সুভাষ সরকারের কবিতা
আবাদের ঘড়া এবং অন্যান্য

আবাদের ঘড়া
ক্রমশ বামন হ’তে হ’তে এই ন্যুব্জ কবির ছায়া গোড়ালি ছুঁয়েছে।
সামান্য যেটুকু বাকি, যেটুকু অধরা,
নিয়তিনিয়ন্ত্রিত, আত্মজার আততায়ী তারা।
না-দগ্ধ কবিমনে আক্ষেপের দারু-পানে ফোটে না বিদ্রোহ।
নিষিদ্ধ নগরবাসে পালক পিতারা আসে, আয়োজনে মৃত্যু-সমারোহ।
জিঘাংসার জলাধারে আমৃত্যু অপেক্ষমান ক্রৌঞ্চ-ফকিরেরা।
কবিরা কেবলই তার বিবিধ রচনা করে, অপূর্ণ থেকে যায় আবাদের ঘড়া।
****
আড্ডাবাড়ি
আড্ডাটা বেশ জমে উঠেছিল। হঠাৎ
উঠে চলে গেল বেরসিক কেউ।
গেল তো গেলই, ফিরে সে এলো না আর।
একবার ভেঙে গেলে, পুনর্বার যেমন ফেরে না সে’ ঢেউ।
সময় ফুরোলে যে যার ফিরে যায়, অপেক্ষমান বাড়ি।
তখন চেয়ারের পাশে থাকে টেবিল, টেবিলে অ্যাসট্রেটা।
অনুমান, সে সময় ফাঁকা ঘরে নৃত্য করে আড্ডার হারানো ছবিটা।
****
নকশালবাড়ি
একটি আদর্শ-পথ কতগুলো বাঁক নিতে পারে জানা নেই।
জানি না, সত্য লুকোলে, কোন কালে
সাত খুন মাফ হয় কি না।
তবুও মানুষ ভুল-মানুষের সঙ্গে হাঁটে; প্রকৃতি তাজ্জব।
আমার যা নয়, এমন সম্পদ কেউ
লুট ক’রে যদি তোমাকে বিলোয়, আমি তা আদর্শ মানি। আর
এপথের পথিকেরা আত্মত্যাগে প্রকৃত শহীদ
ও মহানুভব।
এসইউ/জেআইএম