অচেনা ফলের সমৃদ্ধ ভাণ্ডার
নিপুণ হাতে থরে থরে সাজানো হরেক রকমের ফল। বাহারি রং আর গন্ধ দূর থেকেই মন কাড়ে। দেশীয় নানা ফল থাকলেও বিদেশি ফলের প্রাধান্যই এখানে বেশি। অনেকের কাছে বিদেশি ফলের দোকান নামেই পরিচিত। এ পরিচিতি শুধু রাজধানীবাসীর কাছেই নয় বরং দেশের বিভিন্ন প্রান্তেও।তাইতে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষেরাও বিদেশি ফলের সন্ধানে এখানে আসেন।
জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররমের পার্শ্ববর্তী ফুটওভার ব্রিজের উত্তর পাশ হয়ে আজাদ প্রোডাক্টসের গলি। তার কোল ঘেঁষেই ডজন খানিক ফলের দোকান। বেশির ভাগ দোকানেই বিদেশি ফলের আধিক্য। এর মধ্যে আঙ্গুর, আপেল বা কমলার সঙ্গে পরিচিতি থাকলেও এখানে এসে ক্রেতারা অচেনা ফলেই স্বাদ মেটায়।
সম্প্রতি কথা হয় হাসান নামে এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, দেশি ফল তো নিয়মিতই খাই। মাঝে মাঝে বিদেশি ফল খেতেই এখানে আসি। বাবাও এখান থেকেই বিদেশি ফল কিনতেন। মূলত বাবার সঙ্গে এসেই এসব ফলের সঙ্গে পরিচিতি হয়েছি।
ফল দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুস্বাদু নানা রকমের ফল এখানে পাওয়া যায় । এর মধ্যে রয়েছে ড্রাগন যার মূল্য প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা। হালকা মিষ্টি স্বাদের এই ফল ডায়েবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী বলে দোকানদার ফারুক হোসেন জানান। তিনি বলেন, এই ফল থাইল্যান্ড আর মালয়েশিয়া থেকে আসে।
টক আর মিষ্টি স্বাদের ফল কিউই। এটি নিউজিল্যান্ডের ফল। তবে থাইল্যান্ড হয়ে বাংলাদেশে আসে। প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা দরে। অস্ট্রেলিয়ার মিষ্টি ফল প্লাম বা আলুবোকারাম। তবে খানিকাট টকও বটে। বিক্রি হয় ৬০০ টাকা কেজিতে। থাইল্যান্ডের ডুরিয়ান দেখতে অনেকটাই কাঠালের মতো। স্বাদও অনেকটা কাঠালের কাছাকাছি। এটিও বিক্রি হয় ৬০০ টাকা কেজি দরে।
অস্ট্রোলিয়ার চেরি ফল, থাইল্যান্ডের কাঠলিচু, ফারসিমন, সাম্মাম ফলের জন্য এখানকার দোকানগুলো প্রসিদ্ধ। বিক্রি হয় ভারতেরও নানা সুস্বাদু ফল। 
কথা হয় দোকানদার আবুল কালামের সঙ্গে। তিনি পাকিস্তান আমল থেকে ফলের ব্যবসায় জড়িত। আগে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বসতেন। প্রায় দুই যুগ ধরে এই গলিতে বসে ব্যবসা করছেন। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, অনেকের কাছে অচেনা হলেও কারো কারো কাছে অতিচেনা ফল এগুলো। অনেকেই এসব ফলের নাম ধরেই কিনতে আসেন। দামও তাদের কাছে জানা। তবে প্রবাসীরাই এসব ফল বেশি কিনেন। যারা দেশের বাইরে গিয়ে এসব ফল খেয়ে থাকেন, দেশে ফিরলে তারা এখানে আসেন।
ফারুক হোসেন নামে পাশের দোকানদার বলেন, বিদেশি ফলের ক্রেতা নির্দিষ্ট। মূলত তাদের চাহিদার ওপর নির্ভর করেই এসব ফল আমদানি করতে হয়। অনেকে শখের বশেও এমন অচেনা ফল কিনে থাকেন।
এএসএস/এমএমজেড/এএইচ/এমএস