ভিডিও EN
  1. Home/
  2. জাতীয়

ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে ফের তলব

কূটনৈতিক প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১০:৫৭ এএম, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫

ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে ফের তলব করেছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপস্থিত হতে বলা হয়।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়াম ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসেন ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। তিনি পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়ামের দপ্তরে যান। আসা-যাওয়া মিলিয়ে পাঁচ মিনেটের কম সময়ের মধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে বেরিয়ে যান প্রণয় ভার্মা।

সূত্র জানায়, নয়াদিল্লি ও কলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন স্থানে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনগুলোকে ঘিরে উদ্ভূত নিরাপত্তা পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটেই ভারতের হাইকমিশনারকে তলব করা হয়।

বৈঠকে বাংলাদেশ মিশনগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয় বলে কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে।

সম্প্রতি ভারতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশন ও ভিসা সেবাকেন্দ্রগুলোকে ঘিরে নিরাপত্তা পরিস্থিতি ক্রমেই উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। গত কয়েক দিনে নয়াদিল্লি, কলকাতা, আগরতলা ও শিলিগুড়িতে বাংলাদেশি মিশনের সামনে একাধিক বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়। কোথাও কোথাও বিক্ষোভকারীরা সরাসরি ভিসা সেবাকেন্দ্রের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করে।

এই পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন সাময়িকভাবে কনস্যুলার ও ভিসা সংক্রান্ত সেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। হাইকমিশনের ফটকে টানানো এক নোটিশে জানানো হয়, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। একই সঙ্গে আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন এবং শিলিগুড়িতে অবস্থিত বাংলাদেশ ভিসা সেন্টারেও ভিসা সেবা কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন:

ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব 

বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে তলব, নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানালো ভারত 

বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাল্টা তলব 

কূটনৈতিক সূত্রগুলোর ভাষ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক বিক্ষোভ, ভিসা সেন্টারে হামলা ও নিরাপত্তা ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন, উপহাইকমিশন, সহকারী হাইকমিশন এবং সংশ্লিষ্ট ভিসা সেন্টারগুলোতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এর আগে দিল্লির কূটনৈতিক এলাকায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে একদল বিক্ষোভকারীর উপস্থিতি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক পর্যায়ে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য আসে। বিষয়টি বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ওই ঘটনার বর্ণনাকে বিভ্রান্তিকর বলে মন্তব্য করে। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সে বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করা হয়।

চলতি মাসের শুরুতে আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনাও ঘটে, যা দুই দেশের কূটনৈতিক মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি করে। এসব ঘটনার ধারাবাহিকতায় ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশি মিশনগুলোর নিরাপত্তা এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে পরিণত হয়েছে।

এর আগে রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে প্রণয় ভার্মাকে তলব করা হয় বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এনসময় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদির ওপর হামলাকারীরা ভারতে ঢুকে পড়লে তাদের গ্রেফতার করে ফেরত পাঠানোর আহ্বান জানায় ঢাকা।

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বিভিন্ন ঘটনায় এ নিয়ে অন্তত ৬ বার তলব করা হলো প্রতিবেশী দেশটির এই রাষ্ট্রদূতকে।

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে উসকানি দেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ব্যাহত করার চেষ্টা চলছে, এমন অভিযোগ তুলে বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে ভারতের অবস্থানের প্রতি কড়া আপত্তি জানায়।

সেই সময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতের সরকারের কাছে বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং এ ধরনের কর্মকাণ্ড দুই দেশের সম্পর্কের জন্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলেও অবহিত করে। কূটনৈতিক পর্যায়ে এসব ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান স্পষ্টভাবে তুলে ধরা হয়েছিল বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।

 

জেপিআই/এসএনআর/জেআইএম