পর্তুগালে শ্রমিক শোষণের অভিযোগে ১১ পুলিশসহ গ্রেফতার ১৭
এআই দিয়ে বানানো ছবি
পর্তুগালে শত শত অনিয়মিত অভিবাসী শ্রমিককে শোষণের অভিযোগে ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে দেশটির পুলিশ। গ্রেফতার ব্যক্তিদের মধ্যে ১১ জনই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, যাদের বিরুদ্ধে একটি অপরাধচক্রকে সহায়তার অভিযোগ রয়েছে।
পর্তুগালের বিভিন্ন এলাকায় মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) পরিচালিত বৃহৎ অভিযানে এই চক্রটি ধরা পড়ে।
পর্তুগিজ পুলিশ জানিয়েছে, এটি ছিল একটি ‘সহিংস মাফিয়া ধাঁচের সংগঠন’ যারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দক্ষিণ এশিয়া থেকে আসা অনিয়মিত অভিবাসীদের অবৈধভাবে কাজে লাগাচ্ছিল।
দীর্ঘ তদন্তের পর ১৭ জনকে আটক করা হয়েছে এবং উত্তর ও দক্ষিণ পর্তুগালের অন্তত ৫০টি স্থানে তল্লাশি চালানো হয়েছে।
তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানান, গ্রেফতার ১১ জনের মধ্যে ১০ জন জেন্ডারমেরি সদস্য (মিলিটারি পুলিশ) এবং একজন জাতীয় পুলিশের সদস্য। তারা এই অপরাধচক্রকে বিভিন্নভাবে সহায়তা করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে নথি জালিয়াতি, কর ফাঁকি এবং অর্থপাচারের মতো অপরাধ।
পুলিশ ও প্রসিকিউটর জানিয়েছে, এই চক্রটি ‘অভিবাসীদের দুর্বল অবস্থাকে কাজে লাগিয়ে’ তাদের শোষণ করত। ভুয়া অস্থায়ী ওয়ার্ক এজেন্সির মাধ্যমে শ্রমিক সংগ্রহ করা হতো, এরপর তাদের থাকার ও খাওয়ার নামে অতিরিক্ত অর্থ দিতে বাধ্য করা হতো।
তারা সাধারণত চুক্তি ছাড়া কাজ করতেন এবং বাজারমূল্যের তুলনায় অনেক কম মজুরি পেতেন।
ভুক্তভোগীদের বেশিরভাগই দক্ষিণ এশিয়ার নাগরিক। তাদের ভয়-ভীতি দেখিয়ে কাজে নিয়োজিত রাখা হতো, আর কিছু ক্ষেত্রে শারীরিক সহিংসতাও করা হতো।
পর্তুগিজ টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএন পর্তুগাল জানিয়েছে, এই শ্রমিকরা প্রধানত দক্ষিণাঞ্চলীয় বেজা এলাকায় কাজ করতেন। সেখানে ভোর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত তাদের দিয়ে কৃষিকাজ করানো হতো এবং জেন্ডারমেরির সদস্যরা সার্বক্ষণিক নজরদারি করতেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পর্তুগালের দক্ষিণাঞ্চলে মানবপাচার ও শ্রমশোষণ সংশ্লিষ্ট কয়েকটি চক্র ভেঙে দিয়েছে পুলিশ। অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রিনহাউজ ও কৃষি খামারে বিপুল সংখ্যক অভিবাসী কর্মী কাজ করেন, যাদের অনেকেই অনিয়মিত অবস্থায় দেশের ভেতরে রয়েছেন।
এমআরএম/এমএস