথর—
নিঃশ্বাসে উঠে আসে মৃত শহরের গন্ধ।

মাটি আজও জেগে থাকে ধূপের মতো
আমার রক্তে বাজে এক নীরব শঙ্খ
তুমি জানো না বাংলাদেশ—
আমি কতগুলো ছায়া ছিন্ন করেছি শুধু তোমার নিঃশ্বাস প্রহরায়!

তুমি ঘুমাও—বাংলাদেশ
রাত্রির প্রহরায় আমি নিঃশব্দ বাজনা
আমার শিরায় হাঁটে পুরাতন যোদ্ধার ছায়া
আমার ঘুমের ভেতর জেগে থাকে এক বুলেটের মানচিত্র।

সাপের মত গড়িয়ে আসে লোভ
নরম কণ্ঠে ডাকে প্রলোভনের দূত
আমি চিনি তাদের, তাদের ঠান্ডা চাহনি
তাদের পায়ের নিচে চাপা পড়ে যায় পতাকা।

তবু তুমি নিঃশ্বাস নাও—বাংলাদেশ
আমি জল হয়ে ছুঁয়ে আছি তোমার পা
আমার আগুনে পুড়ে উঠুক প্রতিটি প্রতারকের ছায়া!

একদিন, কোনো নক্ষত্রহীন রাতে
তুমি হয়তো দেখবে—
পুকুরপাড়ে এক পলাশ ফুল জ্বলছে, নিঃশব্দে—
জ্বলছে, শুধু তোমার আগুন রঙা সকালের অপেক্ষায়!

****

জল-কান্নার ভাষা

নদী জানে কান্নার ভাষা—
সে শুনেছে কত শত বর্ষ ধরে
নির্বাসিত মায়ের স্তব্ধ আর্তনাদ
আর সেই সব শিশুদের হাহাকার
যারা ভোর দেখেনি কোনোদিন।

জলের ধারে গড়াগড়ি খেয়েছে ইতিহাস
দাফন হয়েছে নামহীন শরীর—
নদী চুপ থেকেছে;
তবু তার ঢেউয়ে বাজে মর্সিয়ার সুর।

সে চেনে শহরের নীরব প্রতিবাদ
চেনে সেই কাঁধ, যাদের ওপর
বয়ে যাওয়া লাশের ভার এখনো কাঁদে!

নদী কারও পক্ষে নয়
তবু সে বয়ে যায়
এক জাতির রক্তাক্ত অধ্যায়
যা কোনো পাঠ্যবই বলে না।

সে জানে—
একেকটি কণ্ঠস্বর হারিয়ে যাওয়ার মানে
আর একেকটি বুক ভেঙে গেলে
কীভাবে জন্ম নেয় প্রতিরোধের ঢেউ!

এসইউ/এএসএম

আরও পড়ুন