ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

আইএসপিআরের বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করেছে গণঅধিকার পরিষদ

ঢামেক প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৩:৩৭ পিএম, ৩১ আগস্ট ২০২৫

আইএসপিআরের দেওয়া বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করেছে গণঅধিকার পরিষদ। সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খাঁন অভিযোগ করে বলেন, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরসহ শতাধিক নেতাকর্মীর ওপর রক্তাক্ত হামলা চালিয়েছে সেনাবাহিনী এবং পুলিশ।

রোববার (৩১ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন অভিযোগ করেন।

রাশেদ খাঁন বলেন, বিভিন্ন মিডিয়ায় এসেছে কীভাবে গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয়ে সেনাবাহিনী ভাঙচুর চালিয়েছে। সে সময় আতঙ্কে নেতাকর্মীরা বাথরুমে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেনা সদস্যরা বাথরুমের দরজা ভেঙে তাদের বের করে রক্তাক্ত করে। আমার নিজের কাছে লজ্জা লাগছে সেনাবাহিনীর নাম মুখে নিতে হচ্ছে। সেনাবাহিনী আমাদের গর্বের প্রতিষ্ঠান। গণঅভ্যুত্থানে ভূমিকা রয়েছে এই বাহিনীর। অথচ কতিপয় ব্যক্তিকে রক্ষার জন্য পুরো বাহিনীকে কলুষিত করা হচ্ছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, সেনাপ্রধানকে ২৪ ঘণ্টার সময়সীমা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনো তিনি তার অবস্থান স্পষ্ট করেননি। কেন তিনি তার অবস্থান স্পষ্ট করছেন না, সেটি আমাদের কাছে উদ্বেগজনক।

সংবাদ সম্মেলনে রাশেদ খান জানান, নুরুল হক নুর এখনো ঢামেকের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। গতকাল রাতে আমি তার সঙ্গে দেখা করেছি। পুলিশ তাকে আঘাত করেছে এমন খবর এলেও সেটি সঠিক নয়। মূলত সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্য তাকে চিনতে পেরেই একের পর এক আঘাত করেছে। আপনারা দেখেছেন, একজন সেনা সদস্য লাঠি দিয়ে নুরের বুকে আঘাত করেছে।

তিনি বলেন, জুলাই মাসে গণঅভ্যুত্থানের সময় নুরুল হক নুর বলেছিলেন, হাসিনার ৯০ শতাংশ পতন হয়েছে, ১০ শতাংশ বাকি। সেই ঘোষণার প্রতিশোধ হিসেবেই এই হামলা চালানো হয়েছে। সেখানে কয়েকজন সেনা সদস্য বলেছেন, জুলাই ভরে দেওয়া হবে। আমরা জানতে চাই, এরা কারা? এরা ছাত্রলীগ-যুবলীগ ক্যাডারের চেয়েও ভয়ংকর।

রাশেদ খাঁন বলেন, দেশপ্রেমিক বাহিনী সেনাবাহিনীতে তাদের চাকরি করার সুযোগ নেই। তাদের গ্রেফতার করে শাস্তি দিতে হবে।

আরও পড়ুন

আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, নুরুল হক নুরের চিকিৎসা বাংলাদেশে নিরাপদ নাও হতে পারে। হাসিনার আমলে নুর ২২ বার হামলার শিকার হয়েছে, শরীর ক্ষতবিক্ষত। এখন তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। আমরা মনে করি তাকে সিঙ্গাপুর অথবা যুক্তরাজ্যে নিতে হবে।

তিনি জানান, সরকারের পক্ষ থেকে নুরকে বিদেশে পাঠানোর ঘোষণা এসেছে। রাষ্ট্রপতিও নুরকে ফোন করে বলেছেন, বিদেশে নেওয়া হবে। গণঅধিকার পরিষদ আশঙ্কা করছে দেশে চিকিৎসা চললে নুরের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়বে।

রাশেদ খাঁন বলেন, আগেও দেখা গেছে, ইনজেকশন পুশ করে জনপ্রিয় নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। তাই মনে হচ্ছে নুরের ওপর টার্গেট ক্লিন উদ্দেশ্যে হামলা হয়েছে।

সরকার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের কথা বললেও তারা সেটি করবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছি, জুলাই অভ্যুত্থানেও ভূমিকা রেখেছি। কিন্তু সরকার বৈঠকে তিনটি দলকে আমন্ত্রণ জানিয়ে আমাদের প্রতি বৈষম্য করেছে। ফলে সরকারের প্রতি পূর্ণ আস্থা রাখতে পারছি না।

আইএসপিআরের বিবৃতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা বলেছে ‘মব’ হামলা হয়েছে। কিন্তু মব করেছে কারা? আমরা আমাদের কার্যালয়ের সামনে প্রেস ব্রিফিং করছিলাম, তখন সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্য হামলা চালায়। এটিকে মব বলা যায় না। যদি মব হয়েই থাকে, তাহলে সেই মব সৃষ্টি করেছে সেনাবাহিনীর কয়েকজন সদস্য।

তিনি স্পষ্টভাবে জানান, সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে আমরা সেটি প্রত্যাখ্যান করছি। আমাদের কার্যালয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে, ভেতরে ঢুকে নেতাকর্মীদের রক্তাক্ত করা হয়েছে। এটাকে যদি মব বলা হয়, তবে সেই মব করেছে সেনাবাহিনী।

কাজী আল আমিন/এএমএ/জিকেএস