সুভাষ সরকারের কবিতা
চিরবসন্তকথা এবং অন্যান্য
কবি সুভাষ সরকার, ছবি: সংগৃহীত
চিরবসন্তকথা
বসন্ত না ফুরোলে, কামনায় নিভে যায় চিতার আগুন।
একটি পাগল লোক এ’কথা বলতে বলতে এই পথে রোজ হেঁটে যায়।
সেসময় বাদামি চুলের মতো অফুরান রোদ্দুরে অবাক তাকিয়ে দেখি
অতি তুচ্ছ এক মানুষের এত দীর্ঘ এক ছায়া
দিগন্ত ছাড়িয়ে যেন আকাশের মধ্যমা ছুঁয়েছে।
তার হাঁটাপথে সমান্তরাল আর যারা, তাদের
প্রত্যেকের ছায়া
অদৃশ্য প্রেতের মতো বরাবর ছাতার ভেতরে লুকিয়ে।
বসন্ত জাগ্রত যতদিন, কামনায় নিভে যায়
চিতার আগুন।
এই সারসত্য বিলোতে বিলোতে পাগল লোকটি
কখন কীভাবে কোথায় পৃথিবীতে খুঁজে পায় যাপনের আশ্রয়টুকু...
এই তথ্য আমরা ভেবেচিন্তে রাখি না কখনো।
****
স্বপ্নঘর
আমাদের স্বপ্নঘরে অনেক আদর্শ ছিল,
কবিতার সুর
বৈপ্লবিক ছিল খুব, শব্দে মুখরিত।
তবুও বিলাপ নির্বাক করেছে যাদের, তারা
এত হত্যা কেউ
মনেপ্রাণে চায়নি কখনো।
আজ বুঝি, বিফলে প্রাণের দান মহাপ্রাণ
আখ্যা পায় না ইতিহাসে।
ক্ষমা করো বন্ধুরা, আত্মবলিদানে
শহীদ হয়েছো যাঁরা
স্বপ্নের কবিতা লিখে, বিধ্বংসী বারুদ
ছড়াতে ছড়াতে
শহরের সীমানা ছাড়িয়ে বহু দিক বহু দূরে
গোপন গ্রামীণ আর গোপীবল্লভপুরে।
তোমাদের স্মরণে তাই বারংবার ফিরে যাই
অতীত যেখানে
বুলেটে ঝাঁঝরা করে দিয়ে গেছে
ঈশ্বরের ছবি।
রক্তদাগ মুছে গেছে কবেই, তবুও মুহ্যমান
হাহাকার করে কিছু কবি।
এসইউ/জেআইএম