রাজধানীতে ৪৮ হাজার অবৈধ অটোরিকশা চার্জিং পয়েন্ট রয়েছে: সিপিডি
ফাইল ছবি
সারাদেশে প্রায় ৬০ লাখের বেশি ব্যাটারিচালিক অটোরিকশা রয়েছে। এসব যানের ৯০ শতাংশই বাংলাদেশে তৈরি। এ ধরনের যানের জন্য ঢাকায় ৪৮ হাজারের বেশি অবৈধ চার্জিং পয়েন্ট রয়েছে। আর সরকার অনুমোদিত চার্জিং স্টেশন ৩৩০০টি। অবৈধ চার্জিং স্টেশন ও চার্জিং পয়েন্টের কারণে সরকার প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
এসব তথ্য তুলে ধরে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ন্ত্রণে লাইসেন্স দেওয়ার নিয়ম চালুসহ আমদানিকৃত যন্ত্রাংশের ট্যাক্স বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডির কার্যালয়ে থ্রি হুইলার রিকশাকে শহরের যাতায়াত ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা চ্যালেঞ্জ ও করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভায় ব্যাটারিচালিত রিকশার ক্ষতিকর এসব দিক উঠে আসে।
অনুষ্ঠানে সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, থ্রি হুইলার রিকশা শহর ছাড়িয়ে গ্রামে বিস্মৃত হয়েছে। অল্প সময়ে এর জনপ্রিয়তা ইঙ্গিত দেয় যে, সেবা প্রদানকারী ও গ্রহণকারী উভয়ের কাছেই এর গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। বাংলার এই টেসলাকে ঘিরে বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক খবর আসছে জানিয়ে তিনি বলেন, শহরে ভিড় বাড়ছে। পাড়া-মহল্লায় নয়, মূল সড়ক ও মহাসড়কে এদের দেখা যাচ্ছে। দুর্ঘটনা বাড়ছে, এতে আহত ও মৃত্যুঝুঁকি বাড়ছে। এ যানটির ব্যাটারি পরিবেশ দূষণ করছে, যত্রতত্র চার্জিং স্টেশনের কারণে রাজস্বও হারাচ্ছে সরকার। দুর্বল বিকেন্দ্রায়ন, শহরমুখী সুবিধা তৈরি, গণপরিবহণের ভঙ্গুরতার কারণে রিকশার সংখ্যা বেড়েছে।
মূল প্রবন্ধে সিপিডির প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট খালিদ মাহমুদ বলেন, প্রায় ৬০ লাখের বেশি রিকশা সারাদেশে রয়েছে। এসব যানের ৯০ শতাংশই বাংলাদেশে তৈরি। এসব রিকশার জন্য ঢাকায় ৪৮ হাজারের বেশি অবৈধ চার্জিং পয়েন্ট রয়েছে। সরকার অনুমোদিত চার্জিং স্টেশন ৩৩০০টি।
বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ খরচ বেশি হওয়ায় গ্যারেজ মালিকরা অবৈধভাবে চার্জিং স্টেশন করছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ কারণে প্রতিবছর ৪ হাজার কোটি টাকা আমাদের ক্ষতি হয়। এ ধরনের ব্যাটারি পরিবেশগত ও স্বাস্থ্যগত ঝুকিঁ তৈরি করছে।
এ সময় তিনি গ্যারেজ মালিকদের লাইসেন্স ও মনিটরিং এর আওতায় আনার জোর দাবি জানান।
তিনি বলেন, সেটি হলে বৈধ চার্জিং স্টেশন হবে। জাতীয়ভাবে লেড অ্যাসিড সার্ভে করা উচিত, এছাড়া এই চালকদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে। ব্যাটারিচালিত রিকশা ব্যবস্থাপনাকে নিয়ম-কানুনের আওতার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এই যানগুলো আমাদের বোঝা নয়। আমরা সবাই এগুলো ব্যবহার করি। এর যে নেতিবাচক প্রভাব আছে, তা কমাতে পুরো অটোরিকশা ব্যবস্থাপনাকে একটা প্রক্রিয়ার মধ্যে আনতে হবে। নির্দিষ্ট সংখ্যায় এটাকে রেগুলেট করতে হবে।
ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আক্তার, বুয়েটের অধ্যাপক ড. আসিফ উজ জামান, ব্যাটারিচালিত রিকশা ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক খালিকুজ্জামান লিপন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এসএম/এএমএ/এএসএম