ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

অনিশ্চয়তায় ডিসি সম্মেলন!

মাসুদ রানা | প্রকাশিত: ০৩:১২ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫

জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতির কারণে আগামী বছরের (২০২৬ সাল) জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন অনিশ্চয়তায় পড়েছে।

গত দুটি জেলা প্রশাসক (ডিসি) সম্মেলন হয়েছে যথাক্রমে মার্চ ও ফেব্রুয়ারিতে। তবে আগামী বছরের (২০২৬) ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন। এ পরিস্থিতিতে ডিসি সম্মেলনের বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সিদ্ধান্ত নেই।

ডিসি সম্মেলন আয়োজনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকার এখন নির্বাচন আয়োজন নিয়ে ব্যস্ত। নির্বাচনে মাঠ প্রশাসন মূল ভূমিকা পালন করে। ডিসি সম্মেলনের মতো এত বড় একটি আয়োজন নিয়ে সরকারের এ মুহূর্তে কোনো চিন্তা-ভাবনা নেই।

ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারই পরবর্তী ডিসি সম্মেলন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সরকারের নীতি-নির্ধারক এবং জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের মধ্যে সামনাসামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য সাধারণত প্রতি বছর ডিসি সম্মেলন আয়োজন করা হয়। দেশের ৬৪ জেলায় ৬৪ জন জেলা প্রশাসক রয়েছেন। আট বিভাগে রয়েছেন আটজন বিভাগীয় কমিশনার।

২০২৪ সালে ডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ৩ থেকে ৬ মার্চ। চলতি বছরের ডিসি সম্মেলন হয় ১৬ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি।

ডিসি সম্মেলন আয়োজন সামনে রেখে কয়েক মাস আগে থেকেই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু হয়ে যায়। ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারদের কাছ থেকে প্রস্তাব চাওয়া হয়। তবে আগামী বছরের সম্মেলন আয়োজনের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কোনো প্রস্তুতি নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ এবং গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

২০২৬ সালের ডিসি সম্মেলন আয়োজন বিষয় জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশীদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘আগামী ডিসি সম্মেলনের বিষয়টি আমরা এখনো পরিকল্পনায় আনিনি। এ বিষয়ে আমাদের কোনো প্রস্তুতিও নেই। আগামী ফেব্রুয়ারিতে সম্মেলন হবে না, ফেব্রুয়ারিতে তো নতুন সরকার বসে যাবে বলে আমরা আশা করছি। তখন হয়তো এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’

তিনি বলেন, ‘পরবর্তী সরকার এসে আগামী বছরের ডিসি সম্মেলন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে, আমরা এটিই মনে করছি।’

নির্বাচন সামনে রেখে সম্প্রতি দেশের ৫০ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দিয়েছে সরকার। বেশিরভাগ জেলার ডিসি নতুন হওয়ায় তারা এখনো জেলার সমস্যা এবং চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে বুঝে উঠতে পারেননি। তাই, এবার সম্মেলন আয়োজনের জন্য ফেব্রুয়ারি বা মার্চ কোনোভাবেই উপযুক্ত সময় নয় বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আমি কিছুদিন আগেই যোগ দিলাম। পুরো জেলাটা আত্মস্থ করার চেষ্টা করছি। একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের জন্য আমাদের অনেক কাজ। জেলা প্রশাসক সম্মেলনের বিষয়ে আমরা কোনো নির্দেশনা পাইনি।’

করোনা মহামারির পর থেকে ডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে। সচিবালয়ে নতুন ১ নম্বর ভবন নির্মাণের পর এখন থেকে ডিসি সম্মেলনগুলো এ ভবনের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ডিসি সম্মেলনে সাধারণত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে ডিসিদের কার্য-অধিবেশন, এছাড়া একটি উদ্বোধন অনুষ্ঠান, সরকারপ্রধানের সঙ্গে মুক্ত আলোচনা, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও একটি সমাপনী অনুষ্ঠান থাকে।

কার্য-অধিবেশনগুলোতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে উপদেষ্টা/মন্ত্রী/প্রতিমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা উপস্থিত থাকেন।

সম্মেলন উপলক্ষে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনাররা লিখিতভাবে মাঠ প্রশাসনের সমস্যাগুলো জানিয়ে ও বিভিন্ন চ‌্যালেঞ্জ উত্তরণের উপায় নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রস্তাব পাঠান। সেই প্রস্তাবগুলো নিয়ে বই বানিয়ে থাকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। অধিবেশনের সময় এগুলো ছাড়াও ডিসিরা তাৎক্ষণিক বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন। কার্য-অধিবেশনগুলোতে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।

আরএমএম/এমকেআর/এএসএম